নিজস্ব প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে বসবাসরত জনসাধারণের যাতায়াতের প্রধান সড়কগুলো এখনও সংস্কার কাজে ব্যস্ত। ফলে চট্টগ্রাম শহর থেকে যাত্রী বোঝাই ভারী যানবাহন ও মালবাহী পরিবহণগুলো অবাধে যাতায়াত করছে উপজেলার অভ্যন্তরীন সড়কগুলোতে।
প্রধান সড়কের সংস্কার কাজ যতই দীর্ঘ হচ্ছে দিন দিন ততই ভেঙ্গে পড়ছে উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা। অভ্যন্তরীন সড়কগুলোও এখন ক্ষত-বিক্ষত।
চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন উপজেলাবাসী। তাছাড়া রাস্তার বেহাল দশার খেসারত দিতে হচ্ছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। খানা খন্দে ভরা সড়কে গাড়ি নষ্ট হবার পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বলেও অভিযোগ চালকদের।
খোঁজ নিয়ে জানা কানুনগোপাড়া হাওলা ডিসি সড়কের সংস্কার কাজের উদ্বোধন করা হয় গত বছরের ২০ এপ্রিল। ইতিমধ্যে ১ বছর ৭ মাস অতিবাহিত হলেও ঢিমেতালে চলছে সড়কটির সংস্কার কাজ।
এদিকে সংস্কার কাজের জন্য প্রধান সড়কটি বন্ধ রাখায় অভ্যন্তরীণ সড়কে বেড়ে যায় ভারী যানচলাচলের চাপ। এতে গ্রামীণ সড়কগুলো ক্ষত-বিক্ষত ও অসংখ্য খানাখন্দকের সৃষ্টি হয়ে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে হাওলা ডিসি সড়কের কানুনগোপাড়া থেকে বোয়ালখালী সিরাজুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজ পর্যন্ত পাথর আর বালুর মিশ্রণ দিয়ে ভরাট করে উচু ও প্রশস্ত করা হয়। চলমান রয়েছে উপজেলা সদর থেকে গোমদণ্ডী ফুলতল পর্যন্ত অংশের কাজ।
এ সংস্কারে রয়েছে অলিবেকারী থেকে জোটপুকুর পাড় পর্যন্ত খালে রিটার্নিং ওয়াল নির্মাণ। এ রির্টানিং ওয়ালের নির্মাণ কাজ শুরু হলেও বেশি দূর এগোয়নি। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে রিটার্নিং ওয়াল নির্মাণের কাজ।
সড়ক ও জনপদ বিভাগ দোহাজারী সূত্রে জানা যায়, মইজ্জ্যারটেক-কানুনগোপাড়া-উদরবন্যা সড়ক নির্মাণকাজে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৮কোটি টাকা।
এরমধ্যে কানুনগোপাড়া হাওলা ডিসি সড়কের গোমদণ্ডী ফুলতল হতে সড়ক সংস্কার, পুনঃনির্মাণ, ১২ ফুট থেকে ১৮ ফুট প্রশস্তকরণ ও খালের ভাঙনরোধে ১ কিলোমিটার গাইড ওয়াল নির্মাণের কথা রয়েছে।
টেন্ডারের মাধ্যমে সড়কের সংস্কার কাজ পেয়েছে তিন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত বছরের ২০ এপ্রিল প্রয়াত সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মইন উদ্দিন খান বাদল এ কাজের উদ্বোধন করেন। যা আগামী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ম.বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘সওজের সংস্কার কাজের জন্য প্রধান সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের আওতাধীন অভ্যন্তরীন সড়কগুলোতে ভারী যানবাহন চলাচল ও ওয়াসার পাইপ বসানোর কারণে ক্ষতবিক্ষত ও খানাখন্দকের সৃষ্টি হয়েছে।
এতে ক্ষতির পরিমাণ আপাতঃ দৃষ্টিতে ১৫ কোটি টাকার অধিক হবে। তবে উপজেলার প্রধান সড়ক সংস্কার ও ওয়াসার কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর চূড়ান্তভাবে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে সংস্কারের জন্য ইস্টিমেট তৈরির নির্দেশনা রয়েছে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের।’
তিনি আরো বলেন, সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় জনদূর্ভোগের সৃষ্টি হলেও উন্নয়নের স্বার্থে তা মেনে নিতেই হবে।
বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী (দোহাজারী) সুমন সিংহ জানান, ‘মইজ্জ্যারটেক-কানুনগোপাড়া-উদরবন্যা সড়ক নির্মাণকাজের প্রায় ৬০ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এরমধ্যে মইজ্জ্যারটেক থেকে পাঁচুরিয়া পর্যন্ত কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে।
বোয়ালখালী অংশে শ্রীপুর বুড়া মসজিদ থেকে কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। এ সংস্কার কাজ আগামী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে শেষ হবে। আশাকরি নির্দিষ্ট সময়ে সংস্কারের কাজ শেষ হবে।
বর্ষার কারণে খালের রিটার্নিং ওয়ালের কাজ কিছুটা ব্যাহত হয়েছে জানিয়ে দ্রুত সময়ে তা পুনরায় শুরু করা হবে বলে তিনি জানায়।
চখ/আর এস