chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

জোড়া খুনের পর মাজারে আশ্রয়, র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার ফারুক

নিজস্ব প্রতিবেদক: গ্রেফতার এড়াতে মাজারে আত্মগোপন করেও শেষ রক্ষা হয়নি চান্দগাঁওয়ে জোড়া খুনের প্রধান আসামি মো. ফারুকের (৩৩)। শেষ পর্যন্ত র‌্যাবের হাতে ধরা পড়তে হলো কুখ্যাত এই খুনীকে।

বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) ভোরে আকবর শাহ থানার পাক্কার মাথা থেকে ফারুককে আটকের পর র‌্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য জানান র‌্যাবের অধিনায়ক (সিইও) লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মশিউর রহমান জুয়েল।

মশিউর রহমান জুয়েল চট্টলার খবরকে বলেন, ফারুক অত্যন্ত ধূর্ত প্রকৃতির লোক। হত্যাকান্ডের পর গ্রেফতার এড়াতে প্রথমে সে খাগড়াছড়ি চলে যায়। সেখানে একটি চাকরি যোগাড় করে্। কিন্তু বেতন কম হওয়ায় চাকরি ছেড়ে দেয়। এরপর সে কিছুদিন ঢাকায় অবস্থান নেয়। সেখানেও নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে না পেরে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় একটি মাজারে অবস্থান নেয়। তাকে ধরতে র‌্যাব পুলিশের যৌথ টিম চট্টগ্রাম শহরের আশেপাশে মাজারসহ বিভিন্ন স্থানে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।

তিনি আরও বলেন, খুনি ফারুক অনেকটা ফিল্মি স্টাইলে খুনটি করেছে। সে প্রায় সময় ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যদের সিনেমার কাহিনীর স্টাইলে খুন করার হুমকি দিত। বাস্তবেও সে তাই করেছে। সে প্রথমে গুলনাহার বেগমকে খুন করে। ওই হত্যাকান্ড দেখে ফেলায় ফারুকের হাত থেকে রক্ষা পায়নি ৯ বছরের নিষ্পাপ শিশু রিফাতও। রান্না ঘরে জবাই করে শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে।

আরো পড়ুন

চান্দগাঁওয়ে মা-ছেলে খুন

র‌্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কাজী তারেক আজিজ, চট্টলার খবরকে বলেন, ফারুক নিহত গুলনাহার বেগমের সাথে সিঙ্গারা, সমুচা, পিঠা বিরিয়ানীসহ নাস্তার ব্যবসা করতেন। ব্যবসার লেনদেন নিয়ে প্রায় ফারুকের সাথে গুলনাহারের ঝগড়াঝাটি হতো। তাছাড়া ফারুকের সাথে একাধিক মেয়ের সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ করতো গুলনাহার। মূলত এসব বিষয়ের জের ধরেই ফারুক জোড়া থুনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানায়।

তিনি আরও বলেন ফারুক গ্রেফতার এড়াতে সব রকমের চেষ্টা করেছে। সে মোবাইল ফোনের সিম বার বার পরিবর্তন করেছে। তার মোবাইল রেকর্ড অনুযায়ী মাত্র ৪ বার বিভিন্ন লোকজনের সাথে যোগাযোগের তথ্য পেয়েছি।

সংবাদ সম্মেলনে গুলনাহার বেগমের মেয়ে ও রিফাতের বড় বোন ময়ূরী আকতারকে হাজির করা হলে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

ময়ূরী আকতার চট্টলার খবরকে বলেন, আমার মা অসুস্থ ছিলেন। টুকটাক পিঠা বানিয়ে বিক্রি করতেন। অনেকটা টানাপোড়নে আমাদের সংসার চলতো।মা প্রায়সময় নিজে গার্মেন্টসে চাকরি করার কথা বলেতেন। কিন্তু আমি রাজি হইনি। নিজে গার্মেন্টসে চাকরি নিয়েছি। ভাইয়ের প্রসঙ্গ টেনে ময়ূরী আকতার বলেন, আমার একমাত্র ছোট ভাইটাকেও ছাড় দেয়নি ফারুক। আমার ভাই ছিলো আমাদের পরিবারে সকলের মধ্যমণি। মা ও ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে পরিবারে একটু স্বচ্ছলতার আশায় নিজে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে গার্মেন্টসে যোগ দিয়েছিলাম।সে ভাই আর মাকে নৃশংস হত্যার স্বীকার হতে হয়েছে। আমি ফারুকের ফাঁসি চাই।

উল্লেখ্য গত ২৪ আগস্ট চান্দগাঁও থানার পাঠানিয় গোদা এলাকায় নৃশংভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় গুলনাহার বেগম ও তার ৯ বছরে শিশু পুত্র রিফাতকে। যার নেপথ্যে ছিলেন পাতানো ভাই মো. ফারুক। সে চান্দগাঁও থানার খাজারোড কসাইপাড়ার মো. সিরাজের ছেলে।

কামরুল/চখ

 

এই বিভাগের আরও খবর