দুর্নীতিমুক্ত নগরী হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার জান্নাতুল ইসলামের
নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী জান্নাতুল ইসলাম দুর্নীতি, অপব্যয় ও অপচয় রোধ করে নাগরিক সেবা বৃদ্ধি, চট্টগ্রামকে নারী-শিশুদের জন্য নিরাপদ নগরী হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছেন। এছাড়া ব্যাপকভাবে কমিউনিটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নগরবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
রবিবার ( ২৪ জানুয়ারি) বেলা ১ টার দিকে নগরীর ওআর নিজাম রোডের একটি রেস্তোরাঁয় নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণাকালে তিনি এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এসময় তিনি ২৯ দফার ইশতেহার ঘোষণা করেন।
যার মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ২৩ দফা কর্মসূচির কথাও জানিয়েছেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে মেয়র প্রার্থী জান্নাতুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম বর্তমানে বসবাসের অনুপযোগী একটি সিটিতে পরিণত হতে চলেছে। মানুষের জান-মাল আজ হুমকির মুখে। হাজার হাজার কোটি টাকা বাজেট হওয়া সত্ত্বেও সিটি কর্পোরেশনের কাঙিক্ত মানের উন্নয়ন হল না কেন? বারংবার মুখরোচক স্লোগানের ধোঁকায় আমরা আর কত নিপতিত হবো? এ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটির এ দুরবস্থার মূল কারণ হচ্ছে দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, অপরিকল্পিত কর্মকাণ্ড এবং উন্নয়নমূলক কাজে ক্ষমতাসীন দলের অশুভ প্রভাব-প্রতিপত্তি। এসব কারণে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড টেকসই হয় না। সিটি কর্পোরেশন আজ একটি অশুভ কায়েমি স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর সিন্ডিকেটে পরিণত হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের চট্টগ্রাম মহানগর সেক্রেটারি মো. ইকবাল, মহানগর সহ-সভাপতি আবুল কাশেম মাতব্বর, যুগ্ম সম্পাদক ডা. রেজাউ করিম, মৌলানা তরিকুল ইসলাম প্রমুখ।
অগ্রাধিকারভিত্তিক কর্মসূচি মধ্যে রয়েছে:
১. জনদুর্ভোগ লাঘব করে শান্তিময় সত্যিকার স্মার্ট নগরী গড়ে তোলা ।
২. ওয়াসা কর্তৃপক্ষের সাথে পরামর্শ করে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও নতুন মাস্টাপ্লান করে ড্রেনেজ ও পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা করা ।
৩. সিটি কর্পোরেশনের সকল সেক্টরে শুধু দুর্নীতি দমন নয় , দুর্নীতি মূলােৎপাটন কর্মসূচি গ্রহণ ।
৪. ভেজালমুক্ত খাদ্য ও ইনসাফপূর্ণ বাজার নিয়ন্ত্রণ ।
৫. নগর উন্নয়নে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে চট্টগ্রামকে জোয়ার ও জলাবদ্ধতা নিরসনসহ নাগরিক । বান্ধব নগরী হিসেবে গড়ে তােলা হবে ।
৬. শ্রমের প্রকৃত মর্যাদা ও ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা ।
৭. সিটির নাগরিকদের জন্য সকল ধরনের উন্নত স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা হবে ।
৮. রিক্সা , ভ্যান ও ঠেলাগাড়ির নিবন্ধন ( রেজিস্ট্রেশন ) ফি মওকুফ করা ।
৯. সিএনজি লাইসেন্স ফি অর্ধেক করা ।
১০. বাড়ি ভাড়া সহনশীল পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য হল্ডিং ট্যাক্স ৩০ % কমানো ।
১১. ক্ষুদ্র ও মাঝারী ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স ফি ৩০ % কমানো হবে ।
১২. ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড গতিশীল ও নিরাপদ রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ ।
১৩. হকারদের পুনর্বাসন ও ভ্রাম্যমান হকারদের পরিচয়পত্র প্রদান ।
১৪. পথিক ও ভ্রাম্যমান মানুষের জন্য নতুন ১০০ % স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটারি টয়লেট নির্মাণ করা ।
১৫. গরিব – দুঃখী ও অসহায় ব্যক্তিদের জন্য সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা গ্রহণ ।
১৬. খুদে টোকাইদের পুনর্বাসন – কেন্দ্র নির্মাণ ।
১৭. চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে টেন্ডার হবে , কিন্তু টেন্ডারবাজি করতে দেওয়া হবে না ।
১৮. নারীর মর্যাদা সমুন্নত ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান ।
১৯. ক্লিন চট্টগ্রাম গ্রিন চট্টগ্রাম প্রকল্প গ্রহণ ।
২০. ওয়ান স্টেপ সেবাপ্রদান অর্থাৎ একটেবিলে একটি কাজ সুসম্পন্ন করা ।
২১. নাগরিক সুযাগ-সুবিধা নিশ্চিত করা ।
২২. কর্ণফুলীকে পরিকল্পিত পরিচ্ছন্ন নদীতে পরিণত করা ।
২৩. মশা নিধনে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ ।
এসএএস/নচ