লামায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের হস্তক্ষেপে রক্ষা পেলো কৃষকের বাগান
চট্টলার খবর ডেস্ক : বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের পুলাং পাড়ার এক কৃষকের সৃজিত বাগান থেকে জোর করে গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার চেষ্ঠা ব্যর্থ হয়েছে প্রতিপক্ষের।
কৃষক আবদুল জব্বারের শারিরীক প্রতিবন্ধী ছেলে আরাফাতুল ইসলাম জানান, উপজেলার ভোয়ালিয়া পাড়ার বাসিন্দা মৃত ওবাইদুল হাদি’র ছেলে নুরুল হক ও তার লোকজন স্থানীয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের প্রতিরোধে তার পিতার গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
তিনি বলেন, এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসেও নুরুল হকের লোকজন ওই বাগান থেকে গাছ কেটে নেওয়ার চেষ্টাসহ মৎস্য প্রকল্পের বাঁধ কেটে দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির ৫ লাখ টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায়।
শুধু তাই নয়, ওই সময় তারা কৃষকের দুইটি টিনশেড পাকা বাড়ী ভেঙ্গে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়। পরে এসব ঘটনায় আইনের আশ্রয় নেন কৃষকের শারীরিক প্রতিবন্ধি ছেলে আরাফাতুল ইসলাম।
অভিযোগে জানা যায়, কৃষক আবদুল জব্বারের ছেলে আরাফাতুল ইসলাম ও তার ভাই বোনরা সরই মৌজার আর ৩২ ও ৩৯ নং হোল্ডিং মূলে ১০ একর জায়গা সরকারীভাবে বন্দোবস্তি পায়।
১৯৮০-৮১ সালে বন্দোবস্তি পাওয়ার পর এ জমিতে বহু কায়িক শ্রম ও অর্থ ব্যয়ে মৎস্য প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের বাগান সৃজন করে ভোগ করে আসছেন।
সম্প্রতি ওই জমির ওপর লোলুপ দৃষ্টি পড়লে বাগানের কোটি টাকার গাছ কাটার পায়তারা শুরু করেন নুরুল হক ও তার লোকজন।
বিষয়টি বুঝতে পেরে এর প্রতিকার চেয়ে কৃষক পরিবারের সদস্যরা গত ২৩ ডিসেম্বর লামা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের দুদিন পর শনিবার সকালে প্রায় অর্ধশত লোকজন নিয়ে নুরুল হক গাছ বাগানে চড়াও হয় ও নির্বিচারে গাছ কাটতে থাকেন।
এ সময় আরাফাতুল ইসলাম সেনাবাহিনীর সহায়তা চাইলে লামা আর্মি ক্যাম্প থেকে তাৎক্ষনিক একদল সেনাসদস্য ও ক্যয়াজুপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতির টের পেয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন পালিয়ে যায়। এ সময় কেটে ফেলা প্রায় অর্ধশতাধিক একাশিয়া গাছ জব্দ করার পাশাপাশি গাছ কাটা বন্ধ করে দেয় পুলিশ।
এদিকে ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা চুক্তিতে বাগানের গাছ কাটার দায়িত্ব নিয়েছেন বলে জানান গাছ কাটার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকের মাঝি মো. জসিম উদ্দিন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত নুরুল হক বলেন, আমার গাছ আমি কেটেছি। আমি কারো গাছ কাটিটি। ওই এলাকায় আমার ১১ একর জায়গা রয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ক্যয়াজুপাড়া পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ মো. আবুল হাসেম বলেন, জোর পূর্বক গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার খবর শুনে পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই।
পরে নুরুল হকের লোকজন কর্তৃক কেটে ফেলা গাছ জব্দ করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের জিম্মায় রেখেছি এবং শ্রমিকদের গাছ কাটা বন্ধ রাখতে বলেছি।
এ বিষয়ে সরই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ফরিদ উল্ আলম জানান, নুরুল হক নামে কাউকে তিনি কখনো দেখেননি, নামও শুনেননি।
তিনি বলেন, আমার জন্ম থেকেই জায়গাটি আব্দুল জব্বারের বলেই জানি এবং ঘন জঙ্গলে ভরা পাহাড়ী বনভুমিটি ৪০ বছর ধরে আবাদ করে গাছগুলো নিজ হাতে রোপন করেন কৃষক আবদুল জব্বারের পরিবারের সদস্যরা।
চখ/আর এস