chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

ব্যাটসম্যানদের দাপটে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টেস্ট ড্র

খেলা ডেস্ক: কোনো ফলাফল ছাড়াই শেষ হয়েছে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটি। ক্যান্ডির পাল্লেকেলের ম্যাচটিতে দাপট দেখিয়েছেন ব্যাটসম্যানরা।

পাল্লেকেলের উইকেট ছিল বোলারদের বধ্যভূমি। কারণ প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ৭ উইকেট হারিয়ে ৫৪১ রানে ইনিংস ঘোষণা করার জবাব দিতে নেমে শ্রীলঙ্কাও ৮ উইকেট হারিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে ৬৪৮ রানে। ১০৭ রানের লিড।

চতুর্থ দিনই বোঝা হয়ে গিয়েছিল, ম্যাচটা নিষ্প্রাণ ড্র’য়ের দিকেই যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত তাই হলো। আজ টেস্টের পঞ্চম দিন দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ ২ উইকেটে ১০০ রান তুলে চা বিরতিতে যাওয়ার পর আর মাঠে নামা হয়নি।

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে এ নিয়ে ৬ষ্ঠ টেস্ট খেললো বাংলাদেশ। আগের ৫ টেস্টেই পরাজয়। এই প্রথম একটি টেস্ট ড্র করে চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকায় নাম তুলতে পারলো টাইগাররা। বাংলাদেশের নামের পাশে শোভা পাচ্ছে ২০ পয়েন্ট। বাংলাদেশের উপরে থাকা শ্রীলঙ্কার পয়েন্ট ১৪০।

পাল্লেকেলে ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে টস জিতে বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই সাইফ হাসানের উইকেট। কোনো রান না করেই ফিরে যান সাইফ। সকালের সূর্য সব সময় দিনের সঠিক বার্তা দেয় না, সেটা প্রমাণ করতেই যেন ব্যাট হাতে দৃঢ়তার পাহাড় রচনা করলেন তামিম ইকবাল এবং নাজমুল হোসেন শান্ত।

দু’জনের ১৪৪ রানের জুটি বাংলাদেশকে বড় স্কোরের পথই বাতলে দেয়। যদিও নার্ভাস নাইনটিজের শিকার হলেন অভিজ্ঞ তামিম ইকবাল। ৯০ রান করে ফিরে যান তিনি। এরপর অধিনায়ক মুমিনুল এবং নাজমুল হোসেন শান্ত হাল ধরেন। তাদের ব্যাটে উঠলো ২৪২ রানের বিশাল জুটি।

এরই মধ্যে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকালেন শান্ত। বিদেশের মাটিতে প্রথম সেঞ্চুরি করলেন মুমিনুল হকও। ৩৯৪ রানের মাথায় গিয়ে আউট হন শান্ত। ক্যারিয়ার সেরা ১৬৩ রান করে। মুমিনুল আউট হলেন ১২৭ রান করে। শেষ দিকে এসে হাফ সেঞ্চুরি করলেন মুশফিকুর রহীম এবং লিটন দাসও।

৭ উইকেট হারিয়ে ৫৪১ রান করে ইনিংস ঘোষণা করেন অধিনায়ক মুমিনুল। জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশের চেয়ে যেন আরেক কাঠি সরেস শ্রীলঙ্কা। শুরুই হয়েছিল তাদের ১১৪ রানের জুটি দিয়ে। ৫৮ রান করে আউট হন লাহিরু থিরিমানে। এরপর ওসাদা ফার্নান্দো ২০ রানে এবং অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ ২৫ রানে আউট হলে কিছুটা আশার সঞ্চার হয় বাংলাদেশ শিবিরে।

কিন্তু চতুর্থদিন পুরোটা ব্যাট করলেন দিমুথ করুনারত্নে এবং ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। সারা দিনে একটিও উইকেট ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ। এ দু’জন শ্রীলঙ্কাকে ৫১২ রানে গিয়ে চতুর্থ দিন শেষ করে। এরই মধ্যে করুনারত্নে পেয়ে গেলেন ডাবল সেঞ্চুরির দেখা।

চতুর্থ দিন তিনি ছিলেন ২৩৪ রানে অপরাজিত। ধনঞ্জয়া ডি সিলভা অপরাজিত ছিলেন ১৫৪ রানে অপরাজিত। পঞ্চম দিনে এসে করুনারত্নে যোগ করেন আর মাত্র ১০ রান। ডি সিলভা যোগ করেন ১২ রান। অর্থাৎ ২৪৪ রানে আউট হন অধিনায়ক করুনারত্নে। উইকেটটি নেন তাসকিন আহমেদ।

১৬৬ রানে ধনঞ্জয়াকে বোল্ড করেন সেই তাসকিনই। দুই সেঞ্চুরিয়ানকে হারানোর পর দ্রুত কয়েকটি উইকেট পড়ে লঙ্কানদের। তবুও ওয়ানিদু হাসারাঙ্গা ৪৩, নিরোশান ডিকভেলা ৩১ রান করেন। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ৬৪৮ রান করার পর, ১০৭ রানের লিড নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা।

তাসকিন আহমেদ নেন ৩ উইকেট। তাইজুল ইসলাম নেন ২টি। ১টি করে উইকেট নেন এবাদত হোসেন এবং মেহেদী হাসান মিরাজ।

দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে আবারও ব্যর্থতার পরিচয় দেন সাইফ হাসান। মাত্র ১ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। নাজমুল হোসেন শান্ত আউট হলেন শূন্য রান করে। তবে দৃঢ়তার পরিচয় দেন তামিম ইকবাল। তিনি অপরাজিত থাকেন ৭৪ রান করে। ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন মুমিনুল হক।

ম্যাচসেরা নির্বাচিত হয়েছেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে।

এমআই/চখ

এই বিভাগের আরও খবর