chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

কোথায় যাচ্ছে আমাদের সমাজ ?

আবহকাল থেকে সমাজের ধারা পরিবর্তন হয়ে আসছে।এরই ধারাবাহিকতায় আজ আমরা বাস করছি বিশ্বগ্রামে,সবচেয়ে কাছাকাছি।তবে বাইরে যতটা কাছে ঠিক ভেতর দূরে চলে যাচ্ছে আগের চেয়ে হাজারগুণ। প্রযুক্তি,সামাজিক মাধ্যম মানুষের আন্তরিকতা  যতটুকু কেড়ে নিয়েছে,ঠিক ততটুকুন নিষ্ঠুরতার বীজ বপন করেছে সমাজনীতি ।

সমাজে এখন মৃত লাশ নিয়েও রাজনীতি হয়।জানাযার মাঠে লাশ সামনে রেখে নির্দিষ্ট দল ও মতের মানুষের আলাপচারিতা।কোন অনুষ্ঠানে চোখ রাখলে দেখা যায় একই দলভুক্ত মানুষের ভীড়।ভীন্ন মতের হলেই তাকে পর ভাবতে হবে দল কি সত্যি তাই শেখায়?সমাজের মানুষের মাঝে এমন ফাটল,সহাবস্থানের অভাব এটা হুমকি নয় কি?  আর কতো ফাটল ধরলে আমরা দল মতের ঊর্ধ্বে গিয়ে মানুষকে মানুষের পরিচয় দিতে শিখবো।

একশ্রেণির ক্ষমতালোভী যুবক আজ নিজের দাপট দেখানোর জন্য কালো থাবা দিয়েছে জুনিয়র শিক্ষার্থীদের উপর।যাদের এখন নীতি শিখানোর কথা তাদের উস্কানি দিয়ে শিখানো হয় বিষাক্ত রাজনীতি।দল ও মতের দোহাই দিয়ে তাদের এমনভাবে প্রস্তুত করা হয় যে তারা পাশের বাড়ির ছেলেটিকে দূরে ঠেলে দিতেও কুণ্ঠাবোধ করেনা।এতে করে ছোট্ট শিক্ষার্থীরা নিজেদেরই ক্ষতি করছে।নিজেরাই গোলামীভাব পুষে নিচ্ছে অন্তরে।লুটেরা ঠিকই তাদের ব্যবহার করে ফায়দা লুটে নিচ্ছে।

এ ব্যাপারে আশাকরি অভিবাবকরা সচেতন হবেন। সবচেয়ে বড় সমস্যা যেটি লক্ষ্য করা যায়, কিছু অকেজো শ্রেণির শিক্ষিত লোক গণ্ডমূর্খ সমাজপতিদের চাটুকারিতায় ব্যস্ত।যার ফলে শিক্ষার অমূল্যায়ন চোখে পড়ার মতো।যে মানুষগুলোর আতঙ্কে শিয়াল কুকুরও রাতে হাঁক-ডাক ছাড়তো আজ তারা সমাজের পাহারাদার।যারা আইন প্রণেতা তারাই এখন আইনের ভক্ষক।যারা মদের আড্ডায় সারারাত মত্ত থাকে সকালবেলা তারা বলে গাজা খাওয়া নিষিদ্ধ।জনগনের হাজার কোটি টাকা মেরে যারা ক্যাসিনো খেলে তারা ওই জোয়াডি ধর ধর! বলে চিল্লায়।কর্পোরেট ডাকাতির কিয়দাংশ মসজিদে দিয়ে সাজে ঈমানদার।তারা একটা চারাগাছ লাগালে যতবড় সাইনবোর্ড দেয় তার ভারে নুয়ে পড়ে গাছটি।

কয়লা ধুলে ময়লা যায় না।নামের আগে যতই ভাড়া করা মহানুভবতা লাগাও অতীত কুখ্যাতির ছিটেফোঁটাও কমবে না।মানুষ সুজনকে কুর্ণিশ করে সম্মানে,কুজনকে সালাম দেয় ভয়ে।দুই সালামের মাঝে বিস্তর ফারাক। সমাজ নষ্ট হওয়ার আর সীমা বাকি আছে ? আমরা কি চাইলে পারিনা পরিবর্তন করতে ?  পরিবর্তিত হতে? শেষ করছি সক্রেটিসের বাণী দিয়ে-‘নিজেকে জানো’  ।  সবাগ্রে নিজের ভালো হোন । ভালো থাকুক সমাজের প্রতিটি হৃদয়।

লেখক : আবদুল ওয়াহেদ

শিক্ষার্থী, সমাজতত্ত্ব  বিভাগ , চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

এই বিভাগের আরও খবর