chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

দেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল: শিক্ষা উপমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেন, শোককে শক্তিতে রূপান্তরের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’

শনিবার (২৮ আগস্ট) বিকেল ৪টায় নগরীর দারুল ফজল মাকেটস্থ মুক্তিযোদ্ধা ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, শহীদ পরিবারবর্গ ও ২১ আগস্ট বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় নিহত সকল শহীদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম মহানগর কমিটি আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভার শুরুতে জাতির পিতাসহ সকল শহীদের স্মরণে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর আহবানে সাড়া দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবনের মায়া ত্যাগ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন বলেই আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি।

‘এ দেশের স্বাধীনতা সহ্য করতে না পেরে খুনী জিয়াউর রহমান ও তার দোসররা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবনে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের লেবাশ ধরে সামরিক বাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ফাঁসির পরোয়ানায় স্বাক্ষরসহ বর্বরতম হত্যাকান্ডে নেতৃত্ব দিয়েছে জিয়াউর রহমান।’

তিনি বলেন, এ ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক ঘৃন্যতম ও কলঙ্কময় অধ্যায় যুক্ত হয়েছিল। আজ তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে অর্থনৈতিক, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে।

নওফেল বলেন, খুনী জিয়াউর রহমানের কবরের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার কবরের নামে একটি জায়গা দখল করে রাখা হয়েছে। জিয়াউরের পরিবার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, পুত্র তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান খোকোর দেশে পাকিস্তানী শাসন ব্যবস্থা কায়েমসহ তালেবান রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিলেন।

তারা তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে। এ হামলায় আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ অনেকে নিহত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন দেশে খুনী জিয়ার সন্তান ও কর্মীদের রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই।’

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামের জিয়া জাদুঘরের নাম মুছে দিয়ে অচিরেই মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি জাদুঘর করতে সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়কে অবহিত করা হবে। যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুীর পিতা রাজাকার-আলবদর ফজলুল কাদের চৌধুরী একজন রাজাকার-আলবদর ছিলেন। তার নামে চট্টগ্রাম নগরীর ফজলুল কাদের সড়কের নাম মুছে ফেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী ইনামুল হক দানু সড়ক করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

এছাড়া নগরীর অন্যান্য সড়কগুলো বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে নামকরণের বিষয়েও আশ্বস্ত করেন নওফেল।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু একমাত্র নেতা যিনি সমগ্র বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন। বঙ্গবন্ধু শুধু বাঙ্গালী জাতির নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন সারা বিশ্বের অবিসংবাদিত নেতা। বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে কারা ছিল তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও উদ্দেশ্য হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের কাছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের সন্তানদেরকে সরকারের উন্নয়নের মহাসড়কে সামিল হতে হবে।’

নওফেল বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে জানার কোন শেষ নেই। তিনি অত্যন্ত দুরদর্শী নেতা ছিলেন। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠাই তিনি আজীবন যুদ্ধ করে গেছেন। যে ব্যক্তি আজীবন দেশের স্বাধীনতা ও এদেশের মানুষের জন্য ত্যাগ করে গেছেন তাঁকেই সপরিবারে নিষ্ঠুরতম হত্যাকান্ডের শিকার হতে হয়েছে। আমরা দূর্ভাগা জাতি। বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছে তারাই আজ ইতিহাস বিকৃত করছে।

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, জীবিত মুজিবের চেয়ে মৃত মুজিব অনেক শক্তিশালী। বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও স্বাধীনতা এ তিনটি শব্দ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ১৯৭৫ সালের নারকীয় হত্যাকান্ডের পর ষড়যন্ত্র থেমে নেই। সমস্ত ভেদাভেদ ভূলে গিয়ে আপনারা দেশকে ভালোবাসুন, দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র রুখে দিন।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোঃ সরওয়ার আলম চৌধুরী মনির সভাপতিত্বে ও মহানগর কমিটির সদস্য সচিব কাজী মুহাম্মদ রাজীশ ইমরানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদের সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধন চন্দ্র বিশ্বাস, সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ খোরশেদ আলম (যুদ্ধাহত), চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.ওমর ফারুক রাসেল। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির আহবায়ক সাহেদ মুরাদ সাকু, যুগ্ম আহবায়ক মিজানুর রহমান সজীব, যুগ্ম আহবায়ক সাজ্জাদ হোসেন ও জেলা কমিটির সদস্য সচিব কামরুল হুদা পাভেল প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অধীন বিভিন্ন থানা কমান্ডের কমান্ডার, ডেপুটি কমান্ডার, সহকারী কমান্ডার, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

এমআই/চখ

এই বিভাগের আরও খবর