chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

পুনর্বাসন ছাড়া লালদিয়ার চরবাসীকে উচ্ছেদ অমানবিক: সুজন

ডেস্ক নিউজ: পুনর্বাসন ছাড়া লালদিয়ার চরবাসীকে উচ্ছেদ করা অমানবিক বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিদায়ী প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন

আজ মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টায় তাঁর উত্তর কাট্টলীস্থ বাসভবনে জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের জরুরি সভায় প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এসময় তিনি বলেন, আমরা হাইকোর্টের রায়কে অবশ্যই সম্মান করি। আইন আদালত সবকিছুই কিন্তু মানবতার উর্দ্ধে। কোন প্রকার পূর্ব ঘোষণা ছাড়া মাত্র হাতে গোনা কয়েকদিনের সময় দিয়ে প্রায় ১৪ হাজার অধিবাসীকে পুনর্বাসন ছাড়া ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করা সম্পূর্ণ অমানবিক।

আমরা এরকম অমানবিক কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন জানাই। আমরা ইতিমধ্যে খবর নিয়ে জেনেছি যে লালদিয়ার চরে যারা বসবাস করে তারা সবাই স্থানীয়।

এখানে স্কুল আছে, আছে মসজিদ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্টান সমূহ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা পরবর্তী দেশ পূনর্গঠন কাজে বিমান বাহিনীর ঘাঁটি সম্প্রসারণ কালে লালদিয়ার চরবাসী এখানে এসে বসতি স্থাপন করে।

দীর্ঘ এতো বছর তারা এখানে বসবাস করলেও বর্তমানে তাদেরকে এলাকাটি ছেড়ে চলে যেতে হবে যা নিদারুন অমানবিক।

তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন চট্টগ্রামের আদি বাসিন্দাদের জায়গা জমি বিভিন্ন সংস্থার উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য হুকুম দখল কিংবা উচ্ছেদ করে বছরের পর বছর অব্যবহৃত রেখে সেসব জমি রাষ্ট্রের কাজে ব্যবহার না করে পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যাক্তি কিংবা প্রতিষ্টানকে অন্যায়ভাবে লীজ প্রদান করা হয়েছে।

ইতিপূর্বে সেরকম অনেক নজির চট্টগ্রামবাসীর সামনে রয়েছে। এর আগে ২০০৫ সালেও লালদিয়াচরের একাংশকে ঠিক একই ভাবে উচ্ছেদ করে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের নিকট লীজ প্রদান করা হয়েছে।

বর্তমানে সেখানে একটি বেসরকারি অফ ডকইয়ার্ড প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ঐ ইয়ার্ডের কারণে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের যাত্রীদের নিরাপদ যাতায়াত প্রতিনিয়তই বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রায়শই যানজটের কারণে বিমানযাত্রীরা নির্ধারিত ফ্লাইট মিস করছে। এতে করে একদিকে যাত্রীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে অন্যদিকে বিদেশী যাত্রীদের নিকট দেশের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে।

তাছাড়া দেশের প্রধানতম সমুদ্র বন্দরের মোহনায় এরকম একটি বেসরকারি অফ ডকইয়ার্ডের কারণে যে কোন সময় বন্দরের স্বাভাবিক চলাচল হুমকির মুখে পড়তে পারে।

সদ্য বিদায়ী প্রশাসক সুজন আরো বলেন আমরা আশংকা প্রকাশ করছি যে লালদিয়ার চরবাসীকে উচ্ছেদ করে হয়তো সেসব জায়গাও কোন বেসরকারি প্রতিষ্টানের নিকট লিজ দেওয়া হতে পারে।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন যদি লালদিয়ার চরবাসীকে বন্দর সম্প্রসারণের জন্য উচ্ছেদ করা হয়ে থাকে তাহলে এর আশেপাশে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্টান কিভাবে বীরদর্পে খুঁটি গেড়ে দাড়িয়ে থাকে? তাদের এ খুঁটির উৎস কোথায় তা চট্টগ্রামবাসী আজ জানতে চায়।

তিনি বলেন উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ কিংবা পুনর্বাসন ছাড়া লালদিয়ার চরবাসীকে উচ্ছেদ করার খবরে চট্টগ্রামবাসীর হৃদয়ে আজ রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছে। চট্টগ্রামবাসী কোনভাবেই এ ধরণের উচ্ছেদ মেনে নিবে না।

নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব হাজী মোঃ হোসেন এর সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আব্দুর রহমান মিয়া, সাইদুর রহমান চৌধুরী, নিজাম উদ্দিন, মোরশেদ আলম, জাহেদ আহমদ চৌধুরী, শেখ মামুনুর রশীদ, জাহাঙ্গীর আলম, ডা. অঞ্জন কুমার দাশ, অনির্বাণ দাশ বাবু, সমীর মহাজন লিটন, সাইফুল্লাহ আনছারী, মো. ওয়াসিম, জমির উদ্দিন মাসুদ, রকিবুল আলম সাজ্জী, রাজীব হাসান রাজন, মনিরুল হক মুন্না, সালাউদ্দিন জিকু, কামরুল হাসান রানা প্রমুখ।

আরএস/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর