স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে উদাসীনতার পরিচয় দিচ্ছে মানুষ
নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, দেশে দিনের পর দিন করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা সংক্রমণ থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করার জন্য প্রতিদিনই প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করছেন।
‘করোনা চিকিৎসা থেকে শুরু করে যাবতীয় কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রী নিজেই মনিটরিং করছেন। লকডাউন, বিধিনিষেধসহ প্রয়োজনীয় নির্দেশনার মধ্য দিয়ে জণগনকে ঘরে রেখে করোনা সংক্রমণ কমাতে প্রাণপন চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী।’
কিন্তু বারবার নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হলেও জণগন মাস্ক পড়া কিংবা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছেন।
আজ রবিবার (২৭ জুন) সকালে দ্বিতীয় দিনের মতো নগরীর করোনা পরিস্থিতি জানতে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের কোভিড চিকিৎসা পরিদর্শন এবং কোভিড স্কোয়াডের সাথে মতবিনিময় করতে গিয়ে এসব কথা বলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
মাস্ক পরাকে সামাজিক আন্দোলন হিসেবে গড়ে তুলতে হবে বলে মন্তব্য করে সুজন আরো বলেন, শুধুমাত্র মাস্ক পড়া এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে পারলে আমরা করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে পারি।
তিনি বলেন, প্রতিদিন যে হারে করোনা রোগী বাড়ছে এতে করে চিকিৎসকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। এভাবে চলতে থাকলে রোগীর স্থান সংকুলান নিয়ে আমাদের কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।
করোনা সংক্রমণকে যারা এখনো গুরুত্ব দিচ্ছেনা তাদেরকে সতর্ক করে দিয়ে সুজন বলেন গতবছর আমরা করোনার ভয়াবহ রূপ দেখেছি।
চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে সারা নগরজুড়ে যে নৈরাজ্য চলছিল তার বিপরীতে করোনা রোগীদের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন মা ও শিশু হাসপাতাল। এ পর্যন্ত করোনার করাল থাবায় এই হাসপাতালের চারজন চিকিৎসক অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন। তারপরও আমাদের চিকিৎসকরা হাল ছাড়ার পাত্র নন। আমাদেরকেও তাই চিকিৎসকদের মর্ম উপলব্দি করে সচেতন হতে হবে।
তিনি করোনা আক্রান্ত রোগীদের সিট ভাড়া, পরীক্ষা এবং ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার অনুরোধ জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। তিনি আরো বলেন বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে কঠোর কড়াকড়ির কোন বিকল্প নেই।
তবে সারাদেশে একসাথে লকডাউন না দিয়ে যে সকল এলাকায় সংক্রমণের মাত্রা ১৫ শতাংশের উর্দ্ধে সে সকল এলাকায় কঠোর লকডাউন দিয়ে কম সংক্রমণকৃত এলাকাগুলোতে মাস্ক পরিধান করাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যায় কিনা তা বিবেচনা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানান।
তিনি মাস্ক পরিধানের বিষয়ে সরকারকে কঠোর হওয়ার আহবান জানিয়ে যারা মাস্ক পরিধান করবেন না তাদের এক হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক সপ্তাহ কোভিড হাসপাতালে স্বেচ্ছাশ্রমের আইন পাশ করার অনুরোধ জানান।
মতবিনিময় শেষে মা ও শিশু হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে যে সকল চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় মারা গিয়েছেন তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন, পরিচালক প্রশাসন ডা. নুরুল হক, উপ-পরিচালক মোশাররফ হোসেন, উপ-পরিচালক ডা. আশ্রাফুল করিম, নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছ, সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন, ডা. অলক নন্দি, ডা. শেফাতুল জাহান, ডা. সঞ্জয় বিশ্বাস, ডা. মেহেদী, ডা. তৌহিদ, ডা. রজত শংকর রায়, ডা. ফাহিম হাসান রেজা, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি এম ইমরান আহমেদ ইমু, ইব্রাহিম বাপ্পী প্রমূখ।
আরএস/এমআই