chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চকরিয়ায় গাছে বেঁধে গৃহবধূ নির্যাতন, গ্রেফতার ১

নিজস্ব প্রতিবেদক: কক্সবাজারের চকরিয়ায় সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় গৃহবধূকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখ করে ৬ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নারী।

বুধবার রাতে নির্যাতনের শিকার নুর আয়শা বেগম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। ওই মামলার অভিযুক্ত মূল আসামির পিতা ও এজাহারনামীয় দুই নম্বর আসামি জহির আহমদকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তাছাড়া তিনি বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) সকাল ১০টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এ সময় তিনি ভিকটিম ও তার পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলেন এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারপূর্বক শাস্তির আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান।

পরিদর্শনকালে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া-পেকুয়া সার্কেল) তফিকুল আলম ও চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের সাথে ছিলেন।

এদিকে গাছের সাথে বেঁধে মারধর, শারীরিক নির্যাতন, শ্লীলতাহানি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের ঘটনায় থানায় মামলা হওয়ার তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় জহির আহমদ নামে একজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার দুপুরে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে বিজ্ঞ আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, মুলহোতা শওকত ওসমান পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম অভিযান চালাচ্ছে।

এজাহারনামীয় অন্য আসামিরা হলেন- চকরিয়া উপজেলা বরইতলী ইউনিয়নের হাফানিয়াকাটার মোরাপাড়ার সুদি শওকত ওসমানের মা সাফিয়া খাতুন (৫০), তার স্ত্রী শাহিনা আক্তার (২৩)সহ অজ্ঞাত আরো দুইজন।

বুধবার ওই নারীকে নির্যাতনের একটি ভিডিওচিত্র ফেইসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ঘটনাটি জানাজানি হয়। তবে ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার বিকাল পৌণে ৩ টায় চকরিয়া উপজেলার বরইতলি ইউনিয়নের হাফালিয়া কাটা (মোড়াপাড়া) এলাকায়।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, অভিযুক্ত শওকত ওসমান একটি গাছের সঙ্গে শাড়ির আঁচল দিয়ে বেঁধে রাখেন ওই নারীকে। এসময় ভুক্তভোগী তার বাঁধন খুলে দিতে বলে। কিন্তু, অভিযুক্ত ব্যক্তি খুলে না দিয়ে কিল-ঘুষি মারতে থাকে তাকে।

এক পর্যায়ে ওই নারীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হয় এবং চুলের মুটি ধরে টান মারতে থাকেন। এছাড়াও, চুলের মুঠি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। স্থানীয় কয়েকজন নারী ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করতে গেলে তাদেরও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়।

জানা যায়, কয়েক মাস পূর্বে নুর আয়েশা তার স্বামীর চিকিৎসার জন্য শওকত ওসমানের কাছ থেকে সুদের ওপর চার হাজার টাকা ধার নেয়। পরবর্তীতে নুর আয়েশা সুদ ও আসলসহ আট হাজার টাকা পরিশোধ করেন শওকত ওসমানকে।

মঙ্গলবার দুপুরের শওকত ওসমান আরো দুই হাজার টাকা দাবি করেন নুর আয়েশার কাছ থেকে। তিনি (নুর আয়েশা) ওই টাকা বৃহস্পতিবার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা মানতে রাজি হয়নি শওকত ওসমান।

এ নিয়ে দুইজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে শওকত ওসমান গৃহবধূ নুর আয়েশাকে একটি গাছের সঙ্গে শাড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর, শারীরিক নির্যাতন ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।

এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ কোথাও অভিযোগ না দেয়ায় বিষয়টি গোপন থাকে। তবে বুধবার গৃহবধূকে গাছের সাথে বেঁধে শারিরীক নির্যাতনের ভিডিও চিত্রটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়লে টনক নড়ে প্রশাসনের।

আরএস/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর