chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

ব্যস্ত নগরীর জনভোগান্তি

শহর বলতেই আমরা বুঝি প্রাণহীন কিংবা প্রাণ থাকতেও পাথর এমন এক ব্যস্ত জায়গা যেখানে রাস্তার ধারে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়া মানুষের দিকে তাকানোর সময়ও কারোর নেই। সবাই ছুটছে আপন গতিতে। যে গতি থামবার নয়।এই গতি ক্ষুধার,এই গতি টিকে থাকার। এই গতি স্বপ্নের। এখানে প্রতিটা মানুষের দ্রুত পদবিক্ষেপ ও দেহভরা ক্লান্তিতে আছে একেকটি পরিবারের আত্মকাহিনী।

এই অকৃত্রিম গতিময়তা শুধু থেমে যায় গনপরিবহনে। পরিবারের চাহিদার কাছে মানুষের আরামপ্রিয়তা হার মানে।তাইতো রাজ্যের ক্লান্তি ভর করা শরীরটা ইলিশ ফাইল করে ঝুলিয়ে রাখে গণপরিবহনে। অতিরিক্ত যাত্রী ও যত্রতত্র থেমে থাকায় জ্যামে পড়ে অফিসে দেরি ও শিক্ষার্থীদের ক্লাসে দেরি নিত্যদিনের ঘটনা। রাস্তার উপর অতিরিক্ত রিকশার ভীড়, যত্রতত্র পার্কিং এবং উল্টো পথে গাড়ি চালানো দীর্ঘ জ্যামের অন্যতম কারণ। নামে পাবলিক অথচ পরিবহনজুড়েই চলে ব্যাক্তিগত সেচ্ছাচারিতা। মন চাইলে গাড়ি চালাবে,মন চাইলে চালাবেনা এমন অনিয়ম আর কতো ? সন্ধ্যা হতে না হতেই পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের প্রবণতা কি আর কমবেনা ?  পরিবহনই যদি হয় সময় ও স্বপ্নের প্রতিবন্ধক তাহলে নিঃসন্দেহে পিছিয়ে যায় দেশের উন্নয়ন।

লাইসেন্সবিহীন, ফিটনেসবিহীন, দক্ষ চালকবিহীন প্রতিটি গাড়ি।তবুও মানুষকে ছুটতে হয়। আবার পুলিশের তল্লাশির ভয়ে অনেক সময় হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় যানচলাচল। জন ভোগান্তির আসল রুপ দেখতে এমন একটি যানবিহীন ক্লান্ত সন্ধ্যাই যথেষ্ট। যে গাড়ি চলার অযোগ্য সেটা একেবারে বাতিল হবে এটাই নিয়ম।কিন্তু আজ মামলা দিলো কাল আবার মামলা উধাও হয়ে একই নিয়মে যাচ্ছেতাই চলছে।

এটাও অকপটে স্বীকার করে নিতে হয় যে, পুলিশ মামলাগুলো জনকল্যাণের চেয়ে নিজের পকেট ভর্তির জন্যই বেশি দিয়ে থাকেন।নগদ টাকায় সব অনিয়মই নিয়ম হয়ে যায়। একটা উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে আইনের রক্ষকদের এ গর্হিত কাজগুলো কতটুকু শোভা পায়? যারা আইনের রক্ষক তারাই আইনের ভক্ষক-এ কথার ঊর্ধ্বে কি কখনো পৌঁছাতে পারবেনা বাঙালি জাতি? ট্রাফিক আইনের যথাযথ প্রয়োগ থাকলে লাইসেন্স ঠিক করতে চালকের এতো অনীহা কেনো ? চালক দিবে পুলিশের দোষ, পুলিশ দিবে চালকের।দ্বিমুখী চাপে পিষ্ট জনগনের এ দায় নিবে কে?

আবার নিরাপদ রাস্তা পারাপারের জন্য ওভারব্রীজের ছিটেফোঁটাও লক্ষ্য করা যায়না এই শহরে।ফলে সড়ক দূর্ঘটনার হাত থেকে বিরত থাকছেনা একটি দিনও।

এ মুহূর্তে সরকারের উচিত,চালকদের সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ,লাইসেন্সের সহজলভ্যতা ও সরকারি গণপরিবহন ও ফুট ওভারব্রীজের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে জনদূর্ভোগের মাত্রা কমাতে ভূমিকা পালন করা।আবার গণ পরিবহনে নারীরা সর্বদাই অনিরাপদ।যে কারো হাতে তারা নির্যাতিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।সাধারন যাত্রী থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীরা পর্যন্ত প্রতিনিয়ত যানবাহনে যৌনতার স্বীকার।সুতরাং প্রশাসনের যথাযথ তৎপরতার পাশাপাশি জনসচেতনতা সময়ের দাবী।