chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রামে দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতিতে দিশেহারা স্বল্প আয়ের মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বৈরি আবহাওয়ার কারণে চট্টগ্রামের বাজারে সব ধরনের সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী। এর প্রভাব পড়েছে মাছ-মাংসের বাজারেও। বাজারগুলোতে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য। করোনার প্রভাবে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের অনেক মানুষ আয়-রোজগার হারিয়েছে। নগর জীবনে মানিয়ে চলার চেষ্টায় কেউ বিকল্প পেশা খুঁজে নিচ্ছেন। আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং বেশি দামে জিনিসপত্র ক্রয় করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষজন।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে, দেশে পর্যাপ্ত খাবার মজুদ রয়েছে। পাশাপাশি দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসনের ব্যাপক মনিটরিং চলমান থাকলেও চট্টগ্রামে প্রতিদিন বেড়েই চলেছে জিনিস-পত্রের দাম।
দ্রব্যমূল্যের এমন উর্ধ্বগতি প্রভাব ফেলছে দিনমজুর এবং স্বল্প আয়ের মানুষের দৈনন্দিন জীবন-যাত্রায়। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে আরো তৎপর হতে হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) চকবাজার ও রিয়াজুদ্দিন বাজার ও সাবএরিয়া বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ সবজি ৫০ টাকার নিচে মিলছে না। সবজির মধ্যে আলু ৪৫ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, গাজর ৭০-৮০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, লাউ ৪০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, তিতকরলা ৭০ টাকা, পেঁপে ৩৫ টাকা, কচুর ছড়া ৬০ টাকা, শিম ১০০ টাকা, ফুলকপি ১২০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা, কাঁচামরিচ ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে নগরের কাঁচাবাজারগুলোতে।

বিক্রেতারা বলছেন, এমনিতেই সবজির দাম বেড়েছে। এর সঙ্গে বৃষ্টির কারণে পরিবহন খরচও বেড়ে গেছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে সবজির দাম আরও বাড়তে পারে। ক্রেতারা জানিয়েছেন, বিক্রেতারা কোনো না কোনো অজুহাত দেখিয়ে মালামালেল দাম বাড়িয়ে দেন।

মাছের বাজারে -কোরাল ৬৫০ টাকা, হিমায়িত ইলিশ মানভেদে ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা, লইট্যা ১২০-১৫০ টাকা, মাঝারি আকারের চিংড়ি ৪৫০-৬০০ টাকা, নাইলোনটিকা ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, রুই ২০০-২২০ টাকা, বাটা ২৯০-৩০০ টাকা, কাতলা ২৪০-২৬০ টাকা, পাবদা ৫০০, কই ৪০০ টাকা ও শিং ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় সামুদ্রিক মাছের দাম আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
মাংসের বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা, লেয়ার ২২০ টাকা, সোনালী ১৯০-২০০ টাকা, গরুর মাংস ৭০০ টাকা ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে। প্রতি ডজন ডিম ১১০ টাকা।
নগরীর বিভিন্ন বাজার এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি আদা ২৫০ টাকা, গুঁড়ো দুধ ৫৭০ টাকার স্থলে ৬৬০ টাকা, দেশিয় রসুন ৮৫ টাকার স্থলে ১১০ টাকা, চাল ৪০ টাকার স্থলে ৪৬ থেকে ৫০ টাকা, মসুর ডাল ৯০ টাকার স্থলে ১১০ টাকা, কাঁচা ছোলা ৭০ টাকার স্থলে ৭৬ টাকা, পেঁয়াজ ৯০ টাকায় বিক্রি। শুধু নগরীতে নয়, চট্টগ্রামের সবকটি উপজেলার বাজারগুলোতেও দেখা যায় একইরকম চিত্র।

রিক্সা চালক নুরুল আলম জানান, গত দুইদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে চট্টগ্রামে। ভাড়াও কমে গেছে। মানুষজন ঘর থেকে বের হচ্ছে না। আয় রোজগার কমে গেছে। তার উপর নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চরম হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইকবাল হোসেন নামে এক চা দোকানী বলেন, দিন দিন বাড়ছে সবকিছুর দাম। কিন্তু দোকানে তো ঝাল নাস্তা ও চায়ের দাম বেশি নিতে পারছি না। লাভ কমেছে। তিনি বলেন, প্রশাসনের পক্ষথেকে কোনো ধরনের নজরদারি নেই।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ব্যাপারে প্রশাসন অবগত আছে। এজন্য বাজারে মনিটরিং ব্যবস্থা আরো বাড়ানো হবে। নিম্নচাপের কারণে ৪ নম্বর সতর্কতা সংকেতে প্রশাসন ঝূকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদস্থানে নিয়ে যেতে কাজ করছে। এখন বাজার মনিটরিং করতে পারছি না। সিগনালটা কেটে গেলে বৃষ্টি থামলে আমরা বাজার মনিটরিংয়ে নামবো।
এসএএস/

এই বিভাগের আরও খবর