chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

হোয়াটসঅ্যাপের গোপনীয়তা নীতিমালা হালনাগাদ স্থগিত

ডেস্ক নিউজ: গোপনীয়তা নীতিমালা সংক্রান্ত পরিবর্তন নিয়ে তীব্র বিতর্কের মুখে পড়েছে হোয়াটসঅ্যাপ। এ পরিবর্তন নিয়ে বিশ্বজুড়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এরই মধ্যে অসংখ্য ব্যবহারকারী হোয়াটসঅ্যাপ ছেড়েছেন। চাপের মুখে ফেসবুকের সঙ্গে বৃহৎ আকারে ডাটা বিনিময় সম্পর্কিত প্রাইভেসি হালনাগাদ আপাতত তিন মাসের জন্য পিছিয়ে দিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ। গত শুক্রবার প্রতিষ্ঠানটির এক ব্লগ পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর বিজনেস ইনসাইডার।

বিশ্বজুড়ে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ছিল তথ্য বিনিময় সংক্রান্ত হালনাগাদ গ্রহণের শেষ সময়সীমা। ফেসবুক নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, সাধারণ ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা এবং নিরাপত্তা বিষয়ে ভুল ধারণা ভাঙানোর জন্য বিষয়টি আপাতত স্থগিত রাখা হলো।

ব্লগ পোস্টে ফেসবুক অধীকৃত ক্রস-প্লাটফর্ম মেসেজিং ও ভয়েস ওভার আইপি সেবাদাতা অ্যাপের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের সাম্প্রতিক গোপনীয়তা নীতিমালা সংক্রান্ত পরিবর্তন নিয়ে অসংখ্য মানুষের বিভ্রান্তির কথা আমরা শুনেছি। এ নীতিমালা হালনাগাদ ফেসবুকের সঙ্গে তথ্য বিনিময় করার ক্ষমতা আমাদের দিচ্ছে না। আগামী ১৫ মে নতুন অপশন আসার আগে এ নীতিমালা নিয়ে ক্রমে ব্যবহারকারীদের কাছে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

হোয়াটসঅ্যাপের নতুন গোপনীয়তা নীতিমালার যে বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে তা হলো ব্যবহারকারীর চ্যাট-সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ফেসবুকের সঙ্গে বিনিময় করবে হোয়াটসঅ্যাপ। বিভিন্ন বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের জন্যই নাকি এটি করা হচ্ছে। কিন্তু ব্লগ পোস্টে এমন অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে খারিজ করে দেয় প্রতিষ্ঠানটি। ব্যবহারকারীদের উদ্দেশে তারা বলেন, না আমরা আপনাদের ব্যক্তিগত মেসেজ দেখতে পারি, না আপনাদের ফোনকল শুনতে পাই। আপনার বিনিময় করা অবস্থানও আমরা দেখতে পাই না। ফেসবুকও এসব তথ্য পায় না। তাদের প্লাটফর্মে লোকেশন বা অবস্থান-সংক্রান্ত সব তথ্য এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপটেড থাকে বলে দাবি করে হোয়াটসঅ্যাপ।

ফেসবুকের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের তথ্য বিনিময় করবে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপের বিকল্প সেবা হিসেবে প্রাইভেসি-ফোকাসড সিগন্যাল ও টেলিগ্রাম অ্যাপের ডাউনলোড উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

অ্যাপ বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান সেন্সর টাওয়ারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৬ থেকে ১০ জানুয়ারি পাঁচদিনে অ্যাপলের অ্যাপ স্টোর এবং গুগলের প্লে স্টোর থেকে বিশ্বজুড়ে সিগন্যাল অ্যাপের ডাউনলোড প্রায় ৭৫ লাখবার অতিক্রম করেছে, যা ৬ জানুয়ারির আগের এক সপ্তাহের তুলনায় ৪৩ শতাংশ বেশি।

অন্যদিকে অ্যাপটোপিয়ার তথ্যমতে, গত রোববারের আগের সাতদিনে টেলিগ্রাম অ্যাপের ডাউনলোড বিশ্বজুড়ে ৫৬ লাখবার অতিক্রম করেছে।

সিগন্যাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ‘স্টেট-অব-দ্য-আর্ট এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন’ তাদের সেবার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যে কারণে কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কেউ কোনো পরিস্থিতিতে ব্যবহারকারীর পাঠানো মেসেজ বা অন্য বার্তা পড়তে পারেন না।

২০১৬ সাল থেকেই হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ ব্যবহারকারীদের নির্দিষ্ট কিছু তথ্য প্যারেন্ট প্রতিষ্ঠান ফেসবুকের সঙ্গে বিনিময় করে আসছে, যা ব্যবহারকারীরা চাইলে বন্ধ করতে পারতেন। কিন্তু গত ৪ জানুয়ারি গোপনীয়তা নীতিমালায় পরিবর্তন এনেছে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ। ওই সময় ব্যবহারকারীদের নোটিফিকেশন পাঠিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ সেবাসংক্রান্ত শর্তাবলি ও গোপনীয়তা নীতিতে পরিবর্তনের কথা জানায়। যেখানে বলা হয়, ব্যবহারকারীদের তথ্য আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ফেসবুকের সঙ্গে শেয়ার করবে হোয়াটসঅ্যাপ। অর্থাৎ নতুন গোপনীয়তা নীতিতে ব্যবহারকারী চাইলেও ফেসবুকের কাছে তথ্য পাঠানো ঠেকাতে পারবে না।

হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষের এমন ঘোষণায় সোস্যাল মিডিয়ায় তাত্ক্ষণিক বিতর্কের ঝড় ওঠে। অনেকেই ব্যবহারকারীদের তথ্য ফাঁসের আশঙ্কায় আঙুল তুলছেন মার্ক জাকারবার্গের মালিকানাধীন ফেসবুক ও তার অধীনস্থ হোয়াটসঅ্যাপের দিকে।

এ পরিস্থিতিতে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীরা বিকল্প এনক্রিপ্টেড মেসেজিং প্লাটফর্মের সন্ধান শুরু করেন, যার পুরোপুরি সদ্ব্যবহার করেছেন টেসলার কর্ণধার ইলোন মাস্ক। হোয়াটসঅ্যাপের ঘোষণার পর পরই তিনি টুইটারে নিজের প্রতিষ্ঠানের তৈরি সিগন্যাল অ্যাপ ব্যবহার করার জন্য প্রচার শুরু করেন। মাস্কের দাবি, হোয়াটসঅ্যাপের মতোই সিগন্যাল অ্যাপ ব্যবহার করে মেসেজ করা যায় এবং গ্রাহকদের গোপনীয়তা রক্ষার্থে এ অ্যাপে মেসেজ বা কনটেন্ট সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থাই রাখা হয়নি।

 

এই বিভাগের আরও খবর