নিজস্ব প্রতিবেদক : বৈশ্বিক মহামারী করোনার ভয়াল থাবায় শিক্ষা সূচি থেকে ঝরে গেছে প্রায় দেড় বছর সময়। ১৮ মাস পর খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালা। আজ সকাল ৮টা থেকে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর সরব পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামের সাড়ে ৪ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে নগরীর বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে ছাত্রছাত্রীদের হাসিমুখ উপস্থিতি। দীর্ঘদিন পর নিজেদের প্রিয় ক্যাম্পাসে ফিরতে পেরে সকলের চেহারাতেই ছিলো হাসি আনেন্দের ঝলক।
চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার এস এম জিয়াউল হায়দার জানিয়েছেন, করোনা প্রতিরোধের সকল সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেই চট্টগ্রামের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আজ খুলেছে। ছাত্রছাত্রীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ থেকে শুরু করে শ্রেণিকক্ষে অবস্থান সর্বত্র স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিত করা হয়েছে।
সকালে নগরীর বাওয়া স্কুল, চট্টগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়, সরকারী মহসীন উচ্চবিদ্যালয়, ডা. খাস্তগীর উচ্চবিদ্যালয়, কলেজিয়েট স্কুল ও চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল ৮টা থেকেই ছাত্রছাত্রীরা স্বাস্থ্য বিধি মেনে ক্যাম্পাসে উপস্থিত হয়েছে। ইনস্টিটিউটের শিক্ষক কর্মকর্তারা ছাত্রছাত্রীদের স্বাগত জানানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিধির বিষয়টি কঠোরভাবে নিশ্চিত করছেন।
চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সিনিয়র শিক্ষক মাইনুল এইচ সিরাজী জানান, সকাল থেকেই পলিটেকনিক ক্যাম্পাস মুখরিত হয়ে উঠেছে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতিতে। সকলের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করেই ক্লাসে প্রবেশ করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। ক্লাস রুমে সবাইকে প্রথমেই করোনা এবং স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে ব্রিফিং করা হয়েছে।
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কম্পিউটার বিভাগের ছাত্র আহসান উল্লাহ জানান, প্রায় দেড় বছর পর ক্যাম্পাসে এসে অনেক ভালো লাগছে।
সবাই স্বাস্থ্য বিধি মানার ব্যাপারে অঙ্গিকারবদ্ধ উল্লেখ করে আহসান বলেন, আমরা চাই করোনা পরিস্থিতি যেনো আর অবনতি না হয়, আমরা যেনো নিয়মিত ক্লাস করতে পারি।
অরবিট কে্রডিট স্কুল অক্সিজেন ক্যাম্পাসের অধ্যক্ষ এম এ আমিন জানান, সকাল ৮টা থেকেই স্কুলে প্লে থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের প্রথম শিফটের ক্লাস শুরু হয়েছে। সকাল ৮টার আগেই স্কুলে আগত ছাত্রছাত্রীদের তাপমাত্রা মেপে, হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে সবাইকে জীবাণুমুক্ত করে স্কুলে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হয়। এছাড়া শতভাগ মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রথম দিনেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে ছাত্রছাত্রীদের সরব ও হাসিমুখ উপস্থিতি রয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, অধিদপ্তরের অধীনে চট্টগ্রাম বিভাগে ১১ হাজার ৫৭৬টি সরকারি বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অধীনে চট্টগ্রাম মহানগর ও উপজেলা মিলিয়ে ২ হাজার ২৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে চট্টগ্রামে। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ লাখ ৫ হাজার ৭২৯ জন।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসের অধীনে ইবতেদায়ী মাদ্রাসা ও উচ্চ বিদ্যালয় ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে চট্টগ্রাম জেলায় ২ হাজার ১০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব বিদ্যালয় রবিবার সকাল ৮টা থেকে সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে খুলে দেওয়া হয়েছে।
এসএএস/চখ