chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রামে পাসপোর্ট পেতে ভোগান্তি কমছে না

দালালের ‘সাংকেতিক চিহ্ন’তে মুক্তি

এম.এ.মতিন: নগরীর মনছুরাবাদে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে নানা অনিয়নের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘুষ ছাড়া সঠিক সময়ে মিলছে না পাসপোর্ট। সাধারণ মানুষজনকে পাসপোর্ট পেতে ছুটে যেতে হয় দালালদের কাছে। পাসপোর্ট অফিসের বাইরে প্রকাশ্যে চলছে দালালদের রমরমা বাণিজ্য।

দালালদের বিশেষ ‘সাংকেতিক চিহ্ন’ আবেদন ফর্মে না থাকলে পাসপোর্ট অফিসের অভ্যন্তরে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। সর্বোচ্চ কর্তাদের কাছে এসব বিষয়ে অভিযোগও দিয়েছেন কেউ কেউ। তাতেও মিলছে না সুফল। ফলে দুদকের আশ্রয় নিয়েছেন ভুক্তভোগি একজন স্কুল শিক্ষিকা। দুদকের কাছে দেয়া সেই অভিযোগের একটি কপি এসেছে ‘চট্টলার খবরের’ হাতে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নগরীর ডবলমুরিং থানাধীন পোস্তারপাড় আছমা খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হোসনে আরা বেগম সরকারি এনওসি সুবিধা নিয়ে অসুস্থজনিত কারণে গতবছরের ২১ ডিসেম্বর ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদনপত্র জমা করেন। কিন্তু বিধিবাম, আবেদনপত্রটি জমা দেওয়ার পূর্বেও উক্ত শিক্ষিকাকে কয়েকবার ভূলক্রটির কারণ দেখিয়ে বিভিন্নভাবে আবেদনপত্র প্রত্যাখান করার ঘটনা ঘটেছে।

হোসনে আরা বেগম যথা সময়ে ই-পাসপোর্টটি ডেলিভারি পেলেই সুচিকিৎসার জন্য হয়তো ভারতে যাবেন। কিন্তু ডেলিভারি সময় ৯ মাস অতিক্রম হলেও পাসপোর্টের দেখা এখনও পাননি তিনি।

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে পাসপোর্ট অফিসের বিভিন্ন কক্ষে গত ৯ মাসে ধরনা দিয়েও কাজ হয়নি এমনটি উল্লেখ করেন অভিযোগে। আরো উল্লেখ করেন সহকারী পরিচালক সাধন সাহার ২০৪ নং কক্ষে অনেকবার দৌড়াতে হয়েছে হোসনে আরাকে। তিনি আশ্বাস দিয়ে গেলেও কাজের কাজ হয়নি কিছুই।

ই-পাসপোর্ট পাওয়ার আশায় স্কুল শিক্ষিকা নিরুপায় হয়ে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সম্প্রতি অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেখানে ভুক্তভোগী শিক্ষিকা হোসনে আরা সহকারী পরিচালক সাধন সাহার আইনানুগ বিভাগীয় শাস্তি ও সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করেছেন।

হোসনে আরার অভিযোগের প্রেক্ষিতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাসপোর্ট অফিসে নানা অনিয়মের কারণে সাধারণ মানুষ নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। এতে করে মানুষের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক অবদান রাখা প্রবাসী শ্রমিকদেরও পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে গিয়ে পড়তে হচ্ছে চরম বিপাকে।

হাটহাজারী এলাকার প্রবাসী রেজাউল করিম বলেন, তিন মাস পার হতে চললেও ই-পাসপোর্টট পায়নি।পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়াতে দালাল ছাড়া সাধারণ পাসপোর্টের আবেদন করেছিলাম তিন মাস আগে। এখনো কোন খবর নেই।। নগরীর সদরঘাট এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেন। তিনিও ৪ মাস আগে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছিল। তিনি বলেন, ই-পাসপোর্ট করতে হয়রানি কম শুনে দালাল ছাড়া পাসপোর্টের আবেদন করি। কিন্তু ৪ মাস হতে চললেও এখনো পাসপোর্ট হাতে পায়নি।

প্রবাসী শ্রমিকসহ দেশের সাধারণ মানুষ যাতে প্রয়োজনের সময় কোনোরকম হয়রানি ও ভোগান্তি ছাড়া পাসপোর্ট পেতে পারে, সেজন্য সরকার অচিরেই পাসপোর্ট অধিদফতরকে দুর্নীতিমুক্ত করার পদক্ষেপ নেবে। এটাই প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মনসুরাবাদ পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক সাধন সাহা চট্টলার খবরকে বলেন, পাসপোর্ট আবেদন ফর্মে সমস্যা না থাকলে তো এতদিন হওয়ার কথা না। হয়তো ঢাকায় চেক করার সময় কোন সমস্যা ধরা পড়েছে। ঢাকায় সমস্যা ধরা পড়লে আমাদের কিছু করার থাকে না। আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে থাকি। তারপরও ৮-৯ মাসে পাসপোর্ট না পাওয়ার বিষয়টি ভেবে দেখবো।

এসএএস/জেএইচ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর