chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

নাম পরিবর্তন করে জাল কাগজে জাহাজ কাটছিল কেএসআরএম

নিজস্ব প্রতিনিধি : দেশের শীর্ষস্থানীয় ইস্পাত নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান কেএসআরএমের বিরুদ্ধে নাম পরিবর্তন করে জাল কাগজের মাধ্যমে চোরাই করা অবৈধ জাহাজ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে নৌ পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী এলাকায় খাজা শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড থেকে জাহাজটি জব্দ করা হয়েছে।

বর্তমানে জাহাজটি তদারকি করতে চকিদার নিয়োগ করা হয়েছে। ভাটিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজিমউদ্দীন বলেন, নৌ পুলিশের প্রশাসক আমাদের জাহাজটি দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছে। বর্তমানে চকিদারের সহায়তায় জাহাজটি দেখভাল করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সিঙ্গাপুর এন্টারমিশনাল অরবিট সেন্টার ও নৌ পুলিশকে প্রতারণা মামলার তথ্য গোপন রেখে ভুল তথ্য দিয়ে কৌশলে কেএসআরএম এমটি মেগা নামক জাহাজটি কাটার অনুমতি নেয়। গত ২০ জুলাই আদালত জাহাজটি জব্দের আদেশ দিলেও, এনআরসি জারি করে নৌ বাণিজ্য দপ্তর। পরবর্তীতে সেটি বাতিল করা হলেও নিয়মভঙ্গ করে জাহাজটি কারখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নৌ বাণিজ্য দপ্তরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন অফিসার গিয়াস উদ্দিন চট্টলার খবরকে বলেন, আমরা শুনেছি জাহাজটির মামলা নিয়ে সমস্যা আছে। মালেয়াশিয়াতে একটি মামলা আছে। পরে তারা আমাদের কাছে এনআরসি আবেদন করে। আমরা সাধারণত ২৪ ঘণ্টার বেশি একটি জাহাজ আটকাতে পারি না। এরপর আমি বন্দর, নৌ, কাস্টমসসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী জাহাজটি জব্দের চিঠি পাঠাই।

জানা যায়, ১৯৯১ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় নির্মিত কুপ আইল্যান্ডে পতাকাবাহী এমটি মেগা জাহাজটির মালিক ছিলেন সিঙ্গাপুরের ডায়া মেরিন প্রাইভেট লিমিটেড।

কোম্পানিটি ৮২ লক্ষ মার্কিন ডলারে জাহাজটি বিক্রির জন্য মালেয়াশিয়ার কুয়ালালামপুর অরিন এনার্জি ইনভেস্টভেশনের সাথে চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী গত বছরের নভেম্বরে অরিন এনার্জি ডায়া মেরিনের একটি অ্যাকাউন্টে ২০ লক্ষ টাকা পাঠায়।

ওই বছরে মালয়েশিয়ার লিংকি বন্দরে জাহাজটি হস্তান্তরের কথা থাকলেও সেটি নিয়ে যাওয়ায় আফ্রিকার কোলাও বন্দরে। সেখানে নেভিগেশন বন্ধ করে দিয়ে জাহাজটির নাম পরিবর্তন করা হয়। এরপর অরিন এনার্জি দুটি পৃথক মামলা করেন। জুনে কেএসআরএম জাহাজটি কিনে চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়ে আসে।

বিষয়টি জানতে পেরে গত ৩ জুন নৌ বাণিজ্য দপ্তরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন বন্দরের শিপিং মাস্টারকে জাহাজটি গ্রহণের অনাপত্তির চিঠি পাঠান। চিঠিতে তিনি অবৈধ জাহাজ দেশে প্রবেশ করলে বহিবিশ্বে সুনাম ক্ষুণ্ণ হয় বলে তুলে ধরা হয়। একইসঙ্গে অবৈধ জাহাজ প্রবেশে চট্টগ্রাম বন্দরের সুনাম নষ্ট হওয়ার কথা জানান।

এ বিষয়ে কেএসআরএমের প্রধান নির্বাহী মেহেরুন করিম কোনো বক্তব্যে প্রদানে অপাগরতার কথা জানান।

চখ/আরকে/এএমএস

এই বিভাগের আরও খবর