chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

উপজেলাগুলোতে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল, উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য বিভাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। নগর ছাড়িয়ে উপজেলাগুলোতেও বেড়ে চলেছে মৃতের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হওয়া ৩৯৯ জনের সঙ্গে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। এর মধ্যে ছয় জন মারা গেছেন বিভিন্ন উপজেলায়।

বুধবার (৩০জুন) চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিববেদনে করোনার এমন ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠে।

এদিন ১ হাজার ৩৬৪টি নমুনা পরীক্ষায় নগরে ২৮৪ জন এবং বিভিন্ন উপজেলায় আক্রান্ত হন ১১৫ জন। গত কয়েকদিন ধরে সংক্রমণ ৩০০ থেকে ৪০০ শো এর মধ্যে ওঠানামা করছে। এর মধ্যে গত ২৪ জুন করোনা সংক্রমণ নগরকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল উপজেলাগুলোতে। ওইদিন ১৩৬ জনের মধ্যে ৬৯ জন ছিল বিভিন্ন উপজেলার।

সর্বশেষ সাতদিনের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২৯ জুন চট্টগ্রামে মারা যাওয়া তিন জনের মধ্যে দুজন, ২৮ ও ২৭ জুন মৃত্যুবরণ করা ৭ জনের মধ্যে ৬ জন, ২৬ জুন তিনজনের মধ্যে দুজন, ২৫ জুন ৫ জনের মধ্যে তিনজন, ২৪ জুন একজন করোনী মারা যাওয়া রোগী ছিলেন বিভিন্ন উপজেলার।

পরিস্থিতি সামাল দিতে গত ২২ জুন ফটিকছড়ি উপজেলায় লকডাউন ঘোষণা করে প্রশাসন। এরপরও থামছে না আক্রান্তের সংখ্যা। উপজেলার মধ্যে ফটিকছড়ির পরে সীতাকুণ্ড ও মিরসরাইয়ে আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক।

ফটিকছড়িতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২ ও সীতাকুণ্ডে ২৪ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হন। এছাড়া ২৯ জুন এই দুই উপজেলায় যথাক্রমে ২৮ ও ৩৩ জন রোগীর শরীরে করোনা ধরা পড়ে।

এদিকে উপজেলায় সংক্রমণের সঙ্গে দিন দিন মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য বিভাগ। এক্ষেত্রে জনসমাগের লাগাম টানতে বলছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া চট্টলার খবরকে বলেন, মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি নিসন্দেহে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। আমরা সব সময় বলে এসেছি অতি সংক্রামক এই ব্যাধিকে চাইলেই হঠাৎ করেই নির্মূল করা সম্ভব না।

‘পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এটি একেক রকমভাবে আচরণ করছে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। এখনও শুনতে পাচ্ছি বড়সর আকারে বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছে। ‘

তিনি বলেন, মানুষ দলভেদে হোটেল-রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন বিনোদন স্পটে যাচ্ছে। নিজ থেকে সচেতন না হলে এটিকে প্রতিরোধ করা সম্ভব না। গ্রামের মানুষকে সচেতন করতে উপজেলা প্রশাসনকে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান এই বিশেষজ্ঞ।

উপজেলাগুলোতে স্থানীয় প্রশাসনকে বেশ কিছু নির্দেশনার পাশাপাশি মানুষের সচেতনতা বাড়াতে মাইকিং করা হচ্ছে বলে জানান চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।

তিনি চট্টলার খবরকে বলেন, মানুষ সচেতন না হলে সংক্রমণ ও মৃত্যু কমানো সম্ভব হবে না। এ লক্ষ্যে আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে মাইকিং, অহেতুক ঘোরাফেরা না করা, মসজিদের ইমামদের সহায়তা চেয়ে বেশ কিছু নির্দেশনা পাঠিয়েছে। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। সচেতন হতে হবে, না হয় সংক্রমণ ও মৃত্যু কমানো যাবে না।

আরকে/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর