chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

অভিভাবকদের জটলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংলগ্ন সড়কে তীব্র যানজট

নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যাংকার সরওয়ার আলম সপরিবারে থাকেন নগরের মুরাদপুর এলাকায়। সোমবার (১৩ আগস্ট) সকাল নয়টায় আগ্রাবাদের উদ্দেশে মোটরসাইকেল চেপে রওয়ানা হন। অন্য দিন ২০ মিনিটে কর্মস্থল আগ্রাবাদে পৌঁছাতে পারলেও আজ সড়কে দেখেন তীব্র যানজট।

ওয়াসা মোড় এলাকায় বেশ কয়েক মিনিট যানজটে পড়া সরওয়ারের সাথে কথা হয় চট্টলার খবরের প্রতিনিধির। তিনি বলেন, গতকাল স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার পর থেকে গাড়ির চাপ বাড়ছে। বাসা থেকে আসার পথে দু নম্বর গেইট, জিইসি ও ওয়াসায় মোড়ে যানজটে পড়তে হয়েছে। আগ্রাবাদ যেতে আরও দীর্ঘ সময় লেগে যেতে পারে।

দীর্ঘদিন পর গতকাল রোববার (১২ আগস্ট) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সড়কে ফিরেছে যানজট। সকাল থেকেই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বের হন প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশে। ফলে গণপরিবহনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত যান চলাচল আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংলগ্ন সড়ক দিয়ে চলাচল করা যানবাহনগুলো চলছে ধীর গতিতে। স্বল্প দূরত্বের যাত্রীকেও দীর্ঘ সময় ধরে গণপরিবহনে বসে থাকতে হচ্ছে।

তবে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ বলছে, অন্যান্য দিনের মতো সড়কে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। কেবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো চলাকলীন সময়ে কিছুটা যানজট তৈরি হচ্ছে। যদিও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না।

নগরের দামপাড়ায় বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানটির পাশে ফুটপাত দখল করে জটলা বেধে দাঁড়িয়ে আছেন অভিভাবক। যদিও স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিবেচনায় অভিভাবকদের জটলা এড়াতে সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল।কিন্তু তা মানছেন না।

এমনকি ব্যস্ত সড়কের বেশ কিছু এলাকাজুড়ে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করে রেখেছেন অনেকে। ফলে যানবাহন চলাচলে স্থবিরতার কারণে তৈরি হচ্ছে যানজট। বেলা ১১ টার দিকে স্কুল ছুটির পর পরিস্থিতি নাজুক আকারে রুপ নেয়। ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশার জটলা ও গণপরিবহনের জন্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এসে পড়েন সড়কে মাঝে।

সেখানে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিলেন নুরে আলম। নুর বলেন, দুদিনে সড়কের গাড়ির চাপ কিছুটা বেড়েছে। স্কুল চলাকালীন সময়ে যানজট বাড়লেও অন্য সময়ে যানচলাচল স্বাভাবিক থাকছে। এদিকে নগরের জামালখানে ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে গিয়েও যানজটের একই চিত্র চোখে পড়ে। রাস্তা দখল করে বসেছে বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকানি। অভিভাবকরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন সেখানে সদাই সারতে। যাতে করে সড়ক সংকুচিত হয়ে আটকা পড়ছে যানবাহন।

জামালখান দিয়ে চেরাগী হয়ে লালদীঘি, কাজীর দেউড়ি ও চকবাজারে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। বছরের অন্যান্য সময়েও এখানে যানজট লেগে থাকে। স্কুলে খুলে দেওয়ার পর যানজট যেনো আরও প্রকট আকারে রুপ নেয়। এলাকাটিকে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নীরব এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। জামালখান হয়ে চকবাজার এলাকায় হাজী মহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চিটাগং আইডিয়াল হাই স্কুল, কাজেম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, হাজী মহসিন কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ ও চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মতো বৃহৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। যাতে করে এসব সড়ককে যানজট নিয়ে চলাচল করতে হয়েছে।

তবে যানজট সহনীয় পর্যায়ে রাখতে অতিরিক্ত জনবল কাজ করে যাচ্ছে বলে জানালেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথ। তিনি চট্টলার খবরকে বলেন, সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। বাড়তি জনবল নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এলাকায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এর পাশাপাশি আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সাথে যোগাযোগ রাখছি যাতে করে কেউ রঙ পাকিং করতে না পারে। প্রতিষ্ঠানগুলোর আশেপাশে ভাসমান দোকান উচ্ছেদের জন্য প্রতিদিন অভিযান চলছে। অবিভাবকদের অনুরোধ করব আপনারা সন্তানকে ড্রপ করে দিয়ে গাড়িটি অন্যত্র পার্কিং করুন। কোনোভাবেই যেনো এটি চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে। একইসঙ্গে নাগরিকদের সহায়তা কমানা করছি।

আরকে/জেএইচ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর