chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

সাকিবকে ছাড়াই চ্যাম্পিয়ন খুলনা

খেলা ডেস্ক: ফাইনাল খেলার আগে সাকিবকে হারিয়ে কিছুটা বিপাকেই পড়েছিল জেমকন খুলনা। তৈরি হয়েছিল কিছুটা ভারসাম্যহীনতা। কিন্তু মাঠের খেলায় সাকিবের অনুপস্থিতি বুঝতে দেননি খুলনার বাকি খেলোয়াড়েরা।

গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামকে ৫ রানে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপের প্রথম আসরের শিরোপা জিতে নিলো খুলনা।

খুলনার করা ১৫৫ রানের জবাবে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫০ রানে থেমে যেতে হলো মোহাম্মদ মিঠুনের চট্টগ্রামকে। ৫ রানের জয়ে শিরোপা উল্লাসে মেতে উঠলো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং মাশরাফি বিন মুর্তজার খুলনা।

শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে টস জিতে খুলনাকে ব্যাট করতে পাঠায় চট্টগ্রাম অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর ৪৮ বলে ৭০ রানের ইনিংসে ১৫৫ রানের লড়াকু সংগ্রহ দাঁড় করায় খুলনা।

খুলনার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের বিপক্ষে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেটে ১৫০ রানের বেশি করতে পারেনি চট্টগ্রাম, খুলনা ম্যাচ জিতে নিয়েছে ৫ রানে।

১৫৬ রান তাড়া করতে নেমে চতুর্থ ওভারেই সৌম্যকে হারায় চট্টগ্রাম। আউট হওয়ার আগে ১০ বলে ১২ রান করেন সৌম্য।

পরের ওভারেই আল আমিন হোসেনের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন অধিনায়ক মিঠুন (৫ বলে ৭)। শুরু থেকে ইতিবাচক ব্যাটিং করছিলেন লিটন। তিনি আউট হন দুর্ভাগ্যজনকভাবে। শহীদুল ইসলামের নিজের বোলিংয়েই দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে রানআউটে কাটা পড়েন ২৩ বলে ২৩ রান করা লিটন।

চতুর্থ উইকেট জুটিতে ডুবতে থাকা দলকে আশার আলো দেখান সৈকত আলি ও শামসুর রহমান শুভ। দুজন মিলে গড়েন ৩৪ বলে ৪৫ রানের জুটি।

ইনিংসের ১৫তম ওভারে ভাঙে শামসুর-সৈকত জুটি। হাসান মাহমুদের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে লংঅনে শুভাগত হোমের হাতে ধরা পড়েন ২১ বলে ২৩ রান করা শামসুর।

শেষদিকে এসে শিরোপার সমীকরণ নেমে আসে ৬ বলে ১৬ রানে। খুলনার পক্ষে এ দায়িত্ব বর্তায় শহীদুলের কাঁধে। প্রথম বলে মিড উইকেটে মেরে সিঙ্গেল নেন সৈকত। পরের বলে মিডঅফ-লংঅফের মাঝামাঝিতে রেখে দুই রান নিয়ে নেন মোসাদ্দেক। সমীকরণ দাঁড়ায় ৪ বলে ১৩ রানে।

লো ফুলটস পেয়েও তৃতীয় বলটি সীমানাছাড়া করতে পারেননি তিনি, আউট হয়ে যান লংঅনে থাকা শুভাগতর হাতে ধরা পড়ে। তার ব্যাট থেকে আসে ১৪ বলে ১৯ রান।

পরের বলে হাফসেঞ্চুরিয়ান সৈকত আলিকে (৪৫ বলে ৫৩) সোজা বোল্ড করে দেন শহীদুল। মূলত তখনই নিশ্চিত হয়ে যায় খুলনার জয়। হ্যাটট্রিক বলে ১ রান নেন নাদিফ। শেষ বলে ছক্কা মেরে পরাজয়ের ব্যবধানটা ৫ রানে নামান নাহিদুল ইসলাম।

খুলনার পক্ষে বল হাতে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন শহীদুল। এছাড়া ১টি করে উইকেট যায় শুভাগত, আলআমিন ও হাসান মাহমুদের ঝুলিতে।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলেই হাওয়ায় ভাসিয়ে খেলেন জহুরুল। মিড অফ থেকে খানিক পেছনে দৌড়ে গিয়ে তার ক্যাচ তালুবন্দী করেন মোসাদ্দেক সৈকত।

এরপর তৃতীয় ওভারের চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকানোর চেষ্টায় লংঅফে সৌম্য সরকারের হাতে ধরা পড়েন ইমরুল। আউট হওয়ার আগে ইমরুল করেন ৮ বলে ৮ রান।

সপ্তম ওভারে ফের চট্টগ্রামকে আনন্দে ভাসান মোসাদ্দেক। তার প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে ডিপ মিডউইকেটে মাহমুদুল হাসান জয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দেন জাকির। তার ব্যাট থেকে আসে ৩ চার ও ১ ছয়ের ২০ বলে ২৫ রান।

যখন চাপ কাটিয়ে বড় সংগ্রহের পথে এগুনোর দিকে মন দিচ্ছিল খুলনা, তখনই তারা হারায় আরিফুলের উইকেট। শরীফুলের বোলিংয়ে দুর্দান্ত এক স্ট্রেইট ড্রাইভে চার মারার পরের বলেই উইকেটের পেছনে লিটন দাসের দুর্দান্ত ক্যাচে সাজঘরের পথ ধরেন ২৩ বলে ২১ রান করা আরিফুল।

তার বিদায়ে উইকেটে আসেন শুভাগত, মুখোমুখি পঞ্চম বলে হাঁকান ছক্কা। কিন্তু তিনিও পারেননি বেশিক্ষণ থাকতে। ইনিংসের ১৬তম ওভারে শুভাগত ফেরেন ১২ বলে ১৫ রান করে।

অন্যপ্রান্তে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ হয়ে যান নিঃসঙ্গ যোদ্ধা। এক চারের মারে ৫ রান করে আউট হয়ে যান মাশরাফিও।

শেষ ওভারে বোলিংয়ে আনা হয় সৌম্য সরকারকে। প্রথম বল ডট গেলেও, পরের চার বলে যথাক্রমে ২, ৪, ৬ ও ৪ মেরে দেন মাহমুদউল্লাহ। শেষ বলে আসে ১ রান।

শেষ ওভারে ১৭ রান তুলে দলীয় সংগ্রহটা ৭ উইকেটে ১৫৫ রানে পৌঁছে দেন খুলনা অধিনায়ক। তিনি শেষপর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৮ চার ও ২ ছয়ের মারে ৪৮ বলে ৭০ রান করে।

চট্টগ্রামের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন নাহিদুল ইসলাম ও শরীফুল ইসলাম। এ ছাড়া মোসাদ্দেক ও মোস্তাফিজুর নেন ১টি করে উইকেট।

এমআই/চখ

এই বিভাগের আরও খবর