chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

প্রকৌশলীকে চসিক মেয়রের প্রশ্ন, বারইপাড়া খাল খনন শুরু হয়নি কেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম নগরীর প্রধান ও অন্যতম সমস্যা জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৯৯৫ সনের প্রণীত মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী বহদ্দারহাট বারইপাড়া থেকে বলিরহাট হয়ে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত নতুন খাল খননের কাজ শুরু না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) নবনির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরী। 

এখনো খাল খননের কাজ কেন শুরু করা হয়নি জানতে চেয়েছেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন টাইগারপাসের অস্থায়ী অফিসে চসিকের প্রকৌশলীদের সাথে বৈঠকে কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলীর কাছেই প্রশ্নটি করেন।

এসময় মেয়র তাঁর ১০০ দিনের কর্ম পরিকল্পনার পাশাপাশি নতুন নগর ভবন নির্মাণে প্রতিবন্ধকতা কি তাও জানতে চেয়েছেন।

তিনি টাইগারপাস অফিসে পার্কিং না থাকা, মূল শহরের বাইরে কর্পোরেশনের অফিস হওয়ায় কর্মকর্তাদের কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা সে বিষয়েও মতামত নেন।

সভায় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, প্রধান প্রকৌশলী লে.কর্নেল সোহেল আহম্মেদ,অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, তত্ত্বাবধায়ক  প্রকৌশলী আনোয়ার  হোসেন, আবু ছালেহ, মনিরুল হুদা, কামরুল ইসলাম সহ নির্বাহী ও সহকারি -উপ সহকারী প্রকৌশলীরা উপস্থিত ছিলেন।

মেয়রের প্রশ্নের জবাবে বারইপাড়া খাল খনন না হওয়ার বিষয়ে কর্পোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ জানায়, প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণে বিলম্ব হচ্ছে। ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের খাতে ব্যয় প্রায় ১ হাজার ১ শত ১৯ কোটি টাকা। যা প্রকল্প ব্যয়ের প্রায় ৯০ শতাংশ ।

প্রকল্পটির জিওবি বরাদ্দ ৭৫ শতাংশ খাতের প্রায় ৯১৫ কোটি টাকা ইতোমধ্যে বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যার ৯১১ কোটি টাকা জেলা প্রশাসন তহবিলে জমা দেয়া হয়েছে।

কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ খাতেই ২০৮ কোটি টাকা এবং ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে প্রায় ৯৭ কোটি টাকা অর্থ্যাৎ ৩০৪ কোটি টাকা সিটি কর্পোরেশন তহবিল থেকে ব্যয় করতে হবে। কিন্তু বর্তমানে কর্পোরেশনের আর্থিক এই ব্যয়ভার বহনের সক্ষমতা নাই।

এই খালের মোট প্রক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৫ কোটি ৬১৫ লক্ষ টাকা। জিওবি ৭৫ শতাংশ ও চসিকের তহবিল হলো ২৫ শতাংশ মিলিয়ে টাকার অংকে যা দাড়ায় ৩১৪ কোটি ৩ লাখ টাকা। এর বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে জুন ২০২১ সাল পর্যন্ত। অথচ এই প্রকল্পের কাজ এখনো শুরু করা যায়নি।

সভায় উপস্থিত চসিকের নির্বাহী কর্মকর্তা এতো বড় প্রকল্পের জন্য মোট ২৫ একর জমি অধিগ্রহন করা লাগবে। কিন্তু আইনে একসাথে এই পরিমান জমির অধিগ্রহণের টাকা ছাড়ের কোন বিধান নাই। তাই জেলা প্রশাসন ৫ ভাগে ভাগ করেছে অধিগ্রহণের বিষয়টা। এছাড়া এলএ শাখায় মামলাও আছে।

তিনি বলেন কাজ শুরু করতে ম্যাচিং ফান্ডের টাকাও দেয়া যাবেনা। তাই এই খাল খননে রিভাইস প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। এছাড়াও বর্তমানে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে মন্ত্রণালয়ের একটি টিম সম্প্রতি প্রকল্প এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন।

মেয়র রেজাউল সভায় আরো বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের একসময় সুনাম ছিল। এখন দুর্নাম বেশি। এই দুর্নাম ঘুচাতে হবে। তিনি প্রকৌশলীদেরকে পরস্পর দলাদলি না করে আন্তরিকভাবে সততার সাথে কাজ করার পরামর্শ দেন।

মেয়র বলেন,আমি আপনারা সবাই একটা পরিবার। কাজেই মিলেমিশে গুণগতমান বজায় থাকে মতো ঠিকাদারদের কাছ থেকে কাজ আদায় করুন। কাজের কোয়ালিটি নিশ্চিতে কোন ছাড় দিবেন না আপনারা। এটা আমার নির্দেশ।

সভায় প্রধান প্রকৌশলী নগরীর ভাঙা সড়কসমূহ মেরামতে প্যাচওয়ার্কের বিশদ বিবরণ ও সহ প্রকৌশলীর পদে অপ্রতুলতা,গাড়ির সংকট, ভারিযান চালানোর উপযোগী দক্ষ চালকের অভাব, অস্থায়ী প্রকৌশলীদের স্থায়ীকরন, নতুন প্রকৌশলী নিয়োগের বিষয়ে মেয়রের কাছে উপস্থাপন করেন।

মেয়র এসব শুনে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে কি করা যায় তা দেখবেন বলে উল্লেখ করেন।

চখ/আরএস/এএমএস

এই বিভাগের আরও খবর