ব্যাটিং বিপর্যয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করল বাংলাদেশ
খেলা ডেস্ক: ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। ঢাকা টেস্টে একের পর এক ব্যাটসম্যান নাম লিখিয়েছেন আত্মহুতির মিছিলে। তবে স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে লড়ার চেষ্টা করছেন মোহাম্মদ মিঠুন ও মুশফিকুর রহীম। তাদের ব্যাটেই এখন আশার আলো বাংলাদেশের।
দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ ৩৬ ওভারে ৪ উইকেটে ১০৫ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের করা ৪০৯ রানের চেয়ে এখনও ৩০৪ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। এ ছাড়া ফলোঅন এড়িয়ে ক্যারিবীয়দের আবার ব্যাটিংয়ে নামাতে আরও অন্তত ১০৫ রান করতে হবে টাইগারদের। তৃতীয় দিন সকালে এ দায়িত্ব নিতে হবে দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম ও মোহাম্মদ মিঠুনকে।
সৌম্য সরকার শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের করা ইনিংসের প্রথম ওভারে লেগস্ট্যাম্পের ডেলিভারিতে অনড্রাইভ করতে গিয়ে শর্ট মিড উইকেটে দাঁড়ানো কাইল মায়ারসের হাতে। রানের খাতাও খুলতে পারেননি সৌম্য।
গ্যাব্রিয়েলের করা ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে দারুণ ড্রাইভে বাউন্ডারি হাঁকান নাজমুল হোসেন শান্ত। পরের বলে আবারও বাউন্ডারির আশায় ব্যাট চালান শান্ত। কিন্তু এবার তার ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে যায় গালিতে দাঁড়ানো এনক্রুমাহ বোনারের হাতে। মাত্র ১১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ।
দলের বিপদের মুখে চওড়া হয় তামিমের ব্যাট। অধিনায়ক মুমিনুল হককে সঙ্গে নিয়ে এড়িয়ে যান প্রাথমিক বিপর্যয়। ইনিংসের শুরু থেকেই ক্যারিবীয় বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন তারা দুজন। প্রায় প্রতি ওভারেই হাঁকান একটি করে বাউন্ডারি।
বেশি আগ্রাসী ছিলেন তামিমই। আলঝারি জোসেফের করা ষষ্ঠ ও অষ্টম ওভারে দুইটি করে চার মারেন তিনি। যার সুবাদে রান উঠতে থাকে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। পরে জোসেফের করা ইনিংসের দশম ওভারে জোড়া বাউন্ডারি হাঁকান মুমিনুল হক।
ইনিংসের ১২তম ওভারে গ্যাব্রিয়েলের বলে ফাইন লেগে চার মেরে দলীয় পঞ্চাশ পূরণ করেন টাইগার অধিনায়ক। গ্যাব্রিয়েলের করা পরের ওভারটিতে আগের সবকিছু ছাড়িয়ে যান তামিম ও মুমিনুল। দুইটি বাউন্ডারি হাঁকান তামিম, মুমিনুল মারেন একটি। তিন বাউন্ডারিতে সেই ওভারে আসে ১৪ রান। ওভার শেষে দলীয় সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৬৮ রান, ওভারপ্রতি রানরেট ৪.৮৫!
অতি দ্রুত রান তোলার এ ছন্দে ব্যাঘাত ঘটে ঠিক পরের ওভারেই। কর্নওয়ালের অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলে স্কয়ার ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন অধিনায়ক মুমিনুল। দুর্দান্ত দক্ষতায় ক্যাচটি গ্লাভসবন্দী করে ২১ রানেই মুমিনুলকে থামান উইকেটরক্ষক জশুয়া ডা সিলভা। তার বিদায়ে ভাঙে ৫৮ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।
মুমিনুল ফেরার পরের ওভারে ঠিক সৌম্যর মতো করে আউট হন তামিম। শর্ট মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে তার ক্যাচ ধরেন সেই মোজলিই। তামিম ফেরেন ৫২ বলে ৬ চার ও ১ ছয়ের মারে ৪৪ রান করে।
বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ তখন ৪ উইকেটে ৭১ রান, বিপর্যয় তখন চরমে। এমন পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নিয়ে রান বাড়ানোর চেয়ে উইকেটে থিতু হওয়ার দিকেই বেশি মনোযোগ দেন মুশফিক ও মিঠুন। একদম টেস্ট মেজাজে খেলছেন মিঠুন, প্রথম রান করতে তিনি খেলেন ১৬ বল।
এর আগেই অবশ্য একবার ভয় পাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছিল মিঠুনের। ইনিংসের ২০তম ওভারের তৃতীয় বলে তাকে কট বিহাইন্ড আউট দিয়ে দেন আম্পায়ার। সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন মিঠুন। রিপ্লেতে দেখা যায় বল তার ব্যাটে নয়, থাই প্যাডে লেগে গিয়েছে। ফলে বদলে যায় আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত, বেঁচে যান মিঠুন।
এরপর আর কোনো বিপদ ঘটতে দেয়নি মিঠুন-মুশফিক জুটি। দিন শেষে ৩ চারের মারে ৬১ বলে ২৭ রানে অপরাজিত রয়েছেন মুশফিক। ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিয়ে মিঠুন খেলছেন ৬১ বলে ৬ রান নিয়ে।
এমআই/চখ