chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রামে রমজানের আগেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ক্রেতাদের নাভিশ্বাস

ইফতেখার নিলয় : সামনে আসছে রমজান মাস। তার আগেই চট্টগ্রামে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে গরুর মাংস, মুরগি, চাল, তেলসহ সব ভোগ্যপণ্যের দাম। দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতিতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ ও মধ্যবিত্তরা।

শুক্রবার  (১২ মার্চ) সপ্তাহের শেষদিন নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে গত সপ্তাহের তুলনায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামে ব্যাপক তারতম্য দেখা গেছে। তবে দাম কমার কোনো চিত্র নজরে আসেনি।

মুরগির ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ফার্ম, দেশী, সোনালী ও লেয়ার মুরগির দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি আগের তুলনায় আরও ২০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে ফার্মের মুরগি ১৬৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ২২০ টাকা, সোনালী ৩৫০ টাকা এবং দেশী মুরগির দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮০ টাকা।

সবজির বাজারে শসা ও গাজরের কেজি বর্তমানে ৩০ টাকা। যা আগের তুলনায় বেড়েছে ১০ টাকা। লালশাক, পুঁইশাকের দামও প্রতি আঁটিতে বেড়েছে ৩-৪ টাকা। ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন আগামী সপ্তাহে তা আরো বাড়বে। তবে কিছুটা অপরিবর্তিত রয়েছে আলুর দাম।

সকল প্রজাতির মাছের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। তেলাপিয়া, বিগহেড, পাঙ্গাস মাছেও কেজি প্রতি দাম বেড়েছে দশ টাকা। যে সকল মাছ আগে ১২০ টাকা কেজিতে পাওয়া যেতো তা বর্তমানে ১৩০ টাকায় কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

ব্যতিক্রম নয় গরুর মাংস ও চালের দোকানের চিত্রও। গরুর মাংস আগের তুলনায় পঞ্চাশ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে। রমজান মাসে মাংসের চাহিদা বাড়তি থাকায় বেড়েছে দাম। চালের দামও বেড়েছে গত সপ্তাহের তুলনায়। ৫০-৬০ কেজি দরে বিক্রি হওয়া চাল বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬৫ টাকায়। তেলের দাম গত দুই মাস আগেও বর্তমানের চেয়ে ২০-২৫ টাকা কম ছিল বলে জানান ব্যবসায়ী আরিফ।

বাজারের ক্রেতা সুমন চট্টলার খবরকে বলেন, ‘রোযা আসার একমাস পূর্বেই যেভাবে দাম বেড়ে যাচ্ছে, রোযা ও ঈদের মৌসুমে একসাথে দাম বাড়লে সবকিছুই চলে যাবে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার নাগালের বাইরে। মানুষের আয়ের সাথে সামঞ্জস্য নেই জিনিসপত্রের দামের।’

এ ব্যাপারে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব)ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন চট্টলার খবরকে বলেন, ‘এবার রমজান আসার আগে থেকেই দাম বেড়ে গেছে সবকিছুর। গত ৩-৪ মাস ধরেই চালের দাম বেশি, সরকার চালের শুল্ক কমালেও দাম কমেনি। ইতোমধ্যেই বাণিজ্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ব্যাপারটি জানালেও কোনো সাড়া পাইনি।’

একজন ক্রেতা ১০ কেজি চাল কেনার প্রস্তুতি নিয়ে বাজারে আসলেও দাম বৃদ্ধির কারণে তার তুলনায় কয়েক কেজি কম নিয়ে তাকে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। সকালে একদাম ও বিকেলে আরেক দামের অভিযোগও করেন ক্রেতারা।

বাজার তদারকির ব্যাপারে ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুক বলেন, ‘আগামী সপ্তাহেই এই সংক্রান্ত মিটিং হবে। তাছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। পুরো রমজান মাসজুড়েও দ্রব্যমূল্যর দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত কাজ করে যাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত।’

রমজান আসার আগেই প্রতি সপ্তাহে এভাবে দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ নিম্ন আয়ের মানুষ ও মধ্যবিত্তরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজার তদারকি না করার কারণে দ্রব্যমূল্য দিন দিন বাড়ছে বলে দাবি তাদের। এসময় প্রশাসনকে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করার আহ্বান জানান তারা।

ইনি/চখ

এই বিভাগের আরও খবর