chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

মাদ্রাসাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আহ্বান বাবুনগরীর

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনার মহামারীর মুখে বন্ধ হয়ে যাওয়া কওমি মাদ্রাসাসহ সকল প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী।

মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) হেফাজতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বাবুনগরী বলেন, দেশের সার্বিক আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার অফিস, হাট-বাজার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালুর অনুমতি দিয়েছে। সীমিত পরিসরে চলছে গণপরিবহন। একই সঙ্গে পর্যটন, বিনোদনকেন্দ্র, চিড়িয়াখানা ও গণপরিবহন চলাচলে সকল বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হচ্ছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে আমরা বাস্তবসম্মত ও জনচাহিদার প্রতিফলন হিসেবে দেখছি।

এ পরিস্থিতিতে দেশের ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবকদের সাথে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাবো, ছুটি আর দীর্ঘায়িত না করে অবিলম্বে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হোক।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খুলে দেওয়ার যুক্তি তুলে ধরে হেফাজত আমীর বলেন, শিক্ষার ধারাবাহিকতা থেকে দীর্ঘদিন দূরে থাকার কারণে দেশের প্রতিটা শিক্ষার্থী, তাদের অভিভাবক এবং শিক্ষকরা আজ দিশেহারা। বই-পুস্তকের সাথে কোমলমতি ছোট শিক্ষার্থীদের যেমন ব্যাপক ফারাক তৈরি হয়েছে, তেমনি কিশোর বয়সের শিক্ষার্থীরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে ওঠছে।

যে সময়টা তারা বই পুস্তক ও নৈতিকতার অনুশীলনে ব্যয় করত, সেটা তারা পার করছে মোবাইল ও ইন্টারনেটের ব্যবহার করে। বন্ধু-বান্ধবের সাথে অহেতুক আড্ডা দিয়ে। পাশাপাশি নানা ধরনের কিশোর অপরাধ আশংকাজনক হারে বেড়েছে। অভিভাবকরা সন্তানদের বিপথগামিতা ও ভবিষ্যত ভেবে গভীর উৎকণ্ঠায় ভূগছেন।

বাবুনগরী দাবি করেন, বর্তমানে শিশু-কিশোর ও তরুণদের খেলাধুলায়, বেড়াতে, হাটবাজারে ও শপিং মলে যেতে এবং গণপরিবহণে ছড়তে কোনরূপ সরকারি বিধিনিষেধ নেই। অফিস, ব্যবসায় ও কলকারখানায় কাজ করা অভিভাবকদের সংস্পর্শেও তারা প্রতিদিনই আসছে। তাছাড়া বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শুরু করে, স্বাস্থ্যবিভাগ বলছে করোনায় কম বয়সীদের তেমন ক্ষতি করছে না।

এমন পরিস্থিতিতে সবকিছু উন্মুক্ত রেখে, শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কোনোই যৌক্তিকতা থাকে না।

ইতোমধ্যে দেশের আলেম সমাজও সরকারের প্রতি মাদ্রাসাসমূহ খুলে দিতে বার বার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। যাতে  লাখ লাখ মাদ্রাসা ছাত্রের শিক্ষার ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন থাকার পাশাপাশি কুরআন-হাদীস ও ইসলামী জ্ঞান চর্চার বরকতে করোনাসহ সকল বিপদাপদ থেকে দেশ ও জাতি রক্ষা পায়।

গতবছর কওমি মাদ্রাসা খোলার প্রসঙ্গ টেনে হেফাজতের আমিরে বলেন, উলামায়ে কেরামের আহ্বানে সরকার গত বছরের আগস্ট মাস থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কার্যক্রম চালুর অনুমতি দেয়। এই সময়ে কোনো মাদরাসায় করোনা ছড়িয়ে পড়ার নজির ছিল না। কওমি মাদ্রাসাসমূহের এই ইতিবাচক অভিজ্ঞতার আলোকে শুধু মাদরাসা নয়, বরং কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ রাখা বাস্তবসম্মত নয়।

সুতরাং মাদ্রাসাসহ দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুর সিদ্ধান্ত দিতে সরকারের প্রতি আমরা উদাত্ত্ব আহ্বান জানাচ্ছি।

আরকে/ এনএনআর

এই বিভাগের আরও খবর