chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

গণরুম না রাখার ঘোষণাকে স্বাগত ছাত্রলীগের, বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দেহ ছাত্রদলের

শিক্ষা ডেস্ক: মহামারি নভেল করোনাভাইরাসের কারণে দেড় বছর বন্ধ থাকার পর খুলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল। এখন থেকে হলে আর গণরুম থাকবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ছাত্রদল। তবে এর বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে ছাত্র সংগঠনটি। অন্যদিকে, ছাত্রলীগও এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে এবং এ বিষয়ে প্রশাসনকে সহযোগিতা করার কথা বলেছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদের এক সভায় এমন অবস্থান জানায় ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। সভায় ছাত্রলীগ, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন বাম সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা যোগ দেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘বর্তমানের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হলগুলোকে সত্যিকার অর্থেই রাজনীতিকরণ করে রেখেছে। অথচ বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা করেনি। ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণ থেকে হলগুলোকে মুক্ত করে সব শিক্ষার্থীর অভিভাবক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন হলগুলোতে সহাবস্থান নিশ্চিত করে সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।’

রাকিবুল ইসলাম রাকিব আরও বলেন, ‘বিএনপির সরকারের সময় একজন ছাত্রলীগ কর্মীও বলতে পারবেন না তাঁদের হল থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। সব হলেই ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে একসঙ্গে অবস্থান করেছেন। আমরা এরকম একটি পরিবেশ চাই।’

এ ছাড়া ঢাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, হলগুলোতে আর গণরুম থাকবে না। এ জন্য বিভিন্ন হলের গণরুমের চরিত্র পরিবর্তনের কাজ শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাই৷ যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিয়ে আমরা সন্দিহান। প্রশাসন যদি এটা বাস্তবায়ন করে দেখাতে পারে তবে সেটি সত্যিই প্রশংসনীয় হবে।’

অন্য দিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন : ‘বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সময়সীমা এগিয়ে সেপ্টেম্বরে নিয়ে আসতে হবে। কারণ, অক্টোবরে হলে শিক্ষার্থীদের বাসা ভাড়ার সংকটের মধ্যে পড়তে হবে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে সব শিক্ষার্থীর জন্য টিকাদান কেন্দ্র স্থাপন করা, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের সিট নিশ্চিত করা, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র এবং মেডিকেল সেন্টারে আইসোলেশন সেন্টার স্থাপন করা এবং শিখন ঘাটতি দূর করার জন্য যেন রিকভারি ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি গণরুম বাতিলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে সব ধরনের সহযোগিতা করব বলে জানিয়েছি।’

সভায় সব ছাত্রসংগঠনকে দায়িত্বশীল রাজনৈতিক আচরণ ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থের বিষয়টি প্রাধান্য দিয়ে তাদের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানান ছাত্রলীগের এই নেতা।

অপর দিকে, সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি গণরুম না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারে, এবং হলে সিট বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা রাখতে পারে, তাহলে আমরা অবশ্যই সাধুবাদ জানাব। সে ক্ষেত্রে ছাত্র সংগঠন হিসেবে ছাত্র ইউনিয়ন প্রশাসনকে সহযোগিতা করবে।’

ফয়েজ উল্লাহ আরও বলেন, ‘অতীতেও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা চাই এবার বাস্তবায়ন হোক। তবে যদি গণরুম না থাকে, তাহলে এসব শিক্ষার্থীদের কোথায়-কীভাবে সিট দেওয়া হবে, তার একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা করে শিক্ষার্থীদের সামনে তা তুলে ধরতে হবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী বলেন, ‘সভায় ছাত্রসংগঠনগুলোকে বলা হয়েছে, তারা যেন শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দিতে উদ্বুদ্ধ করে। গণরুম না রাখার যে প্রক্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয় শুরু করেছে সেটিকেও তারা স্বাগত জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় খুললে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রেও তাদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয় খোলার তারিখ নির্ধারণ করতে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর প্রভোস্ট কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। এই সভায় হল খোলার তারিখ নির্ধারিত হবে।

এন-কে

এই বিভাগের আরও খবর