chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

মিয়ানমারের মধ্যে আন্তরিকতার অভাব রয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ডেস্ক নিউজ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন বলেছেন, মিয়ানমার প্রতিবেশী রাষ্ট্র। তাদের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। তারা বারবার বলছে, রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাবে ভেরিফেকশন করার পর। তারা কখনও বলেনি, রোহিঙ্গাদের নেবে না।

‘আমরা বলেছি, তাদের নিয়ে যাও তবে ‘ইউ মাস্ট এনসিউর সিকিউরিটি অ্যান্ড সেফটি’। তারা অঙ্গীকার করেছে নিয়ে যাবে। কিন্তু এরপরও আজ প্রায় সাড়ে ৩ বছরে একটি রোহিঙ্গাও ফেরত যায়নি। কারণ তাদের মধ্যে আন্তরিকতার অভাব।’

রবিবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে মেজর (অব.) মোহাম্মদ এমদাদুল ইসলামের দুটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

একে আবদুল মোমেন বলেন, আমরা প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত, চীন, থাইল্যান্ডসহ সবদেশে গেছি। সবাই স্বীকার করেছে রোহিঙ্গা সমস্যা সৃষ্টি করেছে মিয়ানমার। তাই সমস্যা নির্মূলও করবে তারা। সবাই বলেছে, স্থায়ী সমাধান হলো লোকগুলো ফিরিয়ে নেওয়া।

‘সুতরাং সেইদিন থেকে এখনও আমাদের পররাষ্ট্রনীতি ড্রাইভার সিটে আছে। আমেরিকা বলেন, ইউরোপ বলেন- সবাই একবাক্যে বলছে মিয়ানমারকেই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে হবে।’

তিনি বলেন, দুনিয়ার কোথাও দেখেছেন ১১ লাখ মানুষকে জায়গা দেওয়ার? সিরিয়া, ইয়েমেন, ইরাকের ১০ লাখ বাস্তুহারা মানুষ ইউরোপের ২৭টি দেশে জায়গা দিতে গিয়ে হিমশিম খেয়েছে। আর এখানে ১১ লাখ মানুষকে মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্রয় দিয়েছেন।

তিনি বলেন, গত বছরের ২০ জানুয়ারি মিয়ানমারের সঙ্গে বড় মিটিং হয়। এরপর কোভিড ও ইলেকশনের বাহানা দিয়ে তারা আর মিটিং করেনি। আমরা আশা করছি, নতুন করে তাদের সঙ্গে বসবো। ইনফেক্ট আজকে মিয়ানমারের সঙ্গে মিটিং চলছে।

‘১৯৭৮ ও ১৯৯২ সালে দেখেছি, তখন অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছিল আবার নিয়েও গেছে। ১৯৯২ সালে প্রায় ২ লাখ ৫৩ হাজার রোহিঙ্গা দেশে আসে। পরবর্তীতে আলোচনা মাধ্যমে তারা ২ লাখ ৩০ হাজারকে নিয়ে যায়। ’ বলেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ইতিহাস আছে তারা নিয়ে গেছে, সেজন্য আমরা আশাবাদী বর্তমানে ১১ লাখ রোহিঙ্গাকেও নিয়ে যাবে। কিন্তু কখন নিয়ে যাবে, তা বলা মুশকিল। বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সব নিয়েছে। আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক আলোচনা চালাচ্ছি।

‘তাদের বলেছি, দেখো তোমাদের উন্নয়ন হচ্ছে, আমাদের উন্নয়ন হচ্ছে। তোমাদের উন্নয়নের যদি প্রত্যাশা থাকে তাহলে এ লোকগুলো নিয়ে যাও। যদি না নিয়ে যাও, তাহলে এই এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি হবে। অশান্তি দেখা দিলে, তোমাদের উন্নয়ন ব্যাহত হবে আমাদেরও উন্নয়ন ব্যাহত হবে। এ অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য তাদের নিয়ে যাও। কিন্তু তারা নিয়ে যায়নি।’

মোমেন বলেন, আমরা চীনের সঙ্গে বসেছি, চারটি মিটিং করেছি। শেষ মিটিংটা খুব পজেটিভ ছিল। তখন তারা ওয়াদা করেছিল, রোহিঙ্গাদের তারা বোঝাবে। তাদের দেশের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। অন্য সময় কিন্তু বলতো না।

রোহিঙ্গা না যাওয়ার কারণ তারা মিয়ানমার সরকারকে বিশ্বাস করে না উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই রোহিঙ্গাগুলো যায় না কেন? দুইবার চেষ্টার পরও যায়নি। একটি বড় কারণ রোহিঙ্গারা তাদের সরকারকে বিশ্বাস করে না। তাদের বলেছি, তোমাদের কাছে বিশ্বাসের অপূর্ণতা রয়েছে।

‘বিশ্বাস বাড়ানোর জন্য আমরা তিন ধরনের প্রস্তাব দিয়েছি। একটি বলেছি, তোমাদের সরকারের নেতারা এসে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলুক। তারা একবার এসেছিল, পরে প্রশ্নের মুখে পড়ে আর আসেনি।’

এমআই/চখ

এই বিভাগের আরও খবর