chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রামের ১২ বেসরকারি হাসপাতালকে করোনার চিকিৎসা দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামের করোনা আক্রান্ত রোগীদের পুর্ণাঙ্গ চিকিৎসা দিতে মহানগরীর ১২টি বেসরকারি হাসপাতালকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সোমবার (১৫ জুন) হাইকোর্টের বিচারক জে বি এম হাসান এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ভার্চুয়াল শুনানি শেষে ১২ হাসপাতালকে এ নির্দেশনা দেন। আজ সোমবার হাইকোর্টের বিচারক জে বি এম হাসান এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ভার্চুয়াল শুনানি শেষে ১২ হাসপাতাল ও সিভিল সার্জনকে এ নির্দেশনা দেন।

এছাড়াও চট্টগ্রামের পুরো চিকিৎসা পরিস্থিতি কি পর্যায়ে রয়েছে তা প্রতিবেদন আকারে জমা দিতে সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

জানা গেছে, চট্টগ্রামে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় সু-ব্যবস্থার জন্য গেল ১০ জুন হাইকোর্টে রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. বাকির উদ্দিন ভূঁইয়া।

আদেশে যে ১২ হাসপাতালের নাম উল্লেখ রয়েছে সেগুলো হচ্ছে- পার্কভিউ হাসপাতাল, মেডিকেল সেন্টার, ইস্পেরিয়াল হাসপাতাল, সার্জিস্কোপ হাসপাতাল, ডেল্টা হাসপাতাল, সিএসটিসি হাসপাতাল, সিএসসিআর হাসপাতাল, ন্যাশনাল হাসপাতাল, এশিয়ান হাসপাতাল, ওয়েল হাসপাতাল, মেট্টোপলিটন হাসপাতাল ও ম্যাক্স হাসপাতাল।

আইনজীবী বাকির উদ্দিন ভূঁইয়া গণাধ্যমকে বলেন, হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা না পেয়ে মানুষ মারা যাচ্ছেন। এমনটি পত্রপত্রিকার মাধ্যমে অবগত হয়ে হাইকোর্টে মানুষের চিকিৎসা নিশ্চিত চেয়ে রিট আবেদনটি করা হয়। আজ ১৫ জুন ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে বিচারক এটির শুনানি করেন এবং ১২ হাসপাতালকে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে নির্দেশ দেন।

এদিকে হাইকোর্টের পৃথক অন্য এক আদেশে কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে যায়া রোগীদের চিকিৎসায় অনীহা প্রকাশ করার কারণে যদি রোগীর মৃত্যু হয় তাহলে তা ফৌজদারি অপরাধ বলে গণ্য হবে বলেছেন হাইকোর্ট। তাই চিকিৎসার ক্ষেত্রে অবহেলার অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা দুটি নির্দেশনার আলোকে চিকিৎসা সেবা দেয়াসহ আট দফা নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।

করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনের আলোকে দেশের সব হাসপাতাল ও ক্লিনিক থেকে সাধারণ রোগীদের (নন-কোভিড) ফিরিয়ে না দিয়ে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার নির্দেশনা চেয়ে করা রির্টের শুনানি শেষে সোমবার (১৫ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

গত শনিবার (১৩ জুন) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনের আলোকে দেশের সব হাসপাতাল ও ক্লিনিক থেকে সাধারণ রোগীদের ফিরিয়ে না দিয়ে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদনটি করা হয়। রিটে রোগীদের চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতাল থেকে ফেরত দেয়ার ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে জনস্বার্থে রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের চার আইনজীবী। আইনজীবীরা হলেন-অ্যাডভোকেট এএম জামিউল হক ফয়সাল, মো. নাজমুল হুদা, মোহাম্মাদ মেহেদী হাসান এবং ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান।

রিটে স্বাস্থ্য সচিব, অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল) এবং উপ-সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ও পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

রিট আবেদনে বলা হয়, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে করোনা বা অন্যান্য রোগের উপসর্গ নিয়ে দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক ঘুরে ঘুরে মানুষ চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি উপলব্ধি করতে পেরে গত ১১ মে দেশের সকল হাসপাতাল ও ক্লিনিকে আগত রোগীদের ফেরত না পাঠিয়ে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে নির্দেশনা জারি করে সরকারের স্বাস্থ্য অধিদফতর। ওই নির্দেশনা অমান্য করলে লাইসেন্স বাতিলসহ প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও অধিদফতর থেকে জানানো হয়।

অথচ সরকারের সেসব নির্দেশনা উপেক্ষা করে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক সাধারণ রোগীদের করোনা সার্টিফিকেট ছাড়া ভর্তি নিচ্ছে না। সেক্ষেত্রে একটি করোনা টেস্ট করাতে রোগীর জন্য চার থেকে পাঁচদিন সময় লাগতে পারে। অথচ গুরুতর অসুস্থ রোগীর ক্ষেত্রে টেস্ট করানো এবং সে রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করাটা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই প্রতিদিনই চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুর ঘটনায় দেশের সংবাদমাধ্যমে উঠে আসছে।

এই বিভাগের আরও খবর