chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারের প্রাণ: বিএসইসি চেয়ারম্যান

ডেস্ক নিউজ: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, বিনিয়োগকারীরা আমাদের শেয়ারবাজারের প্রাণ। তারা না থাকলে পুজিঁ আসত না। তাহলে কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও আসত না।

তিনি বলেন, আমাদের কথার ওপর বিশ্বাস করে তারা টাকা-পয়সা এনে বিনিয়োগ করেন। তাদের বিনিয়োগকে দুশ্চিন্তামুক্ত রাখতে ও সঠিক ব্যবহারের জন্য আমাদেরকে সঠিক দায়িত্ব পালন করতে হবে।

মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) ‘বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ’ উপলক্ষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) আয়োজিত এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের কমিশনের দায়িত্ব নেয়ার বয়স মাত্র চার মাস। আমাদের আপনারা (বিনিয়োগকারী) একটু সময় দেন। আমরা আগামী এক বছরের মধ্যে দৃশ্যমান পরিবর্তন দেয়ার চেষ্টা করব। দুই বছরের মধ্যে মডার্ন ক্যাপিটাল মার্কেটের ছায়া দেখতে পাবেন। তিন বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ বাজারের একটি রূপ পাওয়া যাবে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী এবং ব্যবসায়ীদের দিক বিবেচনা করতে হবে। যারা ব্যবসা করতে আসেন, তাদের যদি আইপিও (প্রাথমিক গণপ্রস্তাব) দেয়া বন্ধ করে দেই, তাহলে তারা কোথায় যাবেন? তাদেরও টাকার দরকার। এই বাজারে বিনিয়োগকারী এবং ব্যবসায়ী উভয়কেই দেখতে হয়। তা না হলে এই বাজার থাকত না।’

তিনি বলেন, আমরা দায়িত্ব নেয়ার সময় ২৫-২৬টা আইপিও জমা ছিল। যেগুলো বিগত ১-৩ বছরের পুরোনো আইপিও। যে কোম্পানিগুলো বারবার অ্যাকাউন্টস জমা দিচ্ছিল। এতে করে প্রতিবার ৫-২০ লাখ টাকা খরচ হচ্ছিল।

‘কিন্তু ওই সময়টায় আইপিও দেয়া হয়নি। এখন আমরা আইপিও দেই বা না দেই, সেটাতো কোম্পানিগুলোকে জানাতে হবে। এজন্য আমরা যাদের দেয়ার, তাদের দিয়ে দিচ্ছি। আর অন্যদের বাদ দিয়ে দিচ্ছি।’

‘আমরা কোম্পানিগুলোকে আইপিওর জন্য নতুন করে অ্যাকাউন্টস জমা দেয়াতে চাই না। তারা এরইমধ্যে ১-৫ বার অ্যাকাউন্টস জমা দিয়েছেন। আমরা মোটামুটি আইপিও ক্লিয়ার করে নিয়ে আসছি। আশা করছি, এক মাসের মধ্যে পুরোনো সব আইপিও আবেদন ক্লিয়ার করে ফেলব’, বলেন বিএসইসির চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, ‘কে কোথায় বিনিয়োগ করবে, সেটা আমাদের ঠিক করা ঠিক না। আমাদের সব জায়গাতে ইন্টারফেয়ার করা ঠিক হবে না। এতে করে বিনিয়োগ করে মজা পাওয়া যাবে না। তবে কোনো অনিয়ম পেলে আপনারা জানান। আমাদের সার্ভেইল্যান্স এগুলো দেখবে। তবে কোন শেয়ার বাড়ল বা কমল, তার জন্য আমাদেরকে দোষ দেয়া ঠিক হবে না।’

‘চলতি বছরের মধ্যে লেনদেন দেড় হাজার কোটি টাকায় নিয়ে যেতে হবে মন্তব্য করে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, লেনদেন এক হাজার কোটির আশপাশে ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে এটাকে এ বছরের মধ্যে দেড় হাজারে নিয়ে যেতে হবে। এজন্য ডিএসইর (ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ) আইটি বিভাগের সমস্যা সমাধান করতে হবে। তাদের আইটির কারণে মাঝেমধ্যেই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। মাঝেমধ্যেই ওয়েবসাইট দেখা যায় না।’

এ সময় রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) পুনর্গঠনের বিষয়েও কথা বলেন বিএসইসির চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, ‘আইসিবি তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারছে না। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজমেন্টের ভেতরে বেশকিছু ঘাটতি দেখতে পেয়েছি। এ নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত। এই সমস্যা কাটিয়ে আইসিবিকে দ্রুত পূনর্গঠন করা হবে। আগামী দুই মাসের মধ্যে কাজ শেষ করে সরকারের কাছে সবকিছু তুলে ধরব।’

তিনি বলেন, ‘জেড’ ক্যাটাগরির সব কোম্পানির সঙ্গে আমাদের কমিশন পৃথকভাবে মিটিং করেছে। কেউ কেউ ‘জেড’ থেকে বেরিয়ে এসেছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে অনেকেই বেরিয়ে আসবে। যৌথভাবে আলোচনার কারণে অনেকে বেরিয়ে আসছে। তবে ৫-৬টি কোম্পানির অবস্থা বেশি ভালো ছিল না। এগুলোর জন্য আলাদা ব্যবস্থা আছে। এই কাজ শেষে ওটিসি মার্কেট নিয়ে বসব। সেখান বের করে নিয়ে আসার জন্য চেষ্টা করব।’

কোম্পানি আইন পরিবর্তন করে ‘বাই ব্যাক’ আইন করার কথাও জানান বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে পাঁচটি কোম্পানি ও দুটি ডিবেঞ্চার ডিলিস্টিং করার কথা স্টক এক্সচেঞ্জকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এই ডিবেঞ্চার দুটি ২০-২৫ বছরের পুরোনো। এতে বিনিয়োগকারীদের টাকা আটকে ছিল। আমরা এসে সেগুলো খুঁজে ৫৭ কোটি টাকা আদায়ের চেষ্টা করে দিয়েছি।’

এমআই/

এই বিভাগের আরও খবর