নির্বাচন দুপুরে
কে বসছেন বাফুফের মসনদে
ডেস্ক নিউজ: নির্বাচনী জ্বরে কাঁপছেন বাংলাদেশের ফুটবল ভক্তরা। আগামী চার বছরের জন্য কার কাঁধে উঠবে দেশের ফুটবলের নেতৃত্বের ভার এই নিয়ে চতুর্দিকে ভক্তদের মাঝে যত আলোচনা।
আজ শনিবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে বিশেষ ব্যবস্থায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) বহুল আলোচিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কাউন্সিলররা আগামী চার বছরের নেতা নির্বাচিত করবেন। নির্বাচনের জন্য সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার মেসবাহ উদ্দিন। এদিন নির্বাচন ছাড়া আছে বাফুফের বার্ষিক সাধারণ সভাও।
করোনাকালের এই নির্বাচনে থাকছে বিশেষ ব্যবস্থা। নিরাপত্তার জন্য থাকবে পুলিশ-এনএসআইসহ বাফুফের নিজস্ব নিরাপত্তা। ভোটগ্রহণ শুরু হবে দুপুর ২টায়, শেষ হবে সন্ধ্যা ৬টায়। নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে গতকাল বিকেলে কথা বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার মেসবাহ উদ্দিন।
প্রস্তুতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বাফুফে ভবন ও নির্বাচনের ভেন্যু পর্যবেক্ষণ করেছি। যেখানে প্রয়োজন পরামর্শ দিয়েছি। দুপুর ২টায় শুরু হবে ভোটগ্রহণ, শেষ হবে ৬টায়। এরপরই শুরু হবে গণনা। আশা করি, কংগ্রেস হলে যেভাবে ভোট হয় সেভাবেই হবে। পুরো সময়ে ডেলিগটরা নিজ নিজ আসনে অবস্থান করবেন। ভোট দেবেন, ফলাফল দেখবেন। পুলিশ-বাহিনী ও এনএসআই থাকবে নিরাপত্তায়। আমাদেরও একটি নিরাপত্তা দল থাকবে। কোভিড সংক্রান্ত বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। লাইন ধরার সময় আলাদা চিহ্ন থাকবে। থাকবে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাও। ভোটিং কংগ্রেস হলের ভেতর কর্তৃপক্ষ ছাড়া কারও কাছে কোনো মোবাইল ফোন থাকবে না। এই হচ্ছে আমাদের আয়োজন।’
বহুল আলোচিত এবারের নির্বাচনে ২১ পদের জন্য লড়বেন ৪৭ প্রার্থী। দুটো প্যানেল প্রকাশ্যে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে। একটি হলো কাজী সালাউদ্দিন- সালাম মুর্শেদীর সম্মিলিত ফুটবল পরিষদ, অন্যটি হলো শেখ আসলাম-মহির নেতৃত্বাধীন সমন্বয় পরিষদ। এ ছাড়া প্রেসিডেন্ট পদে সালাউদ্দিনের বিপক্ষে লড়বেন শফিকুল ইসলাম মানিক। তিনি লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। বর্তমান সহ-সভাপতি তাবিথ আউয়ালও একই পদের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। এই নির্বাচনে ১৩৯ জন কাউন্সিলর একজন করে সভাপতি ও সিনিয়র সহ-সভাপতি, চারজন সহ-সভাপতি এবং ১৫ জন সদস্যকে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করবেন।
দ্রুত সময়ে ভোট সংগ্রহের জন্য থাকবে আটটি বুথ। ভেতরের নিয়ম-কানুনও বাতলে দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমাদের তিন সেট ব্যালট পেপার রয়েছে। আমরা এক সেট ব্যবহার করব। প্রতি সেটে ১৩৯টি ব্যালট। প্রথম ভোটের জন্য আমরা ১৩৯ কে দুই ভাগ করব। একটি ৭০, অপরটি ৬৯। ভোট তাড়াতাড়ি করার জন্য দুই টেবিল দিক থেকে আট বুথে ভোটগ্রহণ চলবে। একদিক থেকে ৭০টা, আরেক দিকে ৬৯টা নাম ডাকা হবে। তারা ব্যালট নিয়ে যাবেন, একসঙ্গে চারটা ব্যালট দেওয়া হবে। আগে একটা করে দেওয়া হতো। চারটা ব্যালট নিয়ে বুথে ঢুকবেন। ভোট দেওয়া শেষে তিনি ভাঁজ করবেন। বাক্সে ঢালার আগে তিনি দেখবেন কোন ভোটটা কোন বাক্সে দিচ্ছেন। সভাপতির ভোট যাতে সভাপতির বাক্সে পড়ে। সিনিয়র সহ-সভাপতির ভোট যাতে নির্ধারিত বাক্সে পড়ে। ভোটারদের সুযোগ করে দিতে আমরা সাদা ব্যালট পেপারের পেছনে পদের নাম লিখে দিয়েছি। যাতে ভাঁজ করলে সভাপতি নামটা উপরে দেখা যায়। এই প্রক্রিয়ায় ভোটগ্রহণের পর ভোট গণনা করা হবে।’
নির্বাচন নিয়ে কোনো সংবাদ প্রচারের আগে সংশ্লিষ্টদের থেকে নিশ্চিত হতে বলেছেন মেজবাহউদ্দিন। তার মতে, না হলে বিভ্রান্তি ছড়াবে। ‘সাংবিকদের কাছে অনুরোধ, এতদিন যেভাবে ফলাও করে প্রচার করেছেন, ঠিক তেমনি ফল ঘোষণা অথবা নির্বাচন সংক্রান্ত যেকোনো সংবাদ প্রচারের সময় যেন সত্য যাচাই করে প্রচার করে। কোনো গুজবের উপর ভিত্তি করে এমন সংবাদ প্রকাশ করবেন না যাতে বিভ্রান্তি ছড়ায়। কমপক্ষে আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করে খবর প্রচার করবেন। তাহলে বিভ্রান্তির সুযোগ কম থাকবে’-ঠিক এভাবেই বলছিলেন মেসবাহ উদ্দিন।
এই নির্বাচনে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করা বাদল রায়ের নাম ব্যালট পেপারে থাকছে তা আগে থেকেই জানা ছিল। এবার প্রধান নির্বচন কমিশনার জানালেন, তিনি ভোট পেলে বাকি প্রার্থীদের যা হবে তার ক্ষেত্রেও তাই হবে। অর্থ্যাৎ ভোট পেলে বাদল রায়ও প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন। করোনার কারণে এবারের নির্বাচনে ফিফা-এএফসির কোনো দল উপস্থিত থাকবে না। তবে ভার্চুয়ালি তারা তদারকি করবেন।
এসএএস/