বিধি লঙ্ঘন : একসাথে দুটি সরকারি চাকরি করতেন হাটহাজারী মির্জাপুর ইউপি সচিব কানু
চট্টগ্রাম ডেস্ক : বিধি লঙ্ঘন করে এক সঙ্গে দুটি সরকারি চাকরি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে কানু কুমার নাথ নামে মিরসরাই উপজেলার এক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, কানু নাথ একই সঙ্গে ফটিকছড়ি রামগড় এলাকার এমপিওভুক্ত একটি কলেজে শিক্ষকতা করার পাশাপাশি হাটহাজারী মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার নিজ বাড়ি মিরসরাই উপজেলায়।
তবে নিজের স্বাক্ষরের স্থলে বহিরাগতের স্বাক্ষর দিয়েই তিনি ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন কাজ সারতেন।
সূত্র জানায়, প্রায় ২৬ বছর ধরে ফটিকছড়ি রামগড় এলাকার এমপিওভুক্ত হেঁয়াকো বনানী ডিগ্রি কলেজে শিক্ষকতা করছেন কানু কুমার নাথ। ১৯৯৪ সালে লেকচারার হিসেবে নিয়োগ পেলেও বর্তমানে বাংলা বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে তিনি কর্মরত আছেন।
সকালে কলেজে শিক্ষকতার পাশাপাশি বিকেলে করেন সচিবের কাজ। পরিষদে জরুরী কাজগুলো সারতেন বহিরাগত বেলাল উদ্দীনকে দিয়ে। তাই তেমন মাথা ব্যাথা ছিলনা সচিবের দায়িত্ব নিয়ে।
আর মির্জাপুরের বর্তমানসহ সাবেক কোন চেয়ারম্যানই কখনো বুঝতে পারেন নি তার এই কৌশল। এ যেন সবাইকে ঘুম পাড়িয়ে চাটুকারিতার আশ্রয় নিয়ে করেছেন দুই দিকে দুই সরকারি চাকরী।
পরিষদ কর্তৃপক্ষ অবগত ছিলেন না কলেজের বিষয়টি আর কলেজ কর্তৃপক্ষ অবগত ছিলনা কলেজের বিষয়টি। সরকারি নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রতি মাসে নিয়মিত লুফে নিয়েছেন প্রায় ৭৫ হাজার টাকা সরকারি বেতন।
আর এ তথ্য গোপন রাখতেই দীর্ঘদিন ধরে পরিষদের কোন সনদে তিনি স্বাক্ষর করতেন না বলে জানা গেছে।
কলেজের অধ্যক্ষ ফারুকুর রহমান এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, দীর্ঘ ২৬ বছর যাবৎ কলেজে শিক্ষকতা করছেন কানু কুমার নাথ অথচ উনি একটি পরিষদের সচিবের দায়িত্বেও আছেন যা আমরা কখনো টের পাইনি।
গত বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে বিষয়টি আমরা জানতে পারলাম। তিনি তথ্য গোপন করে কলেজে শিক্ষকতা করছেন। আমরা সত্যিই হতবাক তার এমন অনৈতিক কাজে।
আমরা বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) তিন দিনের মধ্যে জবাব চেয়ে শোকজ করেছি। তাকে না পেয়ে মিরসরাই উপজেলা তার নিজ বাড়ির ঠিকানায় রেজিঃ ডাকের মাধ্যমে চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছি। দ্রুত ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনা করে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান অধ্যক্ষ ফারুক।
হাটহাজারী নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন বলেন, তার চাটুকারিতা টের পেয়েই সকল তথ্য উদঘাটন করি। সে তথ্য গোপন রেখে একসাথে দুটি সরকারি চাকরি করছেন।
পরিষদের বিষয়ে ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসকের বরাবরে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেয়া হয়েছে। সচিবের পাশাপাশি এমপিওভুক্ত কলেজে শিক্ষকতার ব্যাপারে স্থানীয় সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জানিয়ে দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ২ ফেব্রুয়ারী দীর্ঘদিন ধরে সনদে নিজের স্থলে বহিরাগতের স্বাক্ষর দেয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মে শোকজ করা হয় সচিব কানু কুমার নাথকে।
চখ/আর এস