নিরপরাধ মিনুকে জেল খাটানোর মূল রহস্য উদঘাটন, গ্রেফতার ২
নিজস্ব প্রতিবেদক: কুলসুমা আক্তার কুলসুমী ও সহযোগী আসামি মর্জিনা বেগমকে দুই দিনের রিমান্ড শেষে আজ রবিবার (১ আগস্ট) মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফিউদ্দিন আহমেদের আদালতে হাজির করা হয়। দুজনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আদালতে।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উঠে আসা তথ্য গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেন নগরীর কোতোয়ালী থানার ওসি নেজাম উদ্দিন। তিনি জানান, ২০০৬ সালে চট্টগ্রাম নগরীর রহমতগঞ্জ এলাকার বাসায় মোবাইলে কথা বলাকে কেন্দ্র করে গলা টিপে হত্যা করা হয় কোহিনুর আক্তার নামে এক গার্মেন্টস কর্মীকে। হত্যার পর তাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে ঝুলানো হয় গাছে।
প্রথমে এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হলেও পুলিশের ২ বছর তদন্ত শেষে সেটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়। হত্যার অভিযোগে আসামি কুলসুমা আক্তার কুলসুমীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ মামলায় প্রায় দেড় বছর হাজতবাস শেষে জামিনে বের হয়ে দীর্ঘ ১০ বছর আদালতে হাজিরা দেন কুলসুমী।
২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর মামলায় কুলসুমা আক্তার কুলসুমীর যাবজ্জীবন সাজার আদেশ দেন আদালত। এসময় জেলহাজত থেকে বাঁচতে পরামর্শ নেন মর্জিনা বেগমের কাছে। মর্জিনা পরিচয় করিয়ে দেন দুই দালাল কাউয়াল ও শাহাদাতের সাথে।
পরে চারজনের পরামর্শ ও বুদ্ধিতে দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে কুলসুমীর পরিবর্তে মিনুকে কুলসুমা সাজিয়ে আদালতে নিয়ে যায় শাহাদাত ও মর্জিনা। মিনুকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিলো এক মাসের মধ্যে তাকে জামিন করিয়ে নেবে।
পরবর্তীতে কুলসুমী দালালদের দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় সে নগরীর ইপিজেড এলাকায় আত্মগোপনে চলে যায় আর দালালরা কুলসুমী ও মর্জিনার দুটি প্লট দখলে নেয়।
এদিকে ২৯ জুলাই ভোরে নগরের পতেঙ্গা এলাকা থেকে কুলসুম আক্তার কুলসুমীর বদলে মিনু কারাগারে থাকার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় কুলসুমী ও সহযোগী মার্জিনা আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়।
আজ রবিবার আদালতে দেয়া আসল কুলসুমী ও সহযোগী মর্জিনার জবানবন্দিতে দুই দালালের তথ্য পেয়ে সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে অভিযান চালিয়ে মো. নুর আলম কাওয়াল (৪৮) ও মো. শাহাদাত হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতার দুই দালালের মধ্যে মো. শাহাদাত হোসেন নামে একজনকে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে হাজির করা হলে আদালত ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ও অপরজন মো. নূর আলম কাওয়ালকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এদিকে জবানবন্দি শেষে আদালত কুলসুমা আক্তার কুলসুমী ও সহযোগী মর্জিনা আক্তারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন বলে জানান ওসি নেজাম উদ্দিন।
আরএস/এমআই