chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

করোনার মধ্যেই নির্বাচনের পক্ষে রেজাউল, শাহাদাৎ করোনাকে প্রাধান্য দিয়েই নির্বাচন চান

চসিক নির্বাচনের হালচাল

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) স্থগিত হওয়া নির্বাচনের জট খুলতে শুরু করায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে ফের শুরু হয়েছে তোড়জোড়।

ইতিমধ্যে দুই দলের উল্লেখযোগ্য দুই প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে ভিন্নমত প্রদান করেছেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী রেজাউল করিম তাঁর ভাষায় বিভিন্ন যৌক্তিক বাস্তবতা তুলে ধরে এই করেনাকালেই দ্রুত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মত দিয়েছেন। কিন্তু বিএনপি প্রার্থী করেনা পরিস্থিতি বিবেচনা রেখেই নির্বাচনের সময় নির্ধারণের কথা বলেছেন।

চলতি মাসের শেষ কিংবা জানুয়ারির প্রথম দিকে এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ইঙ্গিত দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের নতুন বার্তা পেয়ে এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন দুই মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগের এম রেজাউল করিম চৌধুরী ও বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন। তারা গণসংযোগের পাশাপাশি যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে। পিছিয়ে নেই কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। সামাজিক অনুষ্ঠানসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তারাও চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বাচনী তৎপরতা।

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের পক্ষে। এর যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, নির্বাচন না হওয়ায় ওয়ার্ডগুলোতে বর্তমানে কোনো কাউন্সিলর নেই। এজন্য নগরবাসী নাগরিক সনদ, জন্মনিবন্ধন সনদসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা কাজে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

রেজাউল করিম চট্টলার খবরকে বলেন, করোনার সঙ্গে বসবাস করেই আমাদের চলতে হবে। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেকগুলো নির্বাচন হয়েছে। কোথাও কোনো অসুবিধা হয়নি। চসিক নির্বাচন হতেও কোনো সমস্যা নেই। যত দ্রুত নির্বাচন হয়, নগরবাসী তত বেশি উপকৃত হবে।

বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন করোনা সংক্রমণের দিকে লক্ষ্য রেখে নির্বাচন দেয়ার কথা বলছেন। পাশাপাশি সেরে রাখছেন প্রস্তুতিটাও। শুক্রবার তিন নম্বর পাঁচলাইশ ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় শাহাদাত ভোট ডাকাতি প্রতিরোধে নেতাকর্মীদের কেন্দ্র পাহারার আহ্বান জানিয়েছেন।

চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান চট্টলার খবরকে বলেন, চসিক নির্বাচনের তারিখ এখনো ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন। তারপরও আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। যাতে তারিখ ঘোষণা হওয়ার সাথে সাথে আমরা নিয়ে নিতে পারি। তিনি বলেন, আশা করছি আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হবে।

এর আগে গত ২ ডিসেম্বর চসিক নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর জানান, ডিসেম্বরের শেষের দিকে এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। আর তা যদি সম্ভব না হয় তাহলে জানুয়ারির শুরুতে ভোটের তারিখ দেয়া হবে। গণমাধ্যমে নির্বাচনের এ খবর প্রকাশ হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছেন প্রার্থীরা। তারা আবার সরব হয়ে উঠেছেন নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে।

গত ২৯ মার্চ চসিক নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে ২১ মার্চ তা স্থগিত করা হয়। পরে ৪ আগস্ট চসিকের প্রশাসক পদে নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজনকে নিয়োগ দেয় সরকার। ৬ মাসের জন্য তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে চলে গেছে ৪ মাস। বর্তমান প্রশাসকের মেয়াদ ফেব্রুয়ারিতে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

তবে তার আগেই নির্বাচন করে ফেলার ইঙ্গিত দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সে ক্ষেত্রে নতুন তফসিল হবে না। বর্তমান প্রার্থীরা বহাল থাকবেন। স্থগিত হওয়া চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী ছিলেন সাতজন। এছাড়া সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ছিলেন ২৬৯ প্রার্থী।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, চসিক নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৫১ হাজার ৫২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৯ লাখ ৯৮ হাজার ৭২৩ জন এবং মহিলা ভোটার সংখ্যা ৯ লাখ ৫২ হাজার ৩২৯ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৭৩৫টি। মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা ৪ হাজার ৮৮৬টি।

এসএএস/এএমএস/চখ

এই বিভাগের আরও খবর