chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

শিশুদের প্রতি পরিবারের দায়বদ্ধতা

দুনিয়ার আলো প্রত্যক্ষ করার পর থেকে স্কুলে প্রবেশ করার আগ পর্যন্ত একটা শিশুর শারীরিক, মানসিক,আত্মিক উন্নতির কারিগর তার পরিবার। পরিবারের আদর-শাসন, স্নেহ-ভালোবাসায় সে ধীরে ধীরে পরিণত হতে থাকে। এখনেই শিশুটি বড় হয়ে কি হবে তার সিংহভাগ সম্ভাবনা নির্ভর করে। সে কি সাবেক মেয়র আনিসুল হকের ব্যক্তিত্ব পাবে, নাকি বাংলা ভাই হবে পুরোটার দেখভালের দায়িত্ব পরিবারের।

সুতরাং, ঐ শিশু কর্তৃক অর্জিত সম্মানের জন্যে পরক্ষণে যদি বাহবা পাওয়া যায়, তিরস্কার পাওয়ার মানসিকতা ও থাকতে হবে। ধরেন, আমি যেখানে বেড়ে উঠেছি,যেখানটাতে আমার সর্বপ্রথম নয়ন বারি পতিত হয়েছে, যেখানটাই মিশে আছে সকাল-দুপুর-বিকেল বেলায় নিংসৃত ঘাম, যেখানটাই আমি বুঝতে শিখেছি আমি একটি পরিবারের প্রতিনিধি, একজন সন্তান, একজন মানুষ। আমার অস্তিত্ব, আমার দ্বীপ, আমার আরেকটা মা অবহেলিত, এতিম উড়ির চরে জন্ম নেওয়া প্রতিটি শিশুই যোদ্ধা।

যেখানে মানুষগুলো প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে বেচে আছে, দীর্ঘ ২ যুগ সন্ত্রাসীর আগ্রাসন থেকে নিজেদের টিকিয়ে রেখেছে ইস্পাত কঠিন মানসিকতায়। এখানকার মানুষরা আগে ভাবতো মোটামুটি প্রাথমিকের গন্ডি পেরোতে পারলেই হলো, এরপর যদিও কেউ একমাত্র উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হতো তাদের দিন কাটতো গরুর ঘাস কাটতে, গরু-মহিষ চড়াতে। সংগ্রাম করতে হতো প্রচুর। পরিস্থিতি এখন অনেকটাই পরিবর্তিত। সম্ভব হয়েছে কেবল শিক্ষার হার বেড়েছে বলে। তো আগে কি হতো ঐ শিশুগুলো একেক্টা জাসু-হারিচা হয়ে যেতো। জীবনের লক্ষ্য থাকতো কোনোমতে দুমুঠো খেয়ে বিয়ে করে তারপর আবার উপরওয়ালার ডাক পাওয়ার অপেক্ষা। এখন কথা হচ্ছে, শিক্ষা যতটুকু থাকুক না কেনো আপনার বিবেককে সজাগ রাখতে হবে। বিবেকহীন মানুষ আর কুকুরের মাঝে ব্যবধান নাই।

সুতরাং আপ্নার জন্ম যেখানেই হোক না কেন, জন্মস্থানকে দোষারোপ করা যাবেনা। আপ্নার পরিবার, সমাজই এরজন্যে দায়ী যদি আপনি নষ্টদের কাতারে চলে যান। আর সবচে বড়কথা হচ্ছে একজনন শিশুর যথাযথ গ্রোথের জন্যে বাবা-মাকে সবচে বেশি সময় দিতে হবে। স্মার্টফোনের যুগে সবাই বুদ হয়ে অফলাইনে কি হচ্ছে সেদিকে নজর নেই। অথচ উচিৎ হচ্ছে অবসর সময়টুকু সন্তানদের সাথে কাটানো। যতটুকু সম্ভব দেশেবিদেশে ঘুরতে যাওয়া। আপনার এলাকায় ও দর্শনযোগ্য প্রচুর স্থান আছে যদি আপ্নি উপভোগ করতে জানেন। অতএব, একটি শিশু বিজ্ঞানী হবে নাকি জংগী হবে, আলেম হবে নাকি জালেম হবে পুরোটাই পরিবার নির্ভর।

আসুন আমরা সচেতন হই। শিশুদের যথাযথ পরিচর্যা মারফত গড়ে তুলি একজন জ্ঞানী, দেশপ্রেমিক, সামাজিক প্রাণী। পৃথিবীটা হয়ে উঠুক একটি বাসযোগ্য অভয়ারণ্য।

 

জাকের পারভেজ

শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।