মামা মুখ চেপে ধরে, ভাগিনা গলা টিপে হত্যা করে
নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বিতীয় বিয়ে করে পারিবারিক কলহের জেরেই খুন করা হয় আকবরশাহ এলাকার জেসমিনকে।
শনিবার (৩১ অক্টোবর) হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত খাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেফতার করার পর এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. ফরহাদ (২৬) ও তার কথিত মামা মো. সেলিম ওরফে মনির ওরফে অজিউল্লাহ (৩০)।
এদের মধ্যে ফরহাদকে নারায়নগঞ্জের আড়াই হাজার ও সেলিমকে আকবরশাহ থানার শাপলা গ্যাস লাইন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আকবরশাহ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সায়েম চট্টলার খবরকে জানান, ফরহাদ ও সেলিম এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা আদালতে স্বীকার করেছে। গতকাল চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দীনের আদালতে দুজনে স্বীকারোক্তি দেয়।
কি কারনে এই হত্যাকান্ড এমন প্রশ্নে এসআই সায়েম জানান, নিহত জেসমিনের সাথে বছরখানেক আগেই মোবাইল ফোনে ফরহাদের সাথে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে। এর আগে জেসমিনের অন্যত্র বিয়ে হয়েছিলো।
কিন্তু সেখানে তার সংসার টেকে নি। এদিকে ফরহাদও ছিলো পূর্ব বিবাহিত। নিজের আগের স্বামীর সাথে সংসার করতে না পারার মানসিক অবসাদ থেকে জেসমিন ফরহাদের প্রেমে সাড়া দিয়ে বিয়েও করে। কিন্তু তার নতুন স্বামী ফরহাদের মনে ছিলো কু মন্ত্রনা।
এদিকে জেসমিন নগরের চান্দগাঁও পুরাতন থানা এলাকার মার্ক ফ্যাশন নামের একটি পোশাক কারখানার চাকরি করতেন। চাকরি করে জেসমিনের জমানো টাকার প্রতি ফরহদের লোভও তৈরি হয়েছিলো। বিয়ের পর জেসমিন ফরহাদকে তার সাথে থাকার জন্যে চাপ দিতে থাকে। আগেই বিয়ে করায় একসাথে দুই নৌকায় পা দিয়ে বিপাকে পড়ে ফরহাদ। চরম মানসিক বিপর্য থেকে বাঁচতে এবং প্রথম সংসার টেকাতে পথের কাঁটা জেসমিনকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে ফরহাদ। তার এই পরিকল্পনায় সহায়তা করে কথিত মামা সেলিম ওরফে মনির।
হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবে রুপ দিতে ফরহাদ জেসমিনকে মোবাইলে ফোন করে আকবরশাহ থানার হারবাতলী গ্যাস লাইনের দক্ষিণ পাশে একটি পাহাড়ে ডেকে নেয়। স্বামীর ফোন পেয়ে সরল বিশ্বাসে জেসমিন সেই পাহাড়ে যায়। সেখানে আগে থেকে অবস্থান করে ঘাতক স্বামী ফরহাদ ও তার কথিত মামা সেলিম ওরফে মনির। পরে সেই পাহাড়ে মামা সেলিম জেসমিনের মুখ চেপে ও স্বামী ফরহাদ গলা টিপে হত্যা করে লাশ জঙ্গলে ফেলে যায়। ঘটনার দু’তিনদিন পর পঁচা গন্ধ পেয়ে এলাকাবাসী জাতীয় জরূরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে বিষয়টি থানায় জানায়। পরে পুলিশ অর্ধগলিত অবস্থায় জেসমিনের লাশ উদ্ধার করে।
নিহত জেসমিন ভোলার তজুমদ্দিন থানার চরভুতা গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার মেয়ে। গত ২১ সেপ্টেম্বর তাকে গলা টিপে হত্যা করা হয়।
এমএইচকে/এএমএস