chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

সঠিক বার্তাটি পৌঁছানো গেলে প্রধানমন্ত্রী আমাদের কথা শুনবেন

নিজস্ব প্রতিবেদক: একুশে পদকপ্রাপ্ত সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন বলেছেন, সিআরবিতে কোনোভাবেই হাসপাতাল হতে দেয়া হবে না। সিআরবিতে হাসপাতাল না করার দাবিটি পুরো চট্টগ্রামের। সঠিক বার্তাটি প্রধানমন্ত্রীকে পৌঁছানো গেলে তিনি আমাদের কথা শুনবেন।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় সিআরবিতে বেসরকারি হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগের প্রতিবাদে নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রামের আয়োজনে আলোচনা সভা ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন বলেন, চট্টগ্রাম শহরের এক সময়ের যে প্রাকৃতিক সুন্দর ঐতিহ্যপূর্ণ জায়গাগুলো ছিল তা কোনোটিই এখন আর নেই।

এমনকি চট্টগ্রামের যে পরীর পাহাড় বা ফেয়ারি হিল বা কোর্ট বিল্ডিং, এক সময় সেখানে উঠলে কর্ণফুলী নদী যে চট্টগ্রাম শহরকে বেষ্টন করে রয়েছে তা দেখা যেত। আজকে কিছুই দেখা যায় না। চট্টগ্রাম গাছ শূন্য হয়ে যাচ্ছে।

দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন জঙ্গলকে রক্ষায় বিশ্বেও অনেক দেশ অর্থ দিয়ে যাচ্ছে কারণ বিশ্বের অক্সিজেনের চাহিদা মেটায় আমাজন। ঠিক সেরকম এই সিআরবিতে অসংখ্য শতবর্ষী গাছ রয়েছে কত চমৎকার। এই পুরো অঞ্চলটাই মহানগরীর শ্বাস কেন্দ্র।

সিআরবিতে রয়েছে শহীদ আবদুর রবের বাসা। এই শহীদ আবদুর রবের সাথে ১৯৭১ সালের এপ্রিলে কানুনগোড়ায় দেখা হয়েছিল। তখন তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের জিএস। আমি বলেছিলাম রব তুমি সাবধানে চলাফেরা করো।

শহরে যাচ্ছ বলছো, সাবধানে যেও। সে আমাকে বলেছিল, স্যার আপনি সাবধানে থাকবেন। দু:খের বিষয় সেই রব শহীদ হয়েছিল। সেই শহীদের জায়গা এই সিআরবি। এইখানে কখনোই প্রফিটের জন্য পিপিপি একটা আমরা করতে দিতে পারি না।

বাংলাদেশের সবাই জানেন এই হাসপাতালটি কী রকম ভাবে মৃত মানুষ গেলেও কেউ অর্থ আদায় করে। এই চমৎকার জায়গায় মহানগরীর প্রকৃতির সবচেয়ে মনোরম কেন্দ্রে অর্থগৃধ্ম হাসপাতাল করতে আমরা কখনোই দেব না। এটিকে ধ্বংস করতে দেব না। তরুণ প্রজন্ম দেবে না।

আমরা যদিও বৃদ্ধ হয়েছি, আমরাও দেব না। আমরা সবাই মিলে প্রতিহত করব। প্রধানমন্ত্রী প্রকৃতি সচেতন এবং তিনি মানুষের কথা সবসময় ভাবেন। তাঁকে ভুল বুঝানো হয়েছে। তাঁকে যথাযথ বার্তাটি দিতে পারলে তিনি নিশ্চয় আমাদের কথা শুনবেন।

এই আমলা বা রেলওয়ের কর্মকর্তা কর্মচারী যারা তাঁকে ভুল বুঝিয়েছেন আমরা তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হব। আমরা প্রতিজ্ঞা করছি এখানে এই হাসপাতাল হতে দেব না। প্রয়োজনে অনশন থেকে শুরু করে যা কিছু করার সবকিছু আমরা করব।

নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রাম আয়োজিত কর্মসূচিতে অংশ নেন আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাস আমিন, ডা. এ কিউ এম সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. গাজী সালেহ উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউনুচ, সাংবাদিক প্রদীপ দেওয়নজি, পরিবেশবিদ ড. ইদ্রিস আলী, মহানগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, পিপলস ভয়েস সভাপতি শরীফ চৌহান, ন্যাপ নেতা মিঠুল দাশগুপ্ত, আবৃত্তি শিল্পী অঞ্চল চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক হাসান আকবর, চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বাবু, শিল্পী আলাউদ্দিন তাহের, আওয়ামী লীগ নেতা হাসান মনসুর, যুব নেতা নূরুল আজিম রনি। বোধনের সাধারণ সম্পাদক প্রণব চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রামের পক্ষে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী। সন্ধ্যায় আলোক প্রজ্জ্বলনের সময় সঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচী চট্টগ্রামের শিল্পীরা। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন শেষে প্রতিবাদী সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান হয় চট্টগ্রাম যন্ত্র শিল্পী সংস্থার আয়োজনে। নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রামের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শুকলাল দাশ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ঋত্তিক নয়ন, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রমেন দাশগুপ্ত, মহররম হোসেন, আমিনুল ইসলাম মুন্না, পার্থ প্রতিম বিশ্বাস, রাহুল দত্ত, মিনহাজুল ইসলাম, সব্যসাচী টিটু, বিনয় ভৌমিক, সৌরভ দাশ।

আরএস/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর