chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

মহামারীকালেও বাংলাদেশ ৫.২৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে: প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক নিউজ: মহামারীকালেও বাংলাদেশ ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, দারিদ্র্যের হার নেমে এসেছে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে। মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৬৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। মানুষের গড় আয়ু ৭২.৬ বছর। ৯৭.৫ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (০১ জানুয়ারি) খ্রিষ্টীয় নতুন বছর ২০২১ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী।

খ্রিস্টীয় নতুন বছরের শুভেচ্ছা বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “নতুন বছরে আমরা একটি নতুন বিশ্ব ব্যবস্থার দিকে অগ্রসর হচ্ছি। করোনা মহামারী বিশ্ববাসীকে এক কঠিন বার্তা দিয়েছে। যতই উন্নত হোক না কেন, একা কোনো দেশ শ্রেষ্ঠত্বের দাবি নিয়ে দাঁড়াতে পারবে না।”
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশবাসীকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বির্নিমাণে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আসুন আমরা নতুন বছরে প্রতিজ্ঞা করি, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রেখে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বির্নিমাণে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করব।’

তিনি বলেন, “২০২০ খ্রিস্টাব্দ বাঙালি জাতির জীবনে ছিল এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। কেননা, ১০০ বছর পূর্বে ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করা এক ছোট্ট খোকা কালক্রমে হয়ে উঠেছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যার সারাজীবনের আত্মত্যাগ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে এবং ৩০ লাখ শহীদের রক্ত ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।”

তিনি বলেন, নতুন বছর ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদ ভুলে মানুষে-মানুষে সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন জোরদার করুক, সব সংকট মোকাবিলার শক্তি দান করুক এবং সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি এই প্রার্থনা করি।
নতুন বছরে নব উদ্যোমে আগামীর পথে চলার আশাবাদ ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রকৃতির নিয়মেই যেমন নতুনের আগমনী বার্তা আমাদের উদ্বেলিত করে, তেমনি অতীত-ভবিষ্যতের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে পুরনো স্মৃতি-সম্ভারে হারিয়ে যাওয়ার চিরায়ত স্বভাব কখনো আনন্দ দেয়, আবার কখনোবা কৃতকর্মের শিক্ষা নব-উদ্যোমে সুন্দর আগামীর পথচলার জন্য অনুপ্রেরণা যোগায়।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, জাতির পিতার জন্ম-শতবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে আমরা ২০২০-২১ সময়কে ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করেছি। কিন্তু, এরই মধ্যে বৈরী করোনা মহামারি বিশ্বকে যেন এক মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে। অন্যান্য দেশের মতো আমরাও পূর্ব-ঘোষিত পরিকল্পনা সীমিত পরিসরে চালু রেখে এ মহামারি থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে জীবনযুদ্ধে নেমে পড়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি ৩১ দফা নির্দেশনা দিয়েছি। এই ক্রান্তিকাল উত্তোরণে ডাক্তার-নার্স-টেকনিশিয়ান নিয়োগ করেছি। দরিদ্র অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো, অর্থনীতির চাকা সচল রাখা ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে ২১টি প্যাকেজের আওতায় ১ লাখ ২১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকার প্রণোদনা দিয়েছি।

অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা জানাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতুর সব স্প্যান বসানোর কথা বলেন। রাজধানীতে মেট্রোরেল ও এক্সপ্রেসওয়ে এবং কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ-কাজ এগিয়ে যাওয়ার কথাও বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথম ‘বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা’-এর সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে রূপকল্প-২০২১ অর্জন প্রায় শেষ। ২০৩০ সালের মধ্যে ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট’ অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি।

টানা তিন বারের সরকার প্রধান বলেন, আমরা দারিদ্র্যের হার ২০ দশমিক ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে এনেছি। মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৬৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত করেছি। স্বাস্থ্যখাতেও অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন করেছি, এখন আমাদের দেশের মানুষের গড় আয়ু ৭২.৬ বছর। ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধা দিচ্ছি। পদ্মাসেতুর সব স্প্যান বসানোর ফলে বিশ্বের অন্যতম খরস্রোতা নদীর দুইপ্রান্ত এখন সংযুক্ত। রাজধানীতে মেট্রোরেল ও এক্সপ্রেসওয়ে এবং কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ-কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। সড়ক, রেল ও বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আধুনিক করেছি।

ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১১ কোটি ছাড়িয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর কর্মসংস্থানের অবাধ সুযোগ সৃষ্টি করেছি। প্রথম ‘বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা’এর সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে রূপকল্প-২০২১ অর্জন প্রায় শেষ। মুজিববর্ষে আমরা অঙ্গীকার করেছি কেউ গৃহহীন থাকবে না। শহরের সব সুযোগ-সুবিধা প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও পৌঁছে দেবো। ২০৩০ সালের মধ্যে ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট’ অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। ২৬ মার্চ ২০২১ আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করব।

নচ/ চখ

এই বিভাগের আরও খবর