সাকসেস অয়েল : ৫ লিটার বোতলে ১ লিটার নাই-এক লিটারে আছে ৯শ মিলি
নিজস্ব প্রতিনিধি : পণ্যের নাম সাকসেস অয়েল। নামের সাথে কাজের মিলও আছে। তবে সুনামে নয়, জোরচুরিতেই তারা সাকসেস। চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার বাহির সিগন্যাল এলাকায় অবস্থিত এ প্রতিষ্ঠানের কারখানা।
কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই প্রতিষ্ঠানটি বিএসটিআই (BSTI) মানচিহ্ন ব্যবহার করে নগরীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে দীর্ঘদিন ধরেই বাজারজাত হয়ে আসছে ওজনে কারচুপির তেলের বোতল।
শুধুমাত্র এ অপরাধেই ক্ষান্ত থাকেনি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। এক ভোক্তার অভিযোগে অভিযান চালাতে গিয়ে সাকসেস অয়েলের আরো অনেক জোরচুরি ধরা পড়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ভ্রাম্যমান টিমের হাতে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে দেখেন প্রতিষ্ঠানটির বেহাল অবস্থা। কারখানাটিতে তৈরি বিভিন্ন বোতল পরীক্ষা করে দেখা যায়, ৫ লিটার তেলের বোতলের জাড়ে এক লিটারই হাওয়া।
পাশাপাশি এক লিটারের তেলের বোতলে পাওয়া গেছে মাত্র ৯শ মিলি তেল। একইভাবে ৫শ মিলি লেখা তেলের বোতল ওজন করে পাওয়া গেছে ৪৩০ মিলি তেল।
ভোক্তার অভিযোগে ওজনে কারচুপির বিষয়টির সত্যতা পেয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে অধিদপ্তরের তদারকি টিম।
তাছাড়াও মেয়াদ উত্তীর্ণ রিএজেন্ট ব্যবহার করে তেলের নমুনা পরীক্ষার অপরাধে একই প্রতিষ্ঠানকে আরো ২০ হাজার টাকাসহ মোট ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করে প্রায় ত্রিশ হাজার টাকার বর্নিত মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্ট, বোতল ও লেবেল ধ্বংস করা হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয় আজ বৃহস্পতিবার ১৯ নভেম্বর চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানায় তদারকিমূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
সকাল ১০টা হতে পরিচালিত অভিযানে ৫ প্রতিষ্ঠানকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর বিভিন্ন ধারায় মোট একলক্ষ তের হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এপিবিএন, ৯ এর সহায়তায় অভিযান পরিচালিত হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ্, সহকারী পরিচালক (মেট্রো) পাপীয়া সুলতানা লীজা ও চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান এসব অভিযান পরিচালনা করেন।
চান্দগাঁও থানার বাহির সিগন্যাল এলাকায় অবস্থিত সাকসেস অয়েল ফ্যাক্টরি ছাড়াও মোহরা কাপ্তাই ও বহদ্দারহাটে পৃথক তদারকিমূলক অভিযান পরিচালনা করে অধিদপ্তরের পৃথক টিম।
কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকার ক্যাফে আল মক্কাকে কিচেনে খোলা ডাস্টবিন রাখায়, কাঁচা মাছ-মাংসের সাথে রান্নাকরা খাবার সংরক্ষণ করায়, অননুমোদিত সস ব্যবহার করায় ও বাসি খাবার রাখায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে অননুমোদিত সস ও বাসি খাবার ধ্বংস করা হয়।
একই এলাকার হামিদিয়া হোটেলকে উৎপাদন-মেয়াদ বিহীন দই ও নোংরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুত ও সংরক্ষণ করায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে সতর্ক করা হয়।
একই দিন অধিদপ্তরের অপর অভিযানে মোহরা এলাকার আলশেফা ফার্মেসিকে অননুমোদিত বিদেশী ঔষধ ও মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ রাখায় ৮ হাজার টাকা জরিমানা করে সতর্ক করা হয়।
এদিকে বহদ্দারহাট এলাকার এক ক্রেতার অভিযোগ ছিল ১১০ টাকার জৈবসার ১৪০ টাকায় বিক্রি করছে ওই এলাকার কসমো নার্সারি। অভিযানে এর সত্যতা পেয়ে নার্সারিটিকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে সতর্ক করা হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, জনস্বার্থে এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
চখ/আর এস