মঈন আলিকে নিয়ে তসলিমা নাসরিনের বর্ণবাদী মন্তব্য, সতীর্থদের ক্ষোভ
খেলা ডেস্ক: ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএলে) এবার চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলবেন ইংল্যান্ড জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার মঈন আলি।
ধর্মভীরু এই ক্রিকেটার কখনোই অ্যালকোহল জাতীয় পানীয়ের প্রচারণায় নিজেকে জড়াতে চান না। তাই জার্সিতে স্পন্সর হিসেবে দলের সবাই ‘মদে’র ব্র্যান্ডের লোগো ব্যবহার করলেও মঈন অনুরোধ করে নিজের জার্সি থেকে লোগো সরিয়ে নেন।
এবারও তেমন অনুরোধই করেছেন চেন্নাই সুপার কিংস ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছে। ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তৃপক্ষ তার ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে লোগো সরিয়ে দিতে রাজি হয়েছে বলেও ভারতীয় গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে।
কিন্তু বাংলাদেশ থেকে ভারতে নির্বাসিত তসলিমা নাসরিনের বিষয়টা নিয়ে ‘বড় মাথাব্যথা’। ইসলাম-বিদ্বেষী এই লেখিকা হুট করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টুইট করে বসেন, ‘যদি মঈন আলি ক্রিকেটে না আসতো, তবে নিশ্চিত সে সিরিয়ায় গিয়ে আইএসের সঙ্গে যোগ দিতো।’
তার এই টুইট নিয়ে ইংলিশ ক্রিকেটে চলছে তোলপাড়। জোফরা আর্চার, বেন ডাকেট, স্যাম বিলিংস থেকে শুরু করে ইংলিশ ক্রিকেটাররা ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন তসলিমার ওপর। তারা টুইটারে ক্ষোভ ঢেলে দিচ্ছেন তসলিমার এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে।
সবার আগে তসলিমার এই টুইটের জবাব দেন ইংলিশ পেসার সাকিব মাহমুদ। সতীর্থকে অবমাননা করাটা মেনেই নিতে পারছেন না তিনি। সাকিব লিখেছেন, ‘বিশ্বাসই হচ্ছে না এই বিষয়টা। বিরক্তিকর টুইট, বিরক্তিকর এক ব্যক্তি।’
মঈন আলির আরেক সতীর্থ স্যাম বিলিংসও মেনে নিতে পারছেন না বিষয়টা। বরং তিনি সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন, তসলিমার অ্যাকাউন্টকে রিপোর্ট করার জন্য (যাতে টুইটার কর্তৃপক্ষ এটা মুছে দেয়)। তিনি লিখেছেন, ‘প্লিজ এভরিওয়ান রিপোর্ট দিস অ্যাকাউন্ট।’
ইংলিশ ক্রিকেটার বেন ডাকেটও এক হাত নিলেন তসলিমা নাসরিনের। তিনি লিখেন, ‘এই অ্যাপটিতেই (এই ব্যক্তির সঙ্গে) সমস্যা। যে কারণে এমন লোকরা বাজে কথা বলতে সাহস পায়। খুবই বিরক্তিকর। এটা অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। প্লিস সবাই এই অ্যাকাউন্টে রিপোর্ট করুন।’
সবচেয়ে বেশি ক্ষেপেছেন ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপজয়ী পেসার জোফরা আর্চার। সতীর্থের প্রতি এমন অপবাদ মেনে নিতে পারেননি তিনি। ফিরতি টুইটে তসলিমাকে পাগল ইঙ্গিত করে লিখেন, ‘তুমি কি ঠিক আছো? আমার তো মনে হয় না তুমি ঠিক আছো।’
তসলিমা অবশ্য পরে তার টুইটের স্বপক্ষে যুক্তি দাঁড় করান। দাবি করেন, মজার ছলেই এমন টুইট করেছেন তিনি। কিন্তু আর্চার এটাকে মজা মানছেন না কোনোভাবেই। ধর্মভীরু একজন সতীর্থকে হেয় করে তসলিমার টুইটটি মুছে ফেলারও আহ্বান জানান ক্যারিবীয় বংশোদ্ভূত ইংলিশ পেসার।
তসলিমা পরের টুইটে লিখেছেন, ‘সমালোচকরা ভালো করেই জানে, মঈনকে নিয়ে করা আমার টুইটটি ছিল ব্যাঙ্গাত্মক। কিন্তু মানুষ এটা দিয়ে আমাকে অপমান করার চেষ্টা করছে। কারণ, আমি সব সময় চাই মুসলিম সোসাইটিকে সেকুরালাইজ করতে। আমি সব সময়ই ইসলামি ধর্মান্ধতার বিরোধী। মানবসভ্যতায় সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি হচ্ছে যে নারীবাদী বামপন্থিরাও আজকাল নারীবিদ্বেষী ইসলামিস্টদের সমর্থন করে।’
এটারও জবাব দিয়েছেন জোফরা আর্চার। তিনি লিখেন, ‘ব্যাঙ্গাত্মক (টুইট)! কেউ হাসলো না, এমনকি আপনি নিজেও না (তাহলে ব্যাঙ্গাত্মক হয় কিভাবে?) এখন আপনি যেটা করতে পারেন, আপনার টুইটটি ডিলিট করে দেয়া।’
এমআই/চখ