chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রামে করোনার উর্ধ্বগতিতে নতুন ভ্যারিয়েন্ট নেই

সিভাসু’র গবেষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈশ্বিক মহামারী করোনার বৃদ্ধির সাথে সাথে পাল্টেছে এর ধরণ। ভাইরাসটির নতুন মিউটেশন মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা দুৃটোই বেড়েছে।

সর্বশেষ ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে ভুগতে হয়েছে ভারত ও বাংলাদেশকে। দেড় মাসের বেশি সময় ধরে চলা ভ্যারিয়েন্টে চট্টগ্রামেও দাপট চালিয়েছে। তবে নতুন আশার খবর দিয়েছেন সিভাসুর একদল গবেষক।

চট্টগ্রামে সংক্রমণ বৃদ্ধি করতে সক্ষম এমন কোনো নতুন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি নেই জানালেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তবে গবেষক দলের ধারণা, বিভিন্ন জিনের বায়োলজিক্যাল মডেলিং দ্বারা করোনাভাইরাসের মিউটেশন সম্পর্কে আরো গভীর ও তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাবে।

আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে গবেষক দলের প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের সভাপতিত্বে একদল গবেষক চট্টগ্রামের করোনা ভাইরাসের ৩০০ টি স্পাইক জিন সিকোয়েন্স বিশ্লেষণ করেন। গত বছর জুন হতে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সিভাসু ল্যাবে চলে গবেষণা। একই সঙ্গে এসব নমুনা ঢাকার ডিএনও ল্যাবে টেস্টে করা হয়।

গবেষক দলের মধ্যে অধ্যাপক ড. শারমিন চৌধুরী, সহকারী অধ্যাপক ডা. ইফতেখার আহমেদ রানা, বৈজ্ঞানিক কর্মকতা ডা. ত্রিদীপ দাশ, মলিকুলার বায়োলজিস্ট ডা. প্রনেশ দত্ত, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম এবং ডা. তানভীর আহমদ নিজামী ছিলেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, করোনা ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের মিউটেশনের কারণে এসব ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ও মৃত্যু হারের ভিন্নতা দেখা যায়। এমন কি নতুন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতিরও সম্ভাবনা থাকে। ৩০০ টি স্পাইক জিন সিকোয়েন্সের মধ্যে ৬৭ টি নমুনায় স্পাইক প্রোটিনের মধ্যে মিউটেশন রয়েছে। এর মধ্যে নিউক্লিওটাইডের সিঙ্গেল মিউটেশন হয়েছে ৪৩ টি নমুনায়। একের অধিক নিউক্লিওটাইডের মিউটেশন হয়েছে ২৪ টি নমুনায়।

এসব মিউটেশনের কারণে স্পাইক প্রোটিনের ৪৯ টি বিভিন্ন স্থানে এমাইনো এসিডের পরিবর্তন হয়েছে। নুমনা বিশ্লেষণ করে গকেষক দল জানান, স্পাইক প্রোটিনের গঠনের উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন হয়নি। এসব মিউটেশনের স্থান ছিলো স্পাইক প্রোটিনের S1 ডোমেইন এবং S1-S2 সাব-ইউনিট লিংকার। উক্ত গবেষণায় এমাইনো এসিডের মিউটেশনের উল্লেখযোগ্য স্থান হচ্ছে D614G, D138H, V213L এবং Q506H।

গবেষকরা জানান, ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন ও মানবদেহের নির্দিষ্ট রিসেপ্টরের (ACE-2) সংযোগস্থল শনাক্তকরণের মাধ্যমে এন্টিভাইরাল ড্রাগ ডিজাইন করতে সহায়তা করে। এছাড়াও ভাইরাসের প্রোটিনের নির্দিষ্ট এপিটোপ (ভাইরাসের সংরক্ষিত অংশ-যা মানব শরীরে নির্দিষ্ট এন্টিবডির সাথে ক্রিয়া করে) শনাক্তকরণের মাধ্যমে অধিক কার্যকরী ভ্যাকসিন উদ্ভাবনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। মিউটেশনের কারণে স্পাইক প্রোটিনের ক্রমাগত পরিবর্তন ভ্যাকসিন এবং এন্টিভাইরাল ড্রাগের কার্যকারিতায় বৈচিত্র্য নিয়ে আসে।

গবেষকরা মনে করেন, নিয়মিত স্পাইক প্রোটিনের মিউটেশন বিশ্লেষণ করে অধিক কার্যকরী ভ্যাকসিন এবং এন্টিভাইরাল ড্রাগ উৎপাদন করা সম্ভব-যা কোভিড-১৯ প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত করোনার তিনটি উল্লেখযোগ্য ধরণ আলফা, বিটা ও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট করোনা ভাইরাসের উর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে।

আরকে/জেএইচ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর