chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

‘মিস্টার বাংলাদেশ’ হাঁকাচ্ছেন ৩২ লাখ টাকা!

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাত ফুট দৈর্ঘ্য, উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চির বেশি। ওজন এক হাজার দুইশো পঞ্চাশ কেজি বা ৩২ মণ। সুঠাম দেহের অধিকারী কালছে বর্ণের দেশীয় হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টির দাম হাঁকা হয়েছে ৩২ লাখ টাকা। তুলতুলে চামড়ার চিকচিক করা গরুটির নাম রাখা হয়েছে ‘মিস্টার বাংলাদেশ’।

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সাত মাস আগে সারা এগ্রো নামে একটি খামার প্রতিষ্ঠান গরুটি পরিচর্যা শুরু করেন। প্রতিদিন ‘মিস্টার বাংলাদেশ’ কে এক ফলক দেখতে ছুটে আসেন নানান বয়সের মানুষ। অভিভাবকরা বিনোদনের জন্য নিয়ে আসছেন ঘরবন্দি শিশুদের। আগ্রহের বসে শিশুরা ঘুরে ঘুরে দেখছেন গরুটি, কখনও ডাকছেন নাম ধরে। কেউবা সেলফি তুলে পাঠাচ্ছেন প্রিয়জনদের।

খামারিরা জানায়, সাড়ে তিন বছর বয়সী এই গরুটিকে বঙ্গ ফিজিয়ান জাতের জাতের একটি ষাঁড়ের সিমেন ব্যবহার করে প্রাকৃতিক প্রজননের মাধ্যমে জন্ম দেওয়া হয়।জন্মের পর বাছুরটিকে সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে লালনপালন করা হয়। বয়সের সাথে এটিকে মোটা তাজা করা হয়। প্রয়োজনীয় পরিচর্যা আর চাহিদা অনুযায়ী খাবারের কারণে অল্প সময়ে গরুটির ওজন ও আকৃতি বাড়তে থাকে। হাতবদলে সাত মাস আগে ঢাকা থেকে নিয়ে আসা হয় সারা এগ্রো ফার্মের চট্টগ্রাম শাখায়।

'মিস্টার বাংলাদেশ' হাঁকাচ্ছেন ৩২ লাখ টাকা!
৩২ মণ ওজনের মিস্টার বাংলাদেশ এই গরুটির দাম হাঁকানো হয়েছে ৩২ লাখ টাকা। নগরীর কালুরঘাট সিএন্ডবি এলাকার সারা এগ্রো ফার্ম থেকে তোলা। আলোকচিত্রী এম ফয়সাল এলাহী

বর্তমানে এই ফার্মে বিভিন্ন আকৃতির তিনশো গরু রয়েছে। চাহিদা মোতাবেক ৬৫ হাজার থেকে বিভিন্ন দামে এখানে গরু বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে খাগড়াছড়ি, মানিকছড়ি, কুষ্টিয়া ছাড়াও পাকিস্তান ও ভারতের গরু বিভিন্ন জাতের গরু রয়েছে। এছাড়া ত্রেতাদের স্বার্থে অগ্রিম বুকিং এর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে ফার্মের পক্ষ থেকে। ১৮ জন শ্রমিক এখানে গরু নিয়োজিত রয়েছেন।

সাত মাস ধরে গরুটিকে নিবিড় পরিচর্যাকারী এগ্রো খামারের পরিচর্যাকারী গোলাম মোস্তফা চট্টলার খবরকে বলেন, প্রতিদিন শুকনো খাবারের মধ্যে গমের ভুসি, চিড়ার কুঁড়া, চালের কুঁড়া, ভুট্টা, ডালের গুঁড়া, ছোলা ও খুড়ের ভাত দেওয়া হয়। এছাড়্ দিনে দুই বার ২০ কেজি কাঁচা ঘাস খেতে দেওয়া হয়। আবহাওয়া গরম থাকলে তিনবার এবং ঠান্ডা থাকলে প্রতিদিন দুবার গোসল করা হয়। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ কেজি খাবারের প্রয়োজন হয়। শুরুর দিকে খাবার কম খেলেও, দিনে দিনে এর খাবারের চাহিদা বাড়ছে বলেও জানান তিনি।

গোলাম আরও বলেন, এ ধরনের গরু লালন-পালন কষ্টসাধ্য। বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হয়। অনেকে স্বল্প সময়ের মধ্যে গরু মোটা তাজা করতে বিভিন্ন ওষুধ ও ইনজেকশন পুশ করে থাকেন। কিন্তু এ ধরনের গরু সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাব লালন পালন করতে হয়।

তবে গরুটি বিক্রি নিয়ে হতাশার কথা জানিয়েছেন খামারের নির্বাহী পরিচালক আলিফ চৌধুরী। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বড় গরুর চাহিদা কমে গেছে। ক্রেতারা ঝুঁকছেন মাঝারি গরুর দিকে। এখন পর্যন্ত মাঝারি আকৃতির ৭৫টি গরু বিক্রি হয়েছে। গতকাল একজন ক্রেতা ১৯ লাখ টাকা বলেছেন। গরুটি ৩২ লাখ টাকার কোনো ক্রেতা পেলে তাকে উপহার হিসেবে একটি খাসি দিব। আর বিক্রি না হলে পরের বছরের জন্য রেখে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।

গরুটির এমন নামের নামকরণের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি বর্তমানে দেশে ফ্রিজিয়ান জাতের গরুর মধ্যে সবচেয়ে মধ্যে বড় আকৃতির গরু এটি। একটু আলাদা বিশেষত্ব দিতে গিয়ে এই নামকরণ দেওয়া।

আরকে/চখ

এই বিভাগের আরও খবর