চট্টগ্রামে ৬ ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পাহাড়ে উচ্ছেদ অভিযান শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে নগরীর বিভিন্ন পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের সরিয়ে দিতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে।
আজ সোমবার (১৪ জুন) সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে নগরীর বায়েজিদ লিংক রোডে এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের স্টাফ অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক।
তিনি বলেন, ৬ জন ম্যাজিস্ট্রেট ৩টি দলে ভাগ হয়ে অভিযান পরিচালনা করছে। সকাল সাড়ে ১০ টায় অভিযান শুরু হয় বায়েজিদ অংশ থেকে। লিংক রোডের কাট্টলী অংশে অভিযান পরিচালনা করছেন চান্দগাঁও সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মামনুন আহমেদ অনীক ও কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ ইনামুল হাসান।
এছাড়া লিংক রোডের হাটহাজারী অংশে অভিযান পরিচালনা করছেন হাটহাজারী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফ উল্যাহ ও পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) এহসান মুরাদ এবং লিংক রোডের সীতাকুণ্ড অংশে অভিযান পরিচালনা করছেন সীতাকুণ্ড উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রাশেদুল ইসলাম, সদর সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুমা জান্নাত।
পাহাড়ে উচ্ছেদের বিষয়ে পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল্লাহ নুরী বলেন, অভিযানে যেসব ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ স্থাপনা আছে সেগুলো উচ্ছেদ করা হবে। তবে কয়দিন ধরে এ উচ্ছেদ অভিযান চলবে তা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। অভিযানের সময় কিছু ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া হয়, তার ওপর নির্ভর করবে অভিযান কতদিন চলবে। তবে যেসব পাহাড়ে গড়ে ওঠা-বসতি নিয়ে মামলা রয়েছে, সেগুলোর উচ্ছেদ আপাতত বন্ধ থাকবে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ১৭টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে ৮৩৫টি পরিবার বসবাস করছে। বেশি ঝুঁকিপূর্ণভাবে ব্যক্তিমালিকানাধীন ১০টি পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা ৫৩১টি। সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মালিকানাধীন সাতটি পাহাড়ে অবৈধ বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা ৩০৪টি।
এগুলোর বাইরেও সিডিএর বায়েজিদ–ফৌজদারহাট লিংক রোড নির্মাণের সময় নতুন করে ১৬টি পাহাড় কাটা হয়। সেখানকার ৮ পাহাড়ে নতুন করে অবৈধ বসতি গড়ে উঠেছে। সোমবার প্রথম দিনের অভিযানে বায়েজিদ লিংক রোডের অবৈধভাবে তৈরি করা ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করা হবে।
তবে পরিবেশবিদরা বলছেন, চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী সংখ্যা প্রায় এক লাখ হবে।
২০০৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামে পাহাড়ধসে দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে পাহাড়ধসে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় ২০০৭ সালে। ওই বছরের ১১ জুন টানা বর্ষণের ফলে চট্টগ্রামে পাহাড়ধসে ১২৭ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৭ সালে মারা যান ৩০ জন।
এসএএস/নচ