মিরসরাই পৌর নির্বাচন : সংঘাতের আশঙ্কায় ভোটে অনীহা জনসাধারণের
নিজস্ব প্রতিবেদক: পোহালেই বহুল কাঙ্খিত পৌর নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হবে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার দুই পৌরসভায়।
ভোটকে কেন্দ্র করে দুই পৌরসাভার দুই ধরনের ইমেজ বিরাজ করছে। মিরসরাই সদর পৌরসভায় মেয়র ইলেকশান এককভাবে সম্পন্ন হওয়ায় শুধু কাউন্সিলরদের মাঝেই হবে ভোটযুদ্ধ।
কাউন্সিলর প্রতিযোগিতায় আওয়ামী লীগ ব্যাতীত অন্য কোন দলীয় প্রার্থীর প্রার্থিতা না থাকায় আওয়ামী প্রার্থিরাই নিজেদের একে অপরের প্রতিদ্ধন্ধী হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
বিএনপির কোন প্রার্থী না থাকায় বিএনপির নেতা কর্মী, সমর্থক ও সাধারণ ভোটাররা নিজেদের ভোট প্রয়োগ থেকে বিরত রাখবে বলে নিশ্চিত করেছেন দলীয় দ্বায়িত্বশীলরা।
ভোটের পরিবেশ ও ভোটের মূল্যায়ন নিয়ে শঙ্কায় থাকায় বেশির ভাগ সাধারণ ভোটাররাও ভোট প্রয়োগে বিরত থাকার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে।
অন্যদিকে বারইয়ারহাট পৌরসভা নির্বাচকে কেন্দ্র করে আতঙ্ক বিরাজ করছে পুরো পৌরসভা জুড়ে। এখানে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন বিএনপি ও আওয়ামী লীগ থেকে দুই প্রভাবশালী প্রার্থী।
নিজ দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে উপজেলার সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে ভয়ে আতঙ্কে নিজ ভোট প্রয়োগেও শঙ্কিত প্রতি পক্ষ বিএনপি প্রার্থী দিদারুল আলম মিয়াজি।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দেয়া প্রার্থীদের অভিযোগ থেকে জানা গেছে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উভয় পৌরসভার ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বহিরাগতরা অবস্থান নিয়েছে।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রচার প্রচারণায় বাধা ও ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকটি ছোটখাটো হামলা পালটা পালটি হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
পৌরসদরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের উটপাখি প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. নিজাম উদ্দিন অভিযোগ করেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ইতোমধ্যে বহিরাগত লোকজন এনে নিজের নির্বাচনী প্রচারণার কাজে লাগাচ্ছেন। ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন।
ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের বিষয়ে মিরসরাই থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, ‘মিরসরাই পৌরসভা নির্বাচনে ৩টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূণ। এখানে ৯টি ওয়ার্ড ও ৩টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৪২ জন প্রার্থী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। বহিরাগতদের আগমন থামাতে আমরা ইতোমধ্যে উদ্যোগ নিয়েছি।
বারইয়ারহাট পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিম খোকন ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী দিদারুল আলম মিয়াজী।
এখানে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর প্রচার প্রচারণা বলতে কিছু পোষ্টার চোখে পড়লেও প্রকাশ্যে গণসংযোগ করতে দেখা যায়নি। তবে এখানকার ৯ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ৩ ওয়ার্ডে ৬১জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে।
ধারণা করা হচ্ছে এখানকার কিছু কিছু কেন্দ্রে কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থকরা গোলযোগ সৃষ্টি করতে পারে। তবে ইতোমধ্যে নির্বাচনে সহিংসতা এড়াতে মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগ নিজেদের দলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে সভা ডেকে বহিরাগতদের না আনতে কাউন্সিলর প্রার্থীদের সতর্ক করে দেন।
জোরারগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘বারইয়ারহাট পৌরসভা নির্বাচনে আমরা ঝুঁকিপূর্ণ না বলে গুরুত্বপূর্ণ ও সাধারণ তালিকায় কেন্দ্রগুলোকে অন্তর্ভূক্ত করেছি।
এখানকার ২,৩,৪,৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড গুরুত্বপূর্ণ এবং ১,৭,৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড সাধারণ তালিকায় আন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। বহিরাগতদের দমনের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান থাকবে কঠোর।’
এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে বাড়তি নিরাপত্তার বিষয়ে মিরসরাই পৌরসভা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে বাড়তি নিরাপত্তা থাকবে। পাশাপাশি আমি একটি বিষয় নিশ্চিত করতে চাই এখানে সম্পূর্ণ সুষ্ঠ ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা।
চখ/রাজীব/এমআই