chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

লালদিয়ার চরের বাসিন্দারা স্বেচ্ছায় চলে যাচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : নগরীর পতেঙ্গার লালদিয়ার চরে উচ্ছেদ অভিযান ঘোষণার পর বাসিন্দারা স্বেচ্ছায় নিজেদের ঘর-বাড়ি ভেঙে চলে যাচ্ছেন।

সোমবার (১ মার্চ) সকালে চর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নিজেদের সহায় সম্বল যা কিছু ছিল তা ট্রাক ও ভ্যানে করে নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন চরের বাসিন্দারা।

উচ্চ আদালতের নির্দেশে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ লালদিয়ার চরে আজ (সোমবার) সকাল থেকে উচ্ছেদ শুরু করার ঘোষণা দেয়। মূলত ঘোষণার পরপরই চরের বাসিন্দাদের ঘর-বাড়ি ভেঙে জিনিসপত্র নিয়ে অন্যত্র চলে যেতে দেখা যায়।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, লালদিয়ার চরের ৫২ একর ভূমিতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। এটি বন্দরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় উচ্ছেদ অভিযান বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। বন্দর সূত্র জানিয়েছে, ৮ মার্চের মধ্যে উচ্ছেদ অভিযানের বিস্তারিত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করতে হবে। তাই আজ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

সোমবার সকালে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ শাহজাহান সাংবাদিকদের বলেন, ‘লালদিয়ার চরের বাসিন্দারা স্বেচ্ছায় চলে যাচ্ছে।  উদ্ধার করা স্থানে আজই আমরা বেড়া দিয়ে দেব। যাতে আবার কেউ এসে জায়গা দখল নিতে না পারে। বন্দরের জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছিল তারা। ৯০ শতাংশ লোক স্বেচ্ছায় চলে গেছে। ১০ শতাংশ লোক আছে, তারাও নিজেরা চলে যাচ্ছে। আদালতের রায় বাস্তবায়ন করার জন্য আমাদের এই অভিযান।  কাউকে বল প্রয়োগ করে উচ্ছেদ করতে হয়নি।’

তিনি জানান, উচ্ছেদ অভিযানে ছয়জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে প্রায় দেড় হাজার আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।লাল

এদিকে, লালদিয়ার চরে উচ্ছেদ কার্যক্রমের জন্য সকাল থেকে কর্ণফুলী সংলগ্ন বিমানবন্দর সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিকল্প সড়কে বিমানবন্দরে যাওয়ার জন্য বন্দরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

জরিপ অনুযায়ী, লালদিয়ার চরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আদালতের নির্দেশনা দুই মাসের মধ্যে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ১৭ ফেব্রুয়ারি বন্দর কর্তৃপক্ষ পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সব ‘অবৈধ দখলদারকে’অবিলম্বে ওই জায়গা ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করে। এছাড়াও বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।

২৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে এসে নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী লালদিয়ার চরে উচ্ছেদে অনড় অবস্থানের কথা জানান। বলেন, সেখানে পুনর্বাসনের মতো কেউ নেই। লালদিয়ার চরে জমি ‘দখলে রেখে’যারা আর্থিক ‘ফায়দা লুটেছে’তাদের তালিকা করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। এর পরই বাসিন্দাদের নিজ উদ্যোগে লালদিয়ার চর ছাড়তে দেখা গেছে।

স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, লালদিয়ার চরে ২৩শ পরিবারে ১৪ হাজারের মতো বাসিন্দা রয়েছে। ঘরবাড়ি ছাড়াও মসজিদ, মাদরাসা, কবরস্থান, সাইক্লোন শেল্টারসহ বিভিন্ন স্থাপনা রয়েছে।

এসএএস/নচ

এই বিভাগের আরও খবর