নারী নিপীড়নকারীদের ছাড় নয়
কন্যাশিশু দিবস আজ
নিলা চাকমা: আজ ১১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস । সারা বিশ্বে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে ২০১২ সালের ১১ অক্টোবর থেকে দিবসটি পালন করা হচ্ছে।
লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা এই দিবসের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলেও শিক্ষার অধিকার, পরিপুষ্টি, আইনি সহায়তা ও ন্যায় অধিকার, চিকিৎসা সুবিধা ও বৈষম্য থেকে সুরক্ষা, নারীর বিরুদ্ধে হিংসা ও বলপূর্বক তথা বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা পালন করার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিও এই দিবস পালনের অন্যতম লক্ষ্য। দিবসটি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
মূলত প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের ‘কারণ আমি একজন মেয়ে’ (Because I am a Girl) নামক আন্দোলনের ফসল হচ্ছে আজকের এই আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস। এ আন্দোলনের মূল কর্মসূচি ছিল, বিশ্বজুড়ে কন্যার পরিপুষ্টি সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা।
সংস্থাটির কানাডা অফিসের কর্মচারীরা এ আন্দোলনকে বিশ্বদরবারে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে কানাডা সরকারের সহায়তা নেন। কানাডাই প্রথম জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস পালনের প্রস্তাব দেয়। ২০১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ সভায় প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। পরবর্তী বছর অর্থাৎ ২০১২ সালের ১১ অক্টোবর প্রথম আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস পালন শুরু হয়। প্রথম আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘বাল্যবিবাহ বন্ধ করা’।
আজ বিশ্বে দিবসটি বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে পালন করলেও আমাদের মেয়েরা নিজের সম্ভ্রম রক্ষার দাবিতে নেমে পড়েছে রাজপথে, হাতে নিয়েছে প্ল্যাকার্ড। তাদের কণ্ঠে ধর্ষকদের “ফাঁসি চাই” স্লোগান।
প্রতিনিয়ত নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে আমাদের মেয়েরা। করোনাকালও বন্ধ ছিলনা এ নিপীড়ন। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে প্রতিদিন গড়ে ৩ জনের থেকে বেশি নারী ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। চলতি বছরে এ পর্যন্ত মোট ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৯৭৫টি যার মধ্যে গণধর্ষণের শিকার ২০৮ জন, ধর্ষণের পর হত্যার শিকার ৪৩ জন, ধর্ষণের পর লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহত্যা করেছেন ১২ জন নারী।
কিন্ত এভাবে আর চলতে দেওয়া যায়না । এখনই এগিয়ে আসতে হবে পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রকে। ধর্ষণের বিরুদ্ধে সচেতনতা, প্রতিবাদ, আওয়াজ জোরেশোরেই হোক। রাষ্ট্র ধর্ষণ রোধে করণীয় স্থির করুক, সক্রিয় হোক। অপরাধীদের বিচার হোক, বিচারের মধ্য দিয়ে দৃষ্টান্তমূলক সাজা হোক। তবেই এ সুন্দর পৃথিবীতে আমাদের মেয়েরাও মাথা উচু করে দাঁড়াতে পারবে।