chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

যারা উড়ে এসে জুড়ে বসে, তাদের দায়িত্ববোধ থাকে না: প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক নিউজ: যারা উড়ে এসে ক্ষমতায় জুড়ে বসে, তাদের দায়িত্ববোধ থাকে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আজ বুধবার ভূমি ভবন, উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস ভবন, অনলাইন ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ কার্যক্রম এবং ভূমি তথ্য ব্যাংক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের শুরুতেই বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতার সরকারের ১৩ জানুয়ারির কেবিনেট সভায় তিনি যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা ছিল যুগান্তকারী। তিনি যত সার্টিফিকেট মামলা ছিল কৃষকদের বিরুদ্ধে, সব মামলা প্রত্যাহার করে নেন।

‘ভূমিকর যারা দিতে পারেননি, মাফ করে দেন। সেই সঙ্গে ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মওকুফ করে দেন। মানুষের যে অধিকার, সেই অধিকার নিশ্চিত করার জন্য, এটা একটা পদক্ষেপ ছিল।’

সরকারপ্রধান বলেন, তিনি (বঙ্গবন্ধু) আরেকটি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, একজন মানুষের নামে কত জমি থাকবে? তিনি একশ বিঘার একটি সিলিংও করে দিয়েছিলেন। জাতির পিতার একটাই লক্ষ্য ছিল, বাংলাদেশের মানুষের অন্ন, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।

‘ভূমিহীন মানুষের জন্য তিনি গৃহনির্মাণের পদক্ষেপ নেন, গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প নেন এবং খাসজমি ভূমিহীনদের মাঝে বিতরণ শুরু করেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, এদেশের মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য যেমন খাদ্য উৎপাদনে গুরুত্ব দিয়েছিলেন, তেমনি প্রতিটি ইউনিয়নে ১০ শয্যার একটি করে হাসপাতাল করে মানুষের দোরগোড়ায় চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। শিক্ষাব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেন। ড. কুদরত-এ খোদার নেতৃত্বে শিক্ষা কমিশন করে দেন।

তিনি বলেন, জাতির পিতার আকাঙ্খা ছিল যে, একটা দেশকে তিনি গড়ে তুলবেন। সেটা তিনি করতে পারেননি। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন করে উন্নতির পথে নিয়ে যান। তখনই সপরিবারে তাকে হত্যা করা হয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা দেখেছি- শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বের সব জায়গায় যখন অপরিকল্পিত নগরায়ন হয়; একদিকে, আমরা কৃষি জমি হারাই। অপরদিকে বনায়ন ধ্বংস হয়, পরিবেশ নষ্ট হয়। এটা খুব একটা স্বাভাবিক নিয়মই ছিল।

‘কিন্তু আমরা সরকারে আসার পর থেকে আমাদের প্রচেষ্টাই ছিল- ভূমি ব্যবহার, ভূমি উন্নয়ন এবং ভূমিকে যথাযথভাবে রক্ষা করা। কৃষি জমি রক্ষা করা আবার মানুষের বসতিটা সুন্দরভাবে গড়ে তোলা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে তাদের রক্ষা করা, এসব বিষয় চিন্তা করে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভূমি নীতিমালা অর্থাৎ ভূমি ব্যবহারের জন্য যে একটা নীতিমালা প্রয়োজন আমরা নির্বাচনী ইশতেহারে যুক্ত করেছিলাম। ২০০১ সালে সে ধরনের একটা নীতিমালাও প্রণয়ন করি। ’৯৬ আমলে ২৮টি মৌলিক পদক্ষেপ নিই এবং জাতীয় ভূমি ব্যবহার কমিটি গঠন করেছিলাম।

তিনি বলেন, দ্বিতীয় দফায় ২০০৯ এ সরকারে এসে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের ঘোষণা ছিল। সেই দিকে লক্ষ্য রেখে আমরা নানা পদক্ষেপ নিই। ভূমি ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটালাইজড করে মানুষের সেবা দেওয়া এবং মানুষের অধিকার সুরক্ষিত করার ব্যবস্থা করেছিলাম।

‘২০১৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভূমি মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে অনেকগুলো নির্দেশনা দিয়েছিলাম। আমি ধন্যবাদ জানাই, আপনারা সেই নির্দেশনাগুলো এক এক করে পালন করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে ভূমি সেবাটা মানুষের জন্য সহজ করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগতি সাধন করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ জাতির পিতার হাতে গড়া সংগঠন। এই সংগঠন নিয়ে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। এই আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকে, মানুষ সেবা পায়, দেশের উন্নয়ন হয়, দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়। যারা উড়ে এসে ক্ষমতায় জুড়ে বসে, তাদের দায়িত্ববোধ থাকে না। টাকা বানানোর মেশিন পায়। ক্ষমতাকে ভোগের বস্তু মনে করে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা করোনা সংকট মোকাবিলায় নানা পদক্ষেপ নিয়েছি। অর্থনীতির স্থিতি ধরে রাখতে সচেষ্ট হয়েছি। দেশকে এগিয়ে নিয়ে রূপকল্প ৪১ ও ডেল্টাপ্ল্যান নিয়েছি। আমরা চাই, অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

এমআই/চখ

এই বিভাগের আরও খবর