chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

একদিনে তিনবার গণধর্ষণের শিকার পোশাককর্মী, আটক ৬

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের অলংকার থেকে সীতাকুণ্ড হয়ে সবশেষে মিরসরাইয়ের সাহেরখালী এলাকার বেঁড়িবাধ। এ তিনটি স্থানে একই দিনে তিনবার গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২২ বছর বয়সী এক পোশাক কর্মী।

প্রথমে ধর্ষিতার পূর্ব পরিচিত এক বাসচালকের খপ্পরে পড়ে বাসেই গণধর্ষণের শিকার হন, দ্বিতীয়বার পৃথক অপর আরেকিটি বাসে উঠে এবং সবশেষে তার পরিচিত এক বন্ধু ও বন্ধুর সহকর্মীদের হাতেই গণধর্ষণের শিকার হন ওই পোশাককর্মী।

পৃথক গণধর্ষণের ঘটনাগুলো ঘটেছে গত ২৩ জুন সন্ধ্যা থেকে পরদিন ভোর চারটার মধ্যে। ঘটনার বিবরণ জানিয়ে ধর্ষিতা পুলিশের শরণাপন্ন হলে পুলিশ ঘটনাটি তদন্তে নামে।

অবশেষে গতকাল শুক্রবার (২৫ জুন) রাত ১০টা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত ৬ জনকে আটক করে মিরসরাই থানা পুলিশ। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের সাথে তাদের সম্পৃক্ততা থাকার কথা স্বীকার করে নেন বলে জানায় পুলিশ।

আটককৃতরা হলেন, মিরসরাই উপজেলার মধ্যম কুরুয়া এলাকার মো. জেবল হোসেনের ছেলে মো. সাগর (২২), মুরাদপুর এলাকার মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে রায়হান উদ্দিন রানা (২০), সীতাকুণ্ড উপজেলার মাহমুদাবাদ এলাকার মো. দুলালের ছেলে আশরাফুল ইসলাম (২৩), শিবপুর এলাকার মো. সালামত উল্লাহর ছেলে মো. ইসমাঈল (৩২),বাঁশবাড়িয়া এলাকার মো. ইয়াছিনের ছেলে শাহাদাৎ হোসেন (১৮) ও উত্তর ইদিলপুর এলাকার মো. নুর নবীর ছেলে মো. বেলাল হোসেন (২৩)।

একদিনে তিনবার গণধর্ষণের শিকার এক পোশাককর্মীর কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে ধর্ষণের সাথে সম্পৃক্ত ৬ জনকে আটক করার তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, গত ২৩ জুন একই দিনে তিনবার ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ওই পোশাককর্মী। ২৪ জুন দুপুরে সীতাকুণ্ড থানায় এসে এসব ঘটনায় লিখিত অভিযোগ করেন ওই ধর্ষিতা।

সর্বশেষ ঘটনাটি মিরসরাই থানা এলাকায় হওয়ায় সীতাকুণ্ড থানা অভিযোগটি মিরসরাই থানায় হস্তান্তর করে। শুক্রবার (২৫ জুন) রাত ১০টা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে আটক করা হয়। ধর্ষণের সাথে জড়িত অন্যদেরও শনাক্ত করে তাদের আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।

ধর্ষিতার দায়েরকৃত অভিযোগের বর্ণনা করতে গিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ধর্ষিতা ওই নারীর পূর্ব পরিচিত বাস চালক আশরাফুল ইসলাম (২৩) প্রকাশ আল আমিনের অনুরোধে ২৩ জুন সন্ধ্যায় সে নগরীর অলংকার যায়।

তখন ওই বাস চালক তার বাসে করে পোশাককর্মীকে অলংকার থেকে সীতাকুণ্ড নিয়ে যান। বাস থেকে সব যাত্রী নেমে যাওয়ার পর ওই পোশাককর্মীকে নিয়ে সীতাকুণ্ডের জুটমিল এলাকায় বাসটি থামায়। এরপর চালক আল আমিন ও হেলপার শাহাদাৎ মিলে ওই পোশাককর্মীকে বাসেই ধর্ষণ করে জুটমিল এলাকায় রেখে চলে যায়।

কিছুক্ষণ পর ওই পোশাককর্মী রায়হান উদ্দিন রানা নামে তার আর এক পরিচিত জনকে পুরো ঘটনাটি মোবাইলে খুলে বলেন। তখন রানা তাকে অন্য বাস ধরে সীতাকুণ্ড আসার কথা বলে। রাত সাড়ে ১১টায় সীতাকুণ্ড আসার জন্য আরেকটি বাসে উঠলে ওই বাসের চালক ইসমাইল ও তার সহকারী (অজ্ঞাত) মিলে আবারও তাকে ধর্ষণ করে সেখানেই ফেলে চলে যায়।

সবশেষে ঘটনাস্থলে হাজির হন রায়হান উদ্দিন রানা। তার বন্ধু সাগর ও বেলালসহ কয়েকজন মিলে ওই পোশাককর্মীকে সীতাকুণ্ড থেকে মিরসরাইয়ের সাহেরখালী এলাকার বেঁড়িবাধে নিয়ে যায়। তারা সবাই মিলে ওইদিন ভোররাতে পুনরায় ধর্ষণ করে পোশাকর্মীর কাছে থাকা নগদ ২ হাজার টাকা ও মোবাইল সেট নিয়ে পালিয়ে যায়।

সেখান থেকে অনেক কষ্টে পরদিন দুপুরে সীতাকুণ্ড থানায় এসে বিস্তারিত ঘটনার বর্ণনা দিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। তবে সবশেষ ঘটনাটি মিরসরাই থানা এলাকায় হওয়াতে মামলাটি মিরসরাই থানায় হস্তান্তর করে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ।

আরএস/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর