ঘন ঘন বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করায় সুজনের ক্ষোভ
নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, বিদ্যুৎ হচ্ছে সভ্যতার লাইফ লাইন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিদ্যুৎ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।
‘শত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে গিয়ে নিত্য নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাহসী নেতৃত্বে বিদ্যুৎ উৎপাদন আজ এক অপার বিস্ময়। শহর, গ্রাম এমনকি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলও এর সুফল ভোগ করছে।’
তিনি বলেন, অথচ একসময় এসব প্রত্যন্ত এলাকায় একটু খানি বিদ্যুতের আলো জ্বলা কিংবা ফ্যান চলা ছিল অকল্পনীয় ব্যাপার। বিদ্যুৎ প্রাপ্তিতে তাদের সে স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দেওয়ার নাম হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
‘কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কোন ঘাটতি না থাকা সত্ত্বেও কি কারণে এবং কেনো ঘন ঘন বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। তাহলে আমাদের কি এখন একথা বলতে হবে যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারের অভূতপূর্ব সাফল্যকে আড়াল করার জন্য সুকৌশলে এসব ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে?’
বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারের অভূতপূর্ব সাফল্যকে আড়াল করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম এর প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান সামিনা বানু’র নিকট আহবান জানিয়েছেন খোরশেদ আলম সুজন।
আজ সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার সময় আগ্রাবাদস্থ বিদ্যুৎ ভবনে প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ আহবান জানান।
সুজন বলেন, স্বাভাবিকভাবে যে কারো মতো আমাদের মনেও প্রশ্ন জাগতে পারে সরকারের কর্মকাণ্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই পরিকল্পিতভাবে বিদ্যুতের এই আসা যাওয়া।
আগে যেখানে বিএনপিসহ চারদলীয় জোটের আমলে ১৮ ঘন্টা অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকতো সারাদেশ, ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিংয়ে ডুবে থাকতে হতো। সে অবস্থা রাতারাতি পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার ফলে কি কোন মহলের গাত্রদাহ হচ্ছে? প্রশ্ন রাখেন সুজন।
বিশেষ করে নিউমুরিং, হালিশহর, পতেঙ্গা, জামালখান এলাকার গ্রাহকরা ঘন ঘন বিদ্যুতের আসা যাওয়ায় অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। এতে করে গ্রাহকের মূল্যবান ইলেকট্রনিকস সামগ্রী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে কিনা তাও প্রশ্ন থেকে যায়। নাকি সরকারের বিশাল উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে ম্লান করার জন্য কেউ ওত পেতে রয়েছে তা খতিয়ে দেখার আহবান জানান সুজন।
তিনি প্রিপেইড মিটার পেতে গ্রাহকের যাতে কোন ধরনের ভোগান্তি না হয় সেদিকে দৃষ্টি দানের অনুরোধ জানান। কারণ প্রিপেইড মিটারের ফলে একদিকে যেমন গ্রাহক উপকৃত হচ্ছেন অন্যদিকে বিদ্যুৎখাতে সরকারের রাজস্বও অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।
তাছাড়া প্রিপেইড মিটারের যান্ত্রিক ক্রুটি হলে তা ত্বড়িৎ সমাধান করার জন্য প্রধান প্রকৌশলীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি গ্রাহক সেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ফেসবুকসহ ডিজিটাল মিডিয়ার সহযোগিতা নেওয়ারও অনুরোধ জানান।
বিউবো চট্টগ্রাম এর প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান সামিনা বানু অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে সুজনকে বিদ্যুৎ ভবনে স্বাগত জানান। তিনি সুজনের উত্থাপিত অভিযোগগুলো অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে শ্রবণ করেন।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একক পদক্ষেপের কারণে সারা দেশজুড়ে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। যার কারণে একদিকে যেমন বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে এবং অন্যদিকে জনগণও নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছে।
তবে গ্রীড লাইনে ত্রুটির কারণে গ্রাহকগণ মাঝে মাঝে ভোগান্তিতে পড়েন সেটা সত্য। তাছাড়া সঞ্চালন লাইনের ট্রীপের কারণে কিছু কিছু বিতরণ বিভাগের গ্রাহকগণ দুর্ভোগে আছেন। তাই প্রতিনিয়তই লাইনের মেরামত এবং ত্রুটি নিরসনে কাজ করছে আমাদের প্রকৌশলীগণ।
তিনি সুজনের অভিযোগগুলো গুরুত্বের সাথে আমলে নিয়ে স্ব-স্ব বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীদের সাথে আলোচনা করে দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন।
এছাড়া কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি গ্রাহকদের অযথা হয়রানি করেন তার বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পূর্ব) ইমাম হোসেন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পশ্চিম) শহীদুল ইসলাম মৃধা, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (উত্তর) শেখ মাহফুজুল হক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (দক্ষিণ) উজ্জ্বল কুমার মোহন্ত, নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছ, আব্দুর রহমান মিয়া, সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন, মো. শাহজাহান, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি এম ইমরান আহমেদ ইমু, সাজ্জাদ হাসান মনু, হাসান হাবিব সেতু, আকতার জামান রানা, শুভ চক্রবর্ত্তী, আশীষ সরকার নয়ন প্রমুখ।
আরএস/এমআই