অসুস্থতার ভান ধরেও রক্ষা হয়নি বিবাদীর, ঠাঁই এখন কারাগারে
নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন, বর্তমানেও চিকিৎসাধীন আছেন- এমন দাবি করে আদালতে জামিন আবেদন করেন আব্দুর রহিম (৩২) নামের এক ব্যক্তি।
কিন্তু আদালতের বিচক্ষণতায় ধরা পড়ে যান বান্দরবানের লামা উপজেলার বাসিন্দা বিবাদী আব্দুর রহিম, শেষ রক্ষা হয়নি তার। অসুস্থতার ভানের বিষয়টি মিথ্যা প্রমাণিত হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
জনৈক আবু তাহের কর্তৃক দায়েরকৃত মামলার হাজিরা দিতে গেলে উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আবদুর রহিমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আব্দুর রহিম রুপসীপাড়া ইউনিয়নের উত্তর দরদরী হেডম্যান পাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ কবিরের ছেলে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, গত ১২ আগস্ট দুপুরের দিকে মামলার বাদী আবু তাহেরের স্ত্রী গৃহপালিত তিনটি গরু নিজ বাগানে বেঁধে দেন।
বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে পাশের আব্দুর রহিম পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গরুগুলো ছেড়ে নিয়ে আবু তাহেরের ধান ক্ষেতে লাগিয়ে দেন। এ নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে রুপসীপাড়া ইউনিয়নের উত্তর দরদরী নয়াপাড়ার জনৈক তাজুলের বাড়ির সামনে দা লাঠি নিয়ে আবু তাহেরের স্ত্রীর উপর হামলা করে রক্তাক্ত জখম করেন আব্দুর রহিম ও তার লোকজন।
এ সময় বিবাদীরা বাদীর স্ত্রীসহ পরিবারের অন্য সদস্যদেরকেও হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয়রা আহত গৃহবধূকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় আহত গৃহবধূর স্বামী আবু তাহের বাদী হয়ে ১৬ আগস্ট আব্দুর রহিমকে (৩২) প্রধান বিবাদী করে থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন। এজাহারটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করে থানা পুলিশ।
এজাহারে উল্লিখিত অন্য বিবাদীরা হলেন- আব্দুর রহিমের ভাই জসিম উদ্দিন (৩০), দরদরী হেডম্যান পাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ কবিরের স্ত্রী জহুরা রানী (৫৫) ও মো. জসিমের স্ত্রী নাছিমা আক্তার (২৫)।
গত ৪ অক্টোবর সোমবার এ মামলার হাজিরার দিন ধার্য ছিল। সে মতে, প্রতিপক্ষের হামলায় বর্তমানে আব্দুর রহিম গুরতর অসুস্থ চিকিৎসাধীন আছেন; এমন ভান ধরে আদালতে জামিন আবেদন করেন।
পরে অসুস্থতার বিষয়টি আদালতের সন্দেহ হলে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য আব্দুর রহিমকে পুলিশি পাহারায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান আদালত।
সেখানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক মোহাম্মদ রবীন পরীক্ষা নীরিক্ষা করে দেখেন আব্দুর রহিম সুস্থ আছেন। পরে দীর্ঘ শুনানির পর আব্দুর রহিমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
এদিকে মামলার বাদী ও গৃহবধূর স্বামী আবু তাহের বলেন, স্বামীকে মারধরের অভিযোগ তুলে গত ১৬ আগস্ট আমার ছেলেসহ ১৭জনকে বিবাদী করে থানায় মামলা করেন প্রতিপক্ষ আব্দুর রহিমের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস।
তার অভিযোগে যতটা আহত হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করেছেন, বাস্তবে আব্দুর রহিম ততটা আহত হননি বলে দাবি করেন আবু তাহের।
আব্দুর রহিমকে কারাগারে পাঠানোর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আইনজীবী জাফর আলম। তিনি বলেন, আব্দুর রহিম অসুস্থতার ভান ধরে জামিন চেয়েছিলেন। কিন্তু বিজ্ঞ আদালতের বিচক্ষণতায় শেষ রক্ষা হয়নি আব্দুর রহিমের।
আরএস/এমআই