chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

মাত্র ৫৫ মিনিটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম!

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়া যাবে মাত্র ৫৪ থেকে ৫৫ মিনিটে। তাও ট্রেনে। যেখানে রেলপথে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছাতে এখন সময় লাগে ছয় ঘণ্টা। মূলত সরকারের গৃহীত বুলেট ট্রেন প্রকল্প চালু হলেই এই সুবিধা পাওয়া যাবে।

জানা গেছে, বুলেট ট্রেনের নকশার চূড়ান্ত অনুমোদন চলতি ডিসেম্বরে হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা বুলেট ট্রেনের ৯৭ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে নকশা তৈরির কাজ চলছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে নকশা তৈরির এই কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী সুবক্তগীন গণমাধ্যমকে বলেন, বুলেট ট্রেন প্রকল্পের নকশা চূড়ান্ত অনুমোদন করবেন চায়না রেলওয়ে ডিজাইন কর্পোরেশনের প্রতিনিধিরা। ডিসেম্বরে তারা বাংলাদেশে আসবেন। এরপর ব্যয়ের পরিমাণ নির্ধারণ করে প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য একনেকে যাবে। সেখান থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর কাজ শুরু হবে।

তবে প্রকল্প বাস্তবায়নের পর ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের ভাড়া কত হবে? কোন কোন স্টেশনে এ ট্রেন থামবে? এমন প্রশ্ন অনেকের মনে উঠেছে। চলুন এ বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক:
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, প্রকল্প বাস্তবায়নের পর ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যেতে প্রত্যেক যাত্রীকে দুই হাজার টাকার মতো ভাড়া গুনতে হবে। তবে প্রকল্প শেষ হওয়ার ওপর তা নির্ভর করবে। এটা শেষ হতে যদি সময় বেশি লেগেই যায়, তবে বাড়ার অংকটা বাড়তেই পারে। বিমানেও অনেকটা এই সময়ে ঢাকা পৌঁছা গেলেও তার ভাড়া ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে পড়ে।

প্রাথমিকভাবে রুট ম্যাপ অনুযায়ী প্রস্তাবিত রেলপথে মোট ছয়টি স্টেশন রয়েছে। সেগুলো হলো— চট্টগ্রাম, পাহাড়তলী, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, ফেনী ও ঢাকা।
জানা গেছে, প্রস্তাবিত বুলেট ট্রেনের রেলপথটি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মধ্য দিয়ে যাবে। ঢাকা থেকে কুমিল্লা বা লাকসাম হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত হাইস্পিড ট্রেন লাইন নির্মাণ করা হলে এ পথে যাতায়াতে এক ঘণ্টারও কম সময় লাগবে। রেলপথটি কক্সবাজার পর্যন্ত বর্ধিত করা হলে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে যাতায়াতও সহজ হবে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বুলেট ট্রেনটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩০০ কিলোমিটার গতিতে চলবে। আর দিনে ট্রেনটি ৫০ হাজার যাত্রী পরিবহন করতে পারবে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, শুরুতে ৪০ জোড়া রেল চালু করা হবে। পরে যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী রেলের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।

এদিকে, প্রকল্পটির সমীক্ষার অনুমোদিত ব্যয় ছিল ১০০ কোটি ৬৯ লাখ ২৯ হাজার টাকা। ২০১৭ সালের ০১ জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা ছিল। তবে ডলারের দাম ও পরামর্শক খাতে ব্যয় বাড়ার কারণে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিশদ ডিজাইন প্রকল্প পিছিয়ে যায়।

সমীক্ষা প্রকল্প শেষে পরবর্তী মূল প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। ফলে কয়েক বছরের মধ্যে বুলেট ট্রেনে ভ্রমণ করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
যৌথভাবে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও নকশার কাজ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে, চায়না রেলওয়ে ডিজাইন কর্পোরেশন (চীন) ও মজুমদার এন্টারপ্রাইজ (বাংলাদেশ)।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রুটের রেলপথের দূরত্ব ৩২১ কিলোমিটার। তবে উচ্চগতির রেলপথটি আগের রেলপথের চেয়ে প্রায় ৯৪ কিলোমিটার কম হবে। এক্ষেত্রে উচ্চগতির রেলপথ দাঁড়াবে ২২৭ কিলোমিটার।

এসএএস/নচ

এই বিভাগের আরও খবর