chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস আজ

ডেস্ক নিউজ: আজ ২৪ মার্চ, বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস। একটা সময় বলা হতো, ‘যার হয় যক্ষ্মা, তার নাই রক্ষা’। তবে এখন ধারণাটি অনেক বদলেছে। এরপরও যক্ষ্মা হচ্ছে।  কারণ, টিবি বা যক্ষ্মা একটি মারাত্মক সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগ।

যক্ষ্মা দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘সময় বয়ে যাচ্ছে’ বা ‘দ্য ক্লক ইজ টিকিং’। এক সময় বহুল প্রচলিত প্রবাদ ছিল ‘যার হয় যক্ষ্মা, তার নেই রক্ষা’। সময়ের পরিক্রমায় আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের বদৌলতে যক্ষ্মা চিকিৎসায় কার্যকর ওষুধ আবিষ্কৃত হয়েছে। ফলে চিকিৎসা নিয়ে অনেক মুমূর্ষু রোগীও দেদারছে সুস্থ হচ্ছে।

বিশ্বের যে ৩০টি দেশে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা সর্বাধিক বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। ১৯৯৩ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যক্ষ্মাকে গ্লোবাল এমার্জেন্সি ঘোষণা করার পর থেকেই বাংলাদেশ সরকার এটি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে। যার ফলে সরকার দেশের সব নাগরিকের জন্য বিনামূল্যে যক্ষ্মা শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা প্রদান করছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির প্রধান লক্ষ্য দেশে যক্ষ্মারোগী, মৃত্যু এবং সংক্রমণের হার এমন পর্যায়ে কমিয়ে আনা, যাতে যক্ষ্মা একটি জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে বিবেচিত না হয়। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে ২০১৫ সালের পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি নতুন কৌশল অনুমোদন করে। যার আলোকে ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্ব থেকে যক্ষ্মায় মৃত্যুহার ৯০ শতাংশ কমানো (২০১৫ সালের তুলনায়) এবং নতুনভাবে সংক্রমিত যক্ষ্মা রোগীর হার ৮০ শতাংশ (২০১৫ সালের তুলনায়) কমিয়ে আনা যায়।

এসব পদ্ধতিতে ড্রাগ সেনসিটিভ ও ড্রাগ রেজিস্টেন্ট উভয় প্রকার যক্ষ্মার প্রায় ৮১ শতাংশ রোগী শনাক্তকরণ সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, যক্ষ্মা নির্ণয় পরবর্তী সব রোগীকে বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করা হয়। পাশাপাশি নিয়মিত ওষুধ সেবন নিশ্চিতে প্রতিটি রোগীর সঙ্গে একজন ডটস্ প্রোভাইডর নিশ্চিত করা হয়েছে। ফলে যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত বেড়েছে এবং মৃত্যুহার কমেছে। বিনামূল্যে যক্ষ্মা রোগ শনাক্তকরণ ও চিকিৎসাসেবার আওতায় এনে ২০৩৫ সালের মধ্যে যক্ষ্মামুক্ত বাংলাদেশে গড়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি সূত্রে জানা গেছে, ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মার চিকিৎসা বাংলাদেশে সফলভাবে শুরু হয়েছে। এর ফলে চিকিৎসা ব্যয় এক-চতুর্থাংশে কমে এসেছে।

ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মার চিকিৎসায় সাম্প্রতিক আবিষ্কৃত নতুন ওষুধ বেডাকুইলিন ও ডেলামানিড ব্যবহার হচ্ছে। বছরে প্রায় ৩৫ হাজার শিশুকে ৬ মাস মেয়াদি টিবি প্রিভেন্টিভ থেরাপি দেওয়া হয়। শিশুদের পাশাপাশি বয়স্কদের যক্ষ্মা সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে একই সেবা দেওয়া শুরু হয়েছে। জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি বিনামূল্যে রোগ শনাক্তকরণ ও ওষুধ সরবরাহ ছাড়াও দরিদ্র রোগীদের সাইকো কাউন্সিলিং ও আর্থিক সহায়তা প্র্রদান করে থাকে। ২০১৭ সাল থেকে যক্ষ্মা চিকিৎসার প্রথম সারির ওষুধ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ক্রয় ও সরবরাহ করছে।

প্রসঙ্গত, ১৮৮২ সালের ২৪ মার্চ ডা. রবার্ট কক যক্ষ্মা রোগের জীবাণু ‘মাইক্রোব্যাটেরিয়াম টিউবারকিউলসিস’ আবিষ্কার করেন। এই জীবাণু আবিষ্কারের ১০০ বছর পর ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ জীবাণু আবিষ্কারের দিনটিকে স্মরণীয় করতে এবং যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে গণসচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছর এই দিনে বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশ সরকার ১৭ মার্চ ২০২০ থেকে ১৭ মার্চ ২০২১ পর্যন্ত মুজিববর্ষ ঘোষণা করেছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে এবং জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে এবারের বিশ্ব যক্ষ্মা দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ হয়েছে ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার যক্ষ্মামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার।’

নচ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর