chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মহান শহিদ দিবস  ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২১ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

কর্মসূচির মধ্যে ছিল ২১ ফেব্রুয়ারি রবিবার রাত ১২টা ১ মিনিটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন, সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারী-আধা সরকারী-স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারী ভবনে  জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা, সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে শুদ্ধ বানান, সুন্দর হাতের লেখা ও কুইজ প্রতিযোগিতা, সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম জেলা শিশু একাডেমিতে সুন্দর হাতের লেখা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

সুবিধাজনক সময়ে ভাষা শহিদদের রূহের মাগফেরাত কামনায় মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডায় দোয়া, মিলাদ, প্রার্থনার পাশাপাশি শহিদ মিনার প্রাঙ্গণ ও আউটার স্টেডিয়াম এলাকাসহ বিভিন্ন উন্মুক্তস্থানে ভাষা আন্দোলন সংশ্লিষ্ট সংবাদ, আলোকচিত্র, তথ্য ও ভিডিও চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

এছাড়া সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২১ উপলক্ষে স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

শেষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদ এনডিসিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।

সবশেষে  শিল্পীরা  মাতৃভাষায় কবিতা আবৃত্তি ও একুশের গান পরিবেশন  করেন।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নাজমা বিনতে আমিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, সিএমপি কমিশনার সালেহ্ মোহাম্মদ তানভীর, জেলা পুলিশ সুপার এস.এম রশিদুল হক, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মো. সাহাবউদ্দিন ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার শহিদুল হক চৌধুরী সৈয়দ।

অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক ছিলেন একুশে পদক প্রাপ্ত ও বিশিষ্ঠ সাহিত্যিক-প্রাবন্ধিক আবুল মোমেন। অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস.এম জাকারিয়া, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোছা. সুমনী আক্তার, শিল্পকলা একাডেমির জেলা কালচারাল অফিসার মোসলেম উদ্দিন সিকদার, শিশু একাডেমির জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ নূরুল আবছার ভূঁইয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা, জেলা-বিভাগীয় প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটরা ও  বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রা বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদ বলেন, পৃথিবীতে অনেক প্রমাণ আছে তাদের ভাষা কালের স্রোতে বিলপ্ত হয়ে গেছে। সেখানে ইউনেস্কোর মাধ্যমে বাংলাভাষা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পাওয়া মহা  গৌরবের বিষয়। বাঙ্গালি জাতির জন্য ২১শে ফেব্রুয়ারি বহু তাৎপর্য বহন করে। প্রভাতফেরি কিংবা  শহিদ মিনারে ফুল দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় । বাঙ্গালি জাতি এ দিনকে ধারণ ও লালন করে।

অনুষ্ঠানের মূখ্য আলোচক বিশিষ্ঠ সাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক আবুল মোমেন বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি শোক থেকে সংগ্রামে পরিনত হয়েছে। পাকিস্তানকে বাঙ্গালি বুজিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে যে আমরা তোমাদের সাথে নেই। তার বাস্তবচিত্র বাংলাদেশের উন্নয়ন। সকল সূচকেই বাংলাদেশ পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে।

তিনি আরো বলেন, এ প্রজন্মকে বাঙ্গালি সংস্কৃতিকে ধারণ করতে হবে। সকল ক্ষেত্রে বাংলা ব্যবহার করতে হবে। বাংলাই বাঙ্গালির গর্বের জায়গা। ১৯৯৯ সালে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে  বাংলাভাষা। বিশ্বের ১৮৮ টি দেশ আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে পালন করায় বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হয়েছে।

আলোচনা সভায় অন্যান্য বক্তারা মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে বাংলা ভাষার ব্যবহার সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান।

এসএএস/নচ

এই বিভাগের আরও খবর